04/10/2025
তার নাম ছিল আনার্কা ওয়েস্টকট। ইতিহাসের বইয়ে তুমি তার নাম পাবে না, কিন্তু আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভিত্তি তৈরি হয়েছে তার কষ্টের উপর। আনার্কার বয়স তখন মাত্র ১৭ বছর। তিনি ছিলেন এক দাসী মেয়ে, সদ্য সন্তান প্রসব করেছিলেন। সেই প্রসবে তার দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল—রক্তপাত, যন্ত্রণা, আর অসহায় অবস্থা। তিনি চিকিৎসা পাওয়ার আশা করেছিলেন। কিন্তু সাহায্যের বদলে তাকে নিয়ে যাওয়া হলো এক চিকিৎসকের কাছে—চিকিৎসার জন্য নয়, বরং তাকে ব্যবহার করার জন্য।
সেই চিকিৎসকের নাম ছিল ড. জে. ম্যারিয়ন সিমস। আজ অনেকে তাকে “আধুনিক স্ত্রীরোগবিদ্যার জনক” বলে। কিন্তু তিনি আনার্কাকে একজন মানুষ হিসেবে দেখেননি, এক তরুণী হিসেবে তো নয়ই। তিনি তাকে দেখেছিলেন এক প্রয়োগের বস্তু হিসেবে।
তিনি আনার্কার শরীরে ৩০ বারেরও বেশি অস্ত্রোপচার করেন—কোনো অজ্ঞান না করে, কোনো সম্মতি ছাড়াই, কোনো দয়া ছাড়া। প্রতিটি ছুরিকাঘাতে আনার্কা চিৎকার করতেন। তার দেহ বারবার কাটা হতো, আবার জোড়া লাগানো হতো। তার যন্ত্রণা কেউ শুনত না, কারণ সে ছিল এক দাসী।
তার দেহের উপরই গড়ে উঠেছে আজকের স্ত্রীরোগবিদ্যার যন্ত্র, পদ্ধতি ও চিকিৎসা কৌশল। আর সেই ডাক্তার—তিনি হয়ে উঠলেন বিখ্যাত। তার নামে হাসপাতাল তৈরি হলো, তার মূর্তি স্থাপন করা হলো।
কিন্তু আনার্কা?
তাকে ভুলে যাওয়া হলো। না কোনো স্বীকৃতি, না কোনো স্মৃতিস্তম্ভ, না কোনো বিচার।
তার নাম জানার অধিকার আমাদের আছে।
তার কণ্ঠ শোনার সময় এসেছে।
এটাই আনার্কার গল্প—এবং আমরা অবশেষে তা বলছি।