15/07/2024
পর্ব -১
মাথা ব্যাথা কাকে বলে ? ও এর কারন গুলো কি কি ?
মাথা ব্যাথাঃ যদি আমরা এক কথায় বলি যে মাথার মধ্যে যে যন্ত্রণা হয় এটাকে বলে থাকি। কিন্তু আসলে এটা সঠিক নয় কারন মাথার যন্ত্রণাকে স্থানিক রোগ বলে চিহ্নিত করা যুক্তি যুক্ত নয়। সারা দেহের বিভিন অংশের সঙ্গে এর খুব নিকট সম্পর্ক আছে বলে মাথার যন্ত্রণা উপলব্ধি করতে পারি।মাথার যন্ত্রণা কি কারনে হয় বা কোথা থেকে হতে পারে তা বুঝতে হবে।
মাথার যন্ত্রণা কোন একক রোগ নয়, এর অনেক কারন যুক্ত আছে, সেই কারনটিকে বুঝতে হবে আর না হলে মাথা ধরা রোগটি চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। কি কারনে মাথা ব্যাথা হয় তা বলতে গেলে হাজার হাজার কারন প্রকাশ করে এর মধ্য থেকে প্রধান উপসর্গ গুলো বিবেচনা করে সমস্টি গত লক্ষ্মণ কে মাথা ব্যাথা বলে।
মাথা ব্যাথার কারনঃ
মস্তিষ্কে অতিরিক্ত রক্ত সঞ্চয় হলে (cerbral congestion)। নাকে সর্দি বেশি হলে মাথার খুলির মধ্যে অবস্থিত বায়ুকোষ বা বিভিন্ন সাইনাস গুলে আক্রান্ত হলে, চোকের দৃস্টি শক্তির কেন গোলমাল হলে, দাত,কান,,মাড়ি প্রভুতি স্তানের প্রদাহ হলে মাথার ভিতরে প্রদাহ, টিউমার, ফোড়া হলে।মাথার স্নায়ুর প্রদাহ হলে বিশেষ করে Trigeminal Nerve প্রদাহ হলে মাতায় অতিরিক্ত রক্তচাপ হয়।এতে পাকাশয়ের গোলযোগে, অর্জিনতা গ্যাস্টিক, আলসার,পেপটিক আলসার প্রভুতি রোগ থেকে হতে পারে। লিভারের দোষে, পুরোনো কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে মাথা ব্যাথা হতে পারে।নারীর জরায়ু ব্যাধি থাকলে মানুষিক বা দৈহিক কারন বশত মাথা ব্যাথা হতে পারে।শরীরের যে কোন গোলযোগ দেখা দিলে মাথা ধরা লক্ষনটি প্রকাশ পায়। এই কারন গুলোকে বিশ্লেসন করলে দুই ভাগে ভাগে ভাগ করা যায় যেমন মুখ্য কারন ও গৌন কারন।
👉মুখ্য কারনঃ
অর্শের রক্ত শ্রাব,রমনীদের মাসিক ঋতুস্রাবে হটাৎ অবরুদ্ধ হলে,বাতের বেদনা স্পিত হটাৎ কমে গেলে,খোসপাচঁরা বা চর্ম উদ্ভেদ বসে গিয়ে বিভিন্ন উপসর্গ হওয়া,পরিশ্রম বন্ধ করে ালস জীবন যাপন করা ইত্যাদির কারনে মাথা যন্ত্রণা বা মাথা ব্যাথা হতে পারে।
👉গৌন কারনঃ
রমনীদের অধিক দিন পর্যন্ত স্তায়ী ঋতুস্রাব হলে,শিশুদের দীর্ঘদিন দুধ পান করালে,অতিরিক্ত শুক্র ক্সয় হলে,হৃদপিন্ডের কোন যান্ত্রিক সমস্যা দেখা দিলে,বাত উপদংশ,কয়ান্সার,মজ্জাগত জ্বর ইত্যাদি দেখা দিলে অন্ত্রে কৃমি দেখা দিলেও মাথা ব্যাথা হতে পারে।
উপরোক্ত মুখ্য কারন অথবা গৌন কারনে যে মাথা ধরা বা শীরা দেখা দেয় তাকে আমরা এক কতায় মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চয় জনিত শির পিরা বলতে পারি কিন্তু এই কারন গুলো ছাড়াও আরো অনেক কারন শীর পীড়ার সৃষ্টি হয়ে থাকে।
আবার হেমবয়ড্যাল কনজেসটিভ হেডএক এবং এনিমিক হেডএক এর কারনেও মাথা ব্যাথা হতে পারে। অর্শ বলির রজঃশ্রাব বন্ধ হয়ে যে শীরপীরা দেকা দেয় তাকে হেমবয়ডয়াল কনজেসটিভ হেডএক বলে।
