16/07/2025
🌸🌸 স্কোলিওসিস (Scoliosis) হলো মেরুদণ্ড বা স্পাইন-এর একটি অস্বাভাবিক বক্রতা (বাঁকানো)। সাধারণত মেরুদণ্ড সোজা থাকে, তবে স্কোলিওসিস রোগীদের ক্ষেত্রে এটি “S” বা “C” আকৃতির বাঁক দেখা যায়।স্কোলিওসিস মেরুদণ্ডের পাশের দিকে বক্রতা। এটি ধীরে ধীরে বাড়তে পারে, কখনো কখনো তা শিশুর বেড়ে ওঠার সময় ধরা পড়ে।
🌺 কারণসমূহ:
👉 ইডিওপ্যাথিক স্কোলিওসিস (Idiopathic):
সবচেয়ে সাধারণ, ৮০% ক্ষেত্রে এর নির্দিষ্ট কোনো কারণ পাওয়া যায় না।
বেশি দেখা যায় কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে।
👉 কনজেনিটাল স্কোলিওসিস (Congenital):
জন্মগত, অর্থাৎ গর্ভাবস্থায় মেরুদণ্ডের বিকাশজনিত সমস্যা।
👉 নিউরোমাসকুলার স্কোলিওসিস:
সেরিব্রাল পালসি, মায়োপ্যাথি, মাংশপেশীর দুর্বলতা ইত্যাদির কারণে হয়।
👉 ডিজেনারেটিভ স্কোলিওসিস (বয়সজনিত):
বয়স বাড়ার সাথে সাথে হাড়ের ক্ষয় বা ডিস্ক ড্যামেজের কারণে হয়।
👉 আঘাত বা অস্ত্রোপচারের পরেও কখনো কখনো স্কোলিওসিস হতে পারে।
🌺 লক্ষণসমূহ :
🍁 এক কাঁধ অন্যটির তুলনায় উঁচু দেখা যায়
🍁 কোমর বা পিঠ বাঁকা হয়ে যায়
🍁 কোমরের এক পাশ উঁচু বা নিচু
🍁 পিঠে ব্যথা বা অস্বস্তি
🍁 দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকলে বা হাঁটলে ক্লান্তি
🍁 শ্বাস নিতে কষ্ট (গুরুতর ক্ষেত্রে)
🌺 হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা :
হোমিওপ্যাথি রোগীর সামগ্রিক উপসর্গ, ব্যক্তিত্ব ও শারীরিক গঠন অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়। নিচে কিছু সম্ভাব্য ঔষধ দেওয়া হলো:
👉 Calcarea Phosphorica: কিশোরদের হাড় বৃদ্ধির সময় স্কোলিওসিস হলে কার্যকর।
দুর্বল হাড়, ব্যাক পেইন, মেরুদণ্ড বাঁকা হয়ে যাওয়া।
👉 Silicea: হাড় ও মেরুদণ্ডের দুর্বলতার জন্য উপকারী।
ঠান্ডা স্বভাবের, দুর্বল গঠন, ঘেমে যাওয়া ইত্যাদি থাকলে।
👉 Calcarea Carbonica: স্থুল দেহ, সহজেই ক্লান্ত হয় এমন বাচ্চাদের জন্য ভালো।
মেরুদণ্ডে বক্রতা ও দুর্বলতা।
👉 Rhus Toxicodendron: জোড়ায় জোড়ায় ব্যথা, পিঠে ব্যথা, সকালের দিকে ব্যথা বেশি হয়।
👉 Phosphorus: লম্বা, রোগাটে, দুর্বল হাড়বিশিষ্ট রোগীদের জন্য কার্যকর।
🌺 পরিচর্যা ও পরামর্শ:
💁 সঠিক ভঙ্গিতে বসা ও হাঁটা শিখতে হবে
💁 ব্যাক-স্ট্রেইটেনিং ব্যায়াম করতে হবে (চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী)
💁 ভারি জিনিস বহন না করা
💁 প্রয়োজনে Brace (সাপোর্ট বেল্ট) ব্যবহার করা
💁 দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা বা বসে থাকা এড়িয়ে চলা
💁 প্রয়োজন অনুযায়ী ফিজিওথেরাপি বা সার্জারি দরকার হতে পারে
🏵 স্কোলিওসিস যত দ্রুত ধরা পড়ে, তত দ্রুত চিকিৎসা শুরু করলে জটিলতা কম হয়। হোমিওপ্যাথি সঠিক নিয়মে ও উপসর্গ অনুযায়ী ব্যবহার করলে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
ডা: নাজনীন আকতার
০১৭১৭১৯৮৩৪৪