
23/02/2025
https://www.facebook.com/share/p/1A2kPkpoDG/
মাইক্রোওভেনে গরম করা খাবারে হতে পারে ক্যান্সার!!
ব্যস্ততার এই যুগে একটু স্বস্তি পেতে আমরা সব সময় শর্টকাট খুঁজি। আর এই শর্টকাট খুঁজতে গিয়ে মাঝে মাঝেই পড়তে হয় নানা রকম সমস্যায়। এমনই একটি সমস্যা হচ্ছে মাইক্রোওভেন।
আজকাল প্রায় সবাই-ই ওভেন ব্যবহার করি। ফ্রিজ থেকে খাবার বের করে ওভেনে দিয়ে গরম করে খেয়ে নিই। খুবই সহজ। ৩০ সেকেন্ড থেকে সর্বোচ্চ ২/৩ মিনিটেই এই খাবার গরমের কাজটি হয়ে যায়। কিন্তু একদল গবেষক দাবি করছেন এতে করে ক্যান্সার হতে পারে। কি ভয়ংকর ভেবে দেখেছেন কখোনও!
মাইক্রোওভেনে খাবার গরম করলে এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি এটি শরীরের জন্যও মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, মাইক্রোওভেনে খাবার গরম করার সময় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ভিটামিন বি-১২ নষ্ট হয়ে যায়। দুধ ও মাংসজাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি-১২ থাকে। এসব খাবার মাইক্রোওভেনে গরম করার পর খাদ্যগুণ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া খাবার গরম করার পর কিছু বিষাক্ত রাসায়নিক তৈরি হয় যেমন- বেঞ্জিন, জাইলিন। এসব উপাদান খাবারের সঙ্গে শরীরে প্রবেশের পর ক্যান্সারের মতো ভয়ানক রোগ তৈরি হয়।
এছাড়া প্লাস্টিকের বাক্সে খাবার গরম করলে এ থেকে বিষাক্ত রাসায়নিক নির্গত হয়ে থাকে। ফলে সহজেই ক্যান্সার হওয়া ঝুঁকি থাকে। তাই মাইক্রোওভেনে খাবার গরম না করাই উত্তম।
এছাড়াও মাইক্রোওভেন থেকে নির্গত রেডিয়েশনের কারনে হৃদস্পন্দনের গতির তারতম্যও হয়ে থাকে ।
তাই মাইক্রোওভেন কম ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।
ডাঃ মোঃ আবদুল্লাহ ইউসুফ
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, ইউএসএ
পার্ট ২:
অনলাইন এ আসলে পার্সোনাল মেডিকেল এডভাইস দেওয়া সমীচীন নয়। যেহেতু এখানে শুধু জেনারেল স্টেটমেন্ট দেওয়া যায়, যেটা কারো কারো ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে আবার কারো কারো ক্ষেত্রে হবেনা। এবং অনলাইন এ লেখার প্রধান উদ্দেশ্য জনসেচতনতা তৈরি করা। যেই কাজটিই আসলে এখানে তুলে ধরা হয়েছে।
এখানে কোথাও কিন্তু বলা হয়নি, যে আপনি মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করবেন না। বরং বলা হয়েছে, কম ব্যবহার করা ভালো। এবং কিছু কিছু রিসার্চ দেখাচ্ছে ক্যান্সার এর সম্ভাবনা রয়েছে।
এখানে কিছু পয়েন্ট আছে। বলতে গেলে অনেক লেখা হবে, যতটুকু সংক্ষেপে পারি বলার চেষ্টা করছি।
1. ওভেন এবং মাইক্রোওয়েভ ওভেন এক নয়। ওভেন এ খাবার তৈরি করতে সময় লাগে। মাইক্রোওয়েভ মূলত দ্রুত খাবার গরম করে।
2. মাইক্রোওয়েভ, সরাসরি রেডিয়েশন ব্যবহার করে না। মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করে। যেটা সরাসরি ক্যান্সার তৈরি করেনা, কিন্তু যেটা করে, আমাদের শরীরের যেই নিউট্রিশন গুলো ক্যান্সার থেকে আমাদের রক্ষা করে, সেই নিউট্রিশন গুলোকে নষ্ট করে। এবং আমরা যেই ধরনের পাত্রে খাবার টা খাই, সেটা যদি যথাযত না হয়, যেমন প্লাস্টিক এর পাত্রে, তাহলে ক্যান্সার তৈরিকারী সাবস্ট্যান্স carcinogen তৈরি হতে পারে।