আবার কোন রমনীর জরায়ু জনিত দোষ তাকার পলে মাসিক ঋতুতে ভয়ানক অনিয়মিত ভাব দেখা দেয়। নির্দিষ্ট সময়ের পুর্বে বা পরে, অল্প আা অধিক স্রাব হবার কারনে মাথা বয়াথা বা যন্ত্রণা দেখা দিতে পারে একে এ্যানিমিক হেডএক বলে।
এ ছারা আরও কিচু বিশেস কারনে মাথা ব্যাতা দেখা দিতে পারে তা হল স্নায়বিক শির পীরা। এই পীরার কারনে মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চয় জনিত কারণে হয়ে থাকে।প্রধানত সিম্পেতিটিক নার্ভের দুর্বলতা হেতু নার্ভের মধ্যে রক্তাধিক্য এবং সেই নার্ভ মস্তক ও মুখের যে যে পেশীর উপর দিয়ে চালিত হয় সেই স্তানে বেদনার সঞ্চার হয়। স্নায়ু মন্ডলের দুর্বলতার কারনে এই পীড়া হয়ে থাকে। স্নায়বিক শিরপীরার কারনে বিবেচনা করলে আমরা দেখতে পাই যে সেরিব্রোস্পাইনাল সিম্পেথিটিক নার্ভের গোল যোগ হেতু মাথা ব্যাথা রোগ হতে পারে বা উদ্ভব হয়।এই সকল স্নায়ুর সঙ্গে মস্তিষ্ক, লিভার,কিডনি,মুত্রযন্ত্র,অন্ত্র,অতি ঘনিষ্ঠ ভাবে সংশ্লিষ্ট।এছাড়াও হৃদযন্ত্র, শ্বাসনালী,গলা,মুখ,প্রভুতি স্থানের স্নায়ু শাখার সংগে যোগাযোগ এ জন্য বহুদুরে অভ্যান্তরিন কোন যন্ত্রের বিকৃত বা গোলযোগ দেখাদিলেবশির পিরার সৃষ্টি হয়।
শীড়পীড়া রোগীর আক্রান্ত রোগীর মধ্যে যে লক্ষন গুলি দেখা দেয় তা হল ঃ
👉মাথায় প্রচন্ড যন্ত্রণা হয় এবং মুখমন্ডল রক্তিম আকার ধারন করে।
👉মাথার মধ্যে সময় সময় দপদপ করে,কখনও বমি হয়,বমির ভাব দেখা দেয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য লেগেই থাকে।
👉পেটে বায়ুর সঞ্চয় হয়,কখোনো কখোনো করোটির সাইনাস এ সর্দি জমে বা ইনপ্লামেশান হয় একে সাইনোসাইটিস বলে।
👉অনেক সময় দুর্বলতার জন্য মাথা ঘোরে,অনিদ্রা প্রভুতি দেখা যায়।
👉শিরপিরার কোন নির্দিষ্ট কোন সময় নেই যে কোন সময় দেখা দিতে পারে। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে ১ সপ্তাহ,২ সপ্তাহ অথবা ৩ সপ্তাহে বা একমাস বা দুই মাস অন্তর অন্তর হতে পারে।
👉ব্যাথা মাথার অর্ধেককাংশে বেশী হয় এবং মাতার যে পার্শ্বে বেদনা হয় সেই দিকে চোখ ফোলা থাকে বা চোখে পানি লাগতে পারে।
👉মাথা ধরার সময় বমি হয় এবং এতে যে রকম বমি হয় তা অম্লপিত্ত পুর্ন হয় না।
বমির লক্ষ্মণ বিশেষ ভাবে উল্লেখ যোগ্য কারন পৈত্তিক ও অজীর্ন জনিত কারনে শিরপীড়া হয় এবং এতে বমি হতে পারে তবে প্রভেদ এইযে পৈত্বিক বা অজীর্ন শিরপীরা আরম্ভ সংগে সংগে বমি হয় কিন্তু স্নায়বিক শিরপীরা আরম্ভ হওয়ার অনেক সময় পরে বমি হতে পারে বা হয়।
👉অত্যান্ত দুর্বল ও স্নায়ু প্রধান ধাতু বিশিষ্ট ব্যাক্তিরাই এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়।
👉অনেক সময় মাথার পাশে চোখের উপরিভাগে যন্ত্রণা আরম্ভ হয়।
👉 অনেক সময় মাথা ব্যাথার কারনে চোখ মুখ লালচে ভাব হয় এবং মুখ মন্ডল ফুলে যেতে পারে।
কবি ও লেখক, কলামিস্ট
ডাঃমোঃআব্দুল আলিম (বাঙালি)
ডিএইচএমএস (বাহোচিশিকা)ঢাকা
গভঃরেজিষ্টার্ড হোমিও চিকিৎসক।
কিশোরগঞ্জ, নীলফামারী।