29/05/2025
শাইখ ইবন বায, অনন্য এক জীবন
🔊 একজন ইয়েমেনি ভাই, যিনি শাইখ ইবন বায (রহিমাহুল্লাহ)-এর একজন ছাত্র ছিলেন, তিনি বলেন:
👈 আমি শাইখ ইবন বাযের দরসে নিয়মিত অংশ নিতাম, তখন আমি চরম দারিদ্র্য ও অভাব-অনটনের মধ্যে ছিলাম। দুনিয়ার তেমন কোনো বস্তুই আমার ছিল না।
একদিন আমি শাইখকে খুশি করতে চাইলাম,
✍️ তাই বললাম: আজ আমি শাইখকে রাতের খাবারের দাওয়াত দিব।
আমি নিশ্চিত ছিলাম, শাইখ তা প্রত্যাখ্যান করবেন
👈 কারণ তাঁর অনেক ব্যস্ততা ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থাকে।
👈 তাই মাগরিবের দরস শেষে আমি বললাম: “হে শাইখ! আজ আপনি আমার সঙ্গে আমার বাড়িতে রাতের খাবার খাবেন?”
🔵 তখন শাইখ বললেন:
✒️ “অবশ্যই! (আশ্বস্ত হও, আমি আসবো)” — অর্থাৎ তিনি আমার দাওয়াত গ্রহণ করলেন।
👈 তিনি বলেন: তখন আমি লজ্জায় পড়ে গেলাম, কেননা আমি শাইখকে দাওয়াত দিয়ে নিজেই বিপদে পড়েছি! আমার তো শাইখকে খাওয়ানোর মতো তেমন কিছুই নেই!
তখন শাইখ বললেন:
📗 “তবে আমার দুইটি শর্ত আছে।”
🔊 প্রথম শর্ত: “তুমি কোনো কষ্ট বা বাড়তি খরচ করবে না।”
— আমি মনে মনে বললাম: আমার কাছে এমন কিছুই নেই, যা দিয়ে কষ্ট করে খরচ করবো!
🔊 দ্বিতীয় শর্ত: “তুমি এখনই আমার সঙ্গে চলো, আমি একটি সাক্ষাতে যাচ্ছি, তারপর তোমার বাসায় যাবো।”
— আমি রাজি হয়ে গেলাম। আমরা গাড়িতে রওনা হলাম। চালক গাড়ি চালাচ্ছিল, আমি শাইখের পাশে বসে ছিলাম।
দেখি, নিরাপত্তা বাহিনী ও প্রাসাদ… রাস্তা ফাঁকা করে দেওয়া হচ্ছে শাইখের জন্য।
আমরা এক প্রাসাদে পৌঁছালাম—এটা ছিল বাদশাহ ফাহদের প্রাসাদ।
আমরা ভিতরে প্রবেশ করলাম। দেখি, বাদশাহপুত্ররা ও বাদশাহ সবাই শাইখের জন্য অপেক্ষা করছেন।
শাইখ এশার নামাজের পর তাদের জন্য একটি দরস দিতেন।
এবং বাদশাহ তার পুত্রদের বাধ্য করতেন এই দরসে উপস্থিত হতে।
📌 শাইখ দরস দিলেন, বাদশাহ ও তার পুত্ররা অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে বসে শুনলেন।
👈 এরপর শাইখ যখন বের হয়ে যেতে চাইলেন,
📌 তখন তারা বলল: “না, হে শাইখ! রাতের খাবার তো প্রস্তুত।”
🎙 তখন একটি বিশাল খাবারের টেবিল সাজানো হলো—বিভিন্ন রকমের খাবারে পূর্ণ, যেগুলোর অনেক কিছু আমি আগে কখনো দেখিওনি!
✅ আমি খুব খুশি হলাম, ভাবলাম হয়তো শাইখ খেয়ে যাবেন, আমিও খাবো!
কিন্তু শাইখ বললেন:
✍️ “আজ রাতে আমি একটি দাওয়াত পেয়েছি।”
তারা বারবার অনুরোধ করলো, কিন্তু তিনি বারবার অস্বীকার করলেন।
অবশেষে একজন বলল:
📌 “আপনি কার দাওয়াত পেয়েছেন? আমরা তার কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে আসি, হে শাইখ!”
📝 আমি ভাবলাম আমি বলে দেই: “আমার কাছে দাওয়াত পেয়েছেন” — যেন তারা অনুমতি দেয়!
কিন্তু শাইখ কিছুতেই বলেন না এবং অনড় থাকেন।
🔊 তারা যখন আর কোনো উপায় পেল না, তখন শাইখকে যেতে দিল।
📌 শাইখ আমাকে নিয়ে আমার বাড়িতে এলেন।
আল্লাহর কসম! আমার ঘরে কেবল শুকনো রুটি আর কিছু বেঁচে যাওয়া পনির ছিল।
আমি তা-ই শাইখের সামনে পেশ করলাম। তিনি খেয়ে নিলেন, তারপর আমাকে দোআ দিতে লাগলেন ও বললেন:
✅ “আল্লাহ তোমাকে উত্তম প্রতিদান দিন, তুমি ভালো করেছো, সুন্দরভাবে আপ্যায়ন করিয়েছো, খাইয়েছো।”
আমি খুবই আনন্দিত ছিলাম। মনে হচ্ছিল, শাইখ যেন আমাকে বোঝাতে চাচ্ছেন—তাঁর কাছে একজন সাধারণ মানুষের দাওয়াত রাজকীয় প্রাসাদ ও খাবারের চেয়েও সম্মানজনক। বিষয়টা বাদশাহ বা প্রাসাদ নয়, বরং ইখলাস (নিষ্ঠা) ও দীনদারি।
🔊 এই ছিল আমাদের শাইখ, আল্লামা ইবন বায (রহিমাহুল্লাহ)-এর চরিত্র। তিনি ছিলেন দুনিয়াবিমুখ, যাহিদ।
✅ আল্লাহ তাঁর উপর বিশাল রহমত বর্ষণ করুন, এবং আমাদেরকে ও তাঁকে আল্লাহর নবী, সিদ্দিক, শহীদ ও সৎকর্মশীলদের দলে জান্নাতে একত্র করুন — আর কতই না উত্তম সঙ্গী তারা।
Abu bakar Mohammad zakaria