3. আরও যদি আমরা বুঝতে চাই। ক্যান্সার মানে কি? সহজ ভাষায় এর মানে হচ্ছে “Uncontrolled Growth” অর্থাৎ একটা কোষ নিয়ন্ত্রণ ছাড়া বেড়ে যাচ্ছে । আমাদের শরীরে সব জায়গাতেই কিন্তু কোষ বাড়ে, কিন্তু সেটা আবার শরীর নিজে নিজেই থামিয়ে দেয় বা ভেঙ্গে ফেলে। এই নিয়ন্ত্রণ যখন নষ্ট হয়, আমরা সেটাকে ক্যান্সার বলি। এখন যা যা এটাকে নিয়ন্ত্রণ করে, সেটা যদি কমে যায়, ক্যান্সার এর পরিমাণ বাড়তে পারে এবং যা যা এই বৃদ্ধিকে আরও বাড়িয়ে দেয়, সেক্ষেত্রেও ক্যান্সার এর পরিমাণ বাড়তে পারে।
4. রিসার্চ ইনফরমেশন পড়ার এবং ইভালুয়েট করার কিছু পদ্ধতি আছে। কে রিসার্চ করছে, কে ফান্ড দিচ্ছে, কেন করছে? ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে, রিসার্চ ভিন্ন ডিরেকশন এ নিতে পারে। আবার ফান্ডিং এর অভাব এ অনেক রিসার্চ হয়না। যেমন মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার এর সুফল, এজন্য অনেক রিসার্চ পাওয়া যাবে, যেহেতু এখানে যিনি লাভবান হবেন, তিনি ফান্ড করবেন। কিন্তু মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করবেন না, অন্য পদ্ধতিতে গরম করে খান বা ফ্রেশ খান, এটাতে কেউ ফান্ড করবেনা। আর যিনি ফান্ড করেন, তিনি তার উপকারী দিকেই রেজাল্ট চাইবেন। যেমন “দুধের শিশুকে বোতলে করে ফর্মুলা খাওয়ানো ভালো”, এক্ষেত্রে অনেক রিসার্চ পাওয়া যাবে। ফান্ডিং ও পাওয়া যাবে কিন্তু “শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান”, এতে রিসার্চ পাওয়া যাবেনা, ফান্ড ও পাওয়া যাবেনা।
5. সব সময় সিদ্ধান্ত নিতে হয় রিস্ক vs বেনিফিট চিন্তা করে। আমাদের লেখার উদ্দেশ্য হচ্ছে মাইক্রোওয়েভ ওভেন এর ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দিক সম্পর্কে সচেতন করা। এরপর আপনি সিদ্ধান্ত নেবেন, আপনার জন্য কোনটা ঠিক, অথবা কোন কোন ক্ষেত্রে ঠিক? হয়তো বাসায় সুযোগ আছে, চুলায় গরম করে খেলাম, অফিস এ চুলা নাই, তাহলে ওখানে মাইক্রোওয়েভ ওভেন আছে, এখানে অল্প সময় এ গরম করে খেলাম।
6. প্রথম কাজ হচ্ছে জানা, এরপর মানার প্রশ্ন আসবে। আপনি জানলেন, জানার পর যতটুকু মানতে পারেন, ততটুকু উপকার পাবেন। যেটুকু মানলেন না, সেটার অপকার পাবেন। ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে, কেউ সব মেনেও অসুস্থ হবে, আবার কেউ কিছু না মেনেও ভালো থাকবে। এখানেই স্রষ্টার মহিমা! আপনি আপনার কাজ টুকু সব চেয়ে ভালোভাবে করবেন, এবং বাকি টুকু সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা করবেন। কিন্তু নিজের অংশ টুকু না করে, যদি বলি, যা হবার তা তো হবেই, তাহলে আপনাকে সব সময় রক্ষা করার দায়িত্ব উনি কেন নেবেন? আপনার ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে!
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/21716201/
https://www.verywellhealth.com/do-microwaves-cause-cancer-5077367