25/09/2025
💚আর নয় টেনশন, ঘরে বসেই হবে মেয়েলী রোগের প্রাকৃতিক চিকিৎসায় সব সমাধান!
মেয়েদের মেয়েলী সমস্যা অনেক ধরনের হয়। এর মধ্যে অনিয়মিত ঋতু , বয়ঃসন্ধি, মেনোপজ, গর্ভধারন জটিলতা,জরায়ু ও স্তন ক্যান্সার অন্যতম। এ সব সমস্যার পিছনে যে কারনটি দায়ী সেটি হচ্ছে হরমোন এর গোলমাল।
যে হরমোনের উলটা পালটা আচরনে এত এত সমস্যার সৃষ্টি হয় সে হরমোন নিয়ে প্রথমে একটু আলোচনা করব।
🚹🚺হরমোন ল্যাটিন শব্দ যার অর্থ গতি স্থাপন। দেহের ভাব আবেগ,প্রশান্তি,আনন্দ উল্ল্যাস,ঘুমানো, জাগ্রত হওয়া,গর্ভধারন,সন্তান জন্মদান এককথায় দেহের সমস্ত গতিশীলতার পেছনে আছে এ হরমোন।
হরমোন একটি রস যা দেহে অবস্থিত কিছু গ্ল্যান্ড বা গ্রন্থি থেকে তৈরি হয়। এ গ্রন্থিগুলো বিশেষায়িত কোষ দ্বারা তৈরি। এক একটি গ্রন্থি একটি নির্দিষ্ট হরমোন তৈরি করে যা দেহের একটি নির্দিষ্ট কাজ সম্পন্ন করে। ঐ নির্দিষ্ট হরমোনের অতিকার্যকারীতা বা কম কার্যকারীতা বা নিষ্ক্রিয়তা যেটিই হোকনা কেন তা দেহের নানা কাজের ব্যাঘাত করে গতিশীলতা নষ্ট করে।
দেহের হরমোন উৎপাদনকারী মুল গ্ল্যাডটি মস্তিষ্কে অবস্থিত। এটির নাম পিটুইটারি গ্ল্যান্ড। এ গ্ল্যান্ডটিকে বলা হয় মাদার গ্ল্যান্ড। এটি প্রায় ৭ টি হরমোন উৎপাদন করে। আর হরমোনগুলো দেহের অন্যান্য গ্ল্যান্ডের হরমোন উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে। সুতরাং পিটুইটারি গ্ল্যান্ডের অসুস্থতায় পুরো দেহের হরমোন ভারসাম্যাতা নষ্ট হয়ে জটিল জটিল রোগ লক্ষন তৈরি করতে পারে।
এ গ্রন্থিগুলো যে সমস্ত রস তৈরি করে সেগুলোর কাঁচা মালের জোগান আসে খাদ্য ও পুষ্টি থেকে। একধরনের হরমোনের প্রধান কাঁচামাল ফ্যাটি এসিড যার উৎস চর্বি জাতীয় খাবার। অন্যটির কাঁচামাল এমাইনোএসিড যার উৎস প্রোটিন। তা হলে বুঝা যাচ্ছে যথাযত পুষ্টি ব্যবস্থাপনা না থাকলে দেহে হরমোন উৎপাদন ব্যহত হয়।
এ আলোচনার মুল কেন্দ্র থাকবে কোন কোন হরমোনের সমস্যার কারনে মেয়েদের মেয়েলী সমস্যাগুলো হয়। এবং লেখাটা মনযোগ দিয়ে পড়লে এ সব সমস্যার সমাধান পাওয়া যাবে।
আলোচনার শুরুতে মেয়েদের বয়ঃসন্ধি কালের কিছু শারীরিক সমস্যা নিয়ে কথা বলব। এ সমস্যাগুলোর পেছনে যে হরমোনটা দায়ী সে হরমোনটির নাম এসট্রোজেন। এ হরমোনটি জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত একজন মেয়ে মানুষের সকল বৈশিষ্ট্যের নিয়ন্ত্রক। এ হরমোনটি প্রথম সক্রিয় হয় ৮ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে। এ হরমোন এর প্রভাবে একজন শিশু মেয়ে, নারীতে রূপান্তরিত হয়। মেয়েলী আচরন ও শারীরিক গঠন আর্কষনীয় রূপ নেয় এ হরমোনের প্রভাবে।
এ হরমোন এর প্রভাবে জীবনের প্রথম ঋতু (মিনস) এ সময়কাল (৮ বৎসর থেকে ১৫ বৎসর) থেকে শুরু হয়। চলে ৪৫ থেকে ৫৫ বৎসর পর্যন্ত। একজন মেয়ের জীবনের প্রতিমাসেই এ ঋতু সংঘটিত হয়। ঋতুস্রাবের স্থায়ীকাল ৩ দিন থেকে ৭ দিন হতে পারে। একজন মেয়ের জীবনে এটি একবারেই প্রাকৃতিক ঘটনা। হরমোনটির অতিসক্রিয়তা,কমসক্রিয়তা ও নিস্ক্রিতার কারনে অনেক ধরনের শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হয়।
এ হরমোনটির উৎপত্তি ডিম্বাশয় (ওভারি) থেকে। এছাড়া ডিম্বাশয় থেকে আরও একটি হরমোন তৈরি হয় সেটির নাম প্রজেসটেরন।
গর্ভধারন ও জরায়ু গঠনের জন্য এ হরমোনটি সক্রিয় হয়।
এ হরমোন দুটির প্রভাবে প্রতিমাসে একবার কিভাবে ঋতুস্রাব সংঘটিত হয় সেটি নিয়ে কথা বলব।
প্রথম ঋতুস্রাব থেকে পরবর্তী ঋতুস্রাব পর্যন্ত সময়কালকে মাসিক বা মেনুসট্রেশন বা পিরিয়ড বলে।
মস্তিষ্কের পিটুইটারি গ্ল্যান্ড ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোন (FSH) তৈরি করে। এ হরমোনটি ডিম্বাশয়ের ফলিকলকে ( ডিম্ব ধারনকারী পাত্র) উত্তেজিত করে। এ হরমোনের প্রভাবে প্রতিমাসে একটি ডিম্বানু পরিপক্ক হয় শুক্রানুর সাথে মিলিত হওয়ার জন্য। ওভারীতে প্রায় ৪ লাখ ডিম্বানু জন্ম নেয়। মাসিক শুরু হওয়ার ১৪ দিনের মাথায় একটি ডিম্বানু পরিপক্ক হয়। ডিম্বানুটি পরিপক্ক হওয়ার পর মস্তিষ্কের পিটুইটারি গ্ল্যন্ড অন্য একটি হরমোন লিউন্যাইটাইজিং (LH) তৈরি করে। এটি ফলিকলের পরিপক্ক ডিম্বানুটিকে মুক্ত করতে সাহায্য করে। এ হরমোনের প্রভাবে পরিপক্ক ডিম্বানুটি ডিম্বনালীতে (ফলোপিয়ান টিউব) প্রবেশ করে। যে ফলিকল থেকে ডিম্বানুটি মুক্ত হয়েছে সে ফলিকলটি ধীরে ধীরে করপাস লিউটেনাম (নতুন ধরনে কোষে রূপান্তর) পরিবর্তিত হয়। এ করপাস লিউটেনাম একটি হরমোন তৈরি করে যেটিকে প্রজেসটেরন বলে। মাসিকের ৪র্থ সপ্তাহ পর্যন্ত এটির নিঃসরন হয়। এ সময়ের মধ্যে ডিম্বানুটি শুক্রানুর সাথে মিলিত হয়। নিষিক্ত (ফার্টিলাইজড) ডিম্বানুটি জরায়ুতে প্রতিস্থাপন হয়। ডিম্বানুটি প্রতিস্থাপন এর আগে জরায়ুর পুর্নগঠনের কাজ সম্পন্ন হয়। এ সবগুলো কাজ সম্পন্ন হয় প্রজেসটেরন হরমোনের প্রভাবে। এ সময়ের মধ্যে ডিম্বনালীতে অপেক্ষমান ডিম্বানুটি কোন শুক্রানুর সাথে মিলিত না হলে জরায়ুর ভাঙ্গন শুরু হয়। জরায়ুর জলীয় রক্ত ও মৃত কোষ সহ জরায়ু মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে। এটিকেই রক্তস্রাব বলে। এটি ৩ দিন থেকে ৭ দিন চলতে পারে। এ সময় প্রজেসটেরন ও এসট্রোজেন নিঃসরন কমে যায়। মস্তিষ্কের ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোন কার্যকর হয়। পরবর্তী মাসের ঋতুচক্র (মেনসট্রুয়াল সাইকেল) শুরু হয়। এ ভাবে ৪৫ বৎসর থেকে ৫০ বৎসর বয়স পর্যন্ত চলে। ডিম্বাশয় থেকে মুক্ত ডিম্বানু ডিম্বনালীতে সর্বোচ্চ ২৪ ঘন্টা বেঁচে থাকে। শুক্রানু বেঁচে থাকে ৪/৫ দিন। এ সময়ের মধ্যে নিষিক্ত না হলে ঐ মাসে গর্ভধারন না হয়ে গর্ভধারনের জন্য প্রস্তুত জরায়ুটি ভেঙ্গে যায়। এটিই ঋতুস্রাব।
মস্তিষ্কের পিটুইটারি গ্ল্যাড থেকে নিঃসৃত ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোন ও লিউটেইনাইজিং হরমোন এবং ডিম্বাশয় থেকে নিঃসৃত এসট্রোজেন ও প্রজেসটেরন হরমোনের অতিসক্রিয়তা, কমসক্রিয়তা ও নিষ্ক্রিয়তার কারনেই ঋতু জটিলতা,গর্ভধারন সমস্যা, স্তন ও জরায়ুর ক্যান্সার হয়।
🔴মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস ( মস্তিষ্কের একটি প্রধান গ্ল্যান্ড) অক্সিটোসিন নামে হরমোন তৈরি করে যা মস্তিষ্কের পিটুইটারি গ্ল্যাডের মাধ্যমে রক্তে আসে।
এটি সন্তান প্রসবে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। সন্তান প্রসব সময় হলে এটি সক্রিয় হয় এবং জরায়ুর সংকোচন প্রসারন বাড়িয়ে সন্তানকে জড়ায়ুর বাইরে নিয়ে অাসে।
🔴দুগ্ধ তৈরি ও নিঃসরন এ হরমোন এর প্রভাবেই হয়। এটিকে ভালবাসার হরমোনও বলে। একে অপরকে জরিয়ে ধরে আনন্দ উপভোগ এ হরমোনের প্রভাবেই হয়।
আধুনিক ড্রাগ চিকিৎসায় এ বিষয়টিকে এন্ডোক্রাইনোলজি বলে। এ বিষয়ে অভিজ্ঞ ডাক্তারদের এন্ডোক্রাইনোলজিষ্ট বল। হরমোনজনিত শারীরিক সমস্যাগুলোর আধুনিক ড্রাগ ট্রিটমেন্ট নিয়ে কিভাবে হয় সে বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করব। আলোচনা করব এ কারনে যে, এর বিপরীতে প্রাকৃতিক চিকিৎসা কি হতে পারে সেটি বুঝার জন্য।
মেয়েদের প্রধান হরমোনগুলো কি কি এবং এর কাজ কি উপরের আলোচনায় তা বুঝিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আলোচনার সুবিধার্থে সেগুলোর নাম আবারও উল্লেখ করছি;
♥এসট্রোজেন
♥প্রজেসটেরন
♥অক্সিটোসিন
♥ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোন (FSH)
♥লিউনেইটাইজিং হরমোন(LH)।
এ হরমোনগুলোর অধিকাংশই ল্যাবে কৃত্রিম ভাবে তৈরি কর হয়েছে। আবার দেহের হরমোন তৈরির রসায়নকে ব্যহত করার জন্যও ড্রাগ আছে। অভিজ্ঞ ডাক্তার হরমোন এর ঘাটতি হলে হরমোন মুখে বা ইনজেকশান এর মাধ্যমে দেহে ঢুকিয়ে দেন। আবার বেশী হলে হরমোনের কাজকে বাঁধাগ্রস্ত করার ড্রাগ প্রয়োগ করেন। আমার মনে হয় এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার কিছু নাই। হরমোন বেড়ে গেলে দেহে কি কি সমস্যা হয় আবার কমে গেলে বা বন্ধ হলে কি সমস্যা হয় এটি চিকিৎসা বিজ্ঞানের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞাতায় বইতে লিপিপদ্ধ আছে। সুতরাং চিকিৎসার সহজ ব্যাকরন হরমোন কম থাকলে বাইর থেকে দিতে হবে,বেশী হলে এর কাজ আটকিয়ে দিতে হবে বা তৈরি ব্যহত করার ড্রাগ প্রয়োগ করতে হবে।
🚯জরায়ু ও স্তন ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান কারন এ কৃত্রিম হরমোন চিকিৎসা। জন্ম নিয়ন্ত্রণ (কন্ট্রাসেপটিভ) বড়ির উপাদান সিনথেটিক এসট্রোজেন ও প্রজেসটেরন।
জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল কিভাবে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করে তা এখন একটু জানব। এ পিল ব্যবহার করে মনের অজান্তই জরায়ু ও স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বয়ে বেড়াচ্ছে এর ব্যবহারকারী মেয়েরা।
এসট্রোজেন ও প্রজেসটেরন এক যোগে নিষিক্ত ডিম্বানু ধারনের জন্য জরায়ু গঠনে কাজ করে। মাসিকের শেষ সপ্তাহে এটির নিঃসরন কমে যায়। এর ফলে নিজে নিজেই জরায়ু ভেঙ্গে যায়।
♦কন্ট্রাসেপটিভ পিল খাওয়ার কারনে হরমোন দুটির আধিপত্য থেকে যায়,এর ফলে জরায়ু আরও মোটা হয়। জরায়ুর পুরত্ব বারার কারনে শুক্রানু ডিম্বানুর কাছে পৌঁছতে পারেনা। এর আগে উল্লেখ করেছি ডিম্বাশয় থেকে মুক্ত ডিম্বানুটি ২৪ ঘন্টার মধ্য শুক্রানুর সাথে মিলিত না হলে গর্ভধারন হয় না। এসট্রোজেন এর আধিপত্যের কারনে মস্তিষ্কের পিটুইটারি গ্ল্যান্ডের ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোন উত্তজিত হয় না। এর ফলে ডিম্বাশয় থেকে ডিম্ব অবমুক্ত হয়না।]
এসট্রোজেন এর প্রভাবে স্তন উন্নত হয়,দেহ গঠন আকর্ষনীয় হয়। অতিরিক্ত এসট্রোজেন এর প্রভাবে স্তনের অতি বৃদ্ধির কারনে স্তনের কোষে পরিবর্তন আসে। সেখান থেকে টিউমার হতে পারে। এ টিউমার ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে।
অতিরিক্ত প্রজেসটেরন এর কারনে জরায়ুর গঠনে পরিবর্তন আসে। সেখান থেকে সিস্ট,টিউমার ও ক্যান্সার হতে পারে।
অক্সিটোসিন হরমোনটি স্বাভাবিক প্রসব বেদনা তৈরি করে স্বাভাবিক সন্তান প্রসবে প্রভাব বিস্তার করে। সিনথেটিক অক্সিটোসিন ইনজেকশান করে পুশ করে এখন জোর করে ডেলিভারি করানো হয়। এটি শিশুর দুগ্ধপানে(ব্রেস্টফিডিং) সাহায্য করে। দেহ মনে ভালবাসা তৈরি করে। কৃত্রিম হরমোন ব্যবহারের কারনে এ সব কিছুতেই কৃত্রিমতা তৈরি হয়। এ হরমোনটি মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসে তৈরি হয়। সিনথেটিক অক্সিটোসিন ব্যবহারের কারনে দেহে এটি তৈরি হয়না। ফলে ভালবাসা,আবেগ অনভুতি ও সেক্সের ঘাটতি দেখা দেয়। সংসারগুলোতে আগের মতো জোরলো বন্ধন নাই। এর পেছনে এ হরমোনটির অভাব পরিলক্ষিত হয়।
আবার হাইপোথ্যালামাস অতিরিক্ত অক্সিটোসিন তৈরি করলে এর প্রভাবে অতিরিক্ত আবেগ অনুভুতি ভালবাসা পরিলক্ষিত হয়। জরায়ুর সংকোচন প্রসারন বেড়ে যায়। যার ফলে মাসিকের সময় ব্যাথা ও অতিরিক্ত স্রাব হতে পারে।
মেনোপজ বা ঋতুবন্ধ ৪৫ বৎসর বয়স থেকে ৫৫ বৎসর বয়সে যে কোন সময়ে শুরু হতে পার। এ সময়ে এসট্রোজেন ও প্রজেসটেরন হরমোন দুটির নিঃসরন একেবারই কম থাকে। যার ফলে জরায়ু গঠন ও ডিম্বানু পরিপক্ক হয়না। এসট্রোজেন কমে যাওয়ার কারনে শারীরিক নানা সমস্যার উদ্ভব হয়।
মেনোপজ মেয়েদের খুব পরিচিত একটি সমস্যার নাম হট ফ্ল্যাশ। হঠাৎ করে ঘাড় মুখ বুক গরম হয়ে ঘাম ঝরতে থাকে। বুক ধপ ধপ করে। এটি ২ মিনিট থেকে ৩০ মিনিটও চলতে পারে। এসট্রোজেন কম থাকার কারনে এ রকমটি হয়। এ ছাড়া স্তন ঝুলে যাওয়া,স্কিনের ব্রাইটনেস কমে যাওয়া, যৌনতা কমে যাওয়া, খিটখিটে মেজাজ এ সব অনেক সমস্যার মোকাবেলা করতে হয়।
এ সব সমস্যা সমাধানের জন্য অনেকই আধুনিক চিকিৎসার দ্বারস্থ হন। আধুনিক চিকিৎসায় সারা বিশ্বে জনপ্রিয় পদ্ধতি এইচআরটি(HRT) হরমোন রিপ্লেইসমেন্ট থেরাপী। নাম দেখেই বুঝার কথা এটি অন্য কিছু নয় দেহে সিনথেটিক হরমোন ঢুকিয়ে দেয়া হয়। যার সুদূর প্রসারী পরিনতি হচ্ছে স্তন ও জরায়ু ক্যান্সার। এ থেরাপির কারনে হৃদ রোগেরও সূচনা হয়।
সিনথেটিক হরমোন ড্রাগ ব্যবস্থাপনায় রোগী সাময়িক ভালবোধ করলেও দীর্ঘমেয়াদি জটিল রোগের সূচনা করে।
এখন আলোচনা করব প্রাকৃতিক চিকিৎসায় কিভাবে এন্ডোক্রাইন (অন্তক্ষরা গ্রন্থি) কে সুস্থ রাখা যায়:
♦যেহেতু আনন্দ,উচ্ছাস,হাসি কান্না, প্রেম,ভালবাসা ভাললাগা ঘৃনা, মাসিক, গর্ভধারন, প্রসব এর সব কিছুর পেছনে রয়েছে হরমোন এর প্রভাব তাই এর ব্যবহারিক দিকগুলো বাস্তব ও পরিবেশ উপযোগী গড়ে তুলতে হবে। অর্থাৎ আপনি যদি সারাক্ষণ রেগে থাকেন তাহলে হরমোন ঠিক সেভাবেই দেহের ভিতর স্থায়ী পরিবর্তন নিয়ে আসে। বাহ্যিক ব্যবহারিক আচরন নিয়ন্ত্রণ করে ভিতরের হরমোন কে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আসলেই এটিই মেডিটেশন।
♦ গ্ল্যান্ডগুলো প্রত্যেকটি আলাদা আলাদা বিশেষায়িত কোষ দ্বারা তৈরি। ঐ বিশেষায়িত কোষগুলোই এ হরমোন তৈরি করে। সুতরাং কