30/08/2025
প্রেসার হাই বা লো, দুটোই শরীরের জন্য বিপদজনক। তাই এই দুটি অবস্থাতেই খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকা খুব জরুরি। এখানে উচ্চ রক্তচাপ (হাই ব্লাড প্রেসার) এবং নিম্ন রক্তচাপ (লো ব্লাড প্রেসার) উভয় অবস্থার জন্য কিছু খাবারের তালিকা দেওয়া হলো:
উচ্চ রক্তচাপ (হাই ব্লাড প্রেসার)
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার মূল লক্ষ্য হলো লবণ (সোডিয়াম) এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম খাওয়া। নিচে কিছু খাবারের তালিকা দেওয়া হলো যা উচ্চ রক্তচাপের জন্য উপকারী:
পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার: পটাশিয়াম সোডিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। যেমন -
শাকসবজি: পালংশাক, কেল, বিটরুট, টমেটো।
ফল: কলা, অ্যাভোকাডো, কমলা, তরমুজ, কিউই।
অন্যান্য: মিষ্টি আলু, মটরশুঁটি।
ফল ও সবজি: এগুলোতে ফাইবার, ভিটামিন এবং মিনারেল থাকে, যা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে তাজা ফল ও সবজি খাওয়া উচিত।
হোল গ্রেইনস: এগুলোতে ফাইবার বেশি থাকে, যা হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। যেমন -
আটা, ওটস, ব্রাউন রাইস, কুইনোয়া।
চর্বিহীন প্রোটিন:
মাছ: ফ্যাটি ফিশ যেমন স্যামন, টুনা, ও ম্যাকেরেল। এগুলোতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যা হৃদপিণ্ডের জন্য ভালো।
অন্যান্য: স্কিনলেস চিকেন, ডাল ও বিনস।
কম ফ্যাটযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার: যেমন -
লো-ফ্যাট দই, স্কিমড মিল্ক (ফ্যাট ছাড়া দুধ)।
বাদাম ও বীজ: অল্প পরিমাণে আখরোট, কাঠবাদাম এবং তিসির বীজ (Flax seeds) খেতে পারেন। এগুলো হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
যা এড়িয়ে চলবেন:
লবণ (সোডিয়াম) এবং প্যাকেটজাত খাবার (চিপস, ফাস্ট ফুড)।
অতিরিক্ত ফ্যাটযুক্ত খাবার যেমন - রেড মিট, বাটার, এবং ভাজা পোড়া খাবার।
অ্যালকোহল ও অতিরিক্ত ক্যাফেইন।
নিম্ন রক্তচাপ (লো ব্লাড প্রেসার)
নিম্ন রক্তচাপের ক্ষেত্রে রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রায় ফিরিয়ে আনতে কিছু খাবার সাহায্য করে। এই ক্ষেত্রে লবণ, তরল এবং ভিটামিনযুক্ত খাবার গ্রহণ করা জরুরি।
লবণযুক্ত খাবার: রক্তচাপ বাড়াতে লবণ সাহায্য করে। যেমন -
অল্প লবণযুক্ত আচার।
জলপাই।
কম লবণযুক্ত চিজ।
ক্যাফেইন: চা বা কফি তাৎক্ষণিকভাবে রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে। তবে অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ করা উচিত নয়।
প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরল: ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা লো ব্লাড প্রেসারের একটি বড় কারণ। তাই প্রচুর পানি, ডাবের পানি, বা ফলের রস পান করা উচিত।
ভিটামিন বি১২ এবং ফোলেট: এই ভিটামিনের অভাবে অ্যানিমিয়া হতে পারে, যা লো ব্লাড প্রেসারের কারণ।
ভিটামিন বি১২: ডিম, চিকেন, মাছ, দুধ।
ফোলেট: ডাল, সবুজ শাক, ব্রোকলি, লেবু।
ছোট ছোট ভাগে ঘন ঘন খাবার: একসঙ্গে বেশি খাবার না খেয়ে অল্প অল্প করে বারবার খাওয়া উচিত। এটি রক্তচাপ হঠাৎ কমে যাওয়া রোধ করতে সাহায্য করে।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়: আপনার যদি উচ্চ বা নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা থাকে, তাহলে এই খাবারগুলোর পাশাপাশি একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া খুবই জরুরি। কারণ, সঠিক চিকিৎসা এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তন উভয়ই সুস্থ থাকার জন্য সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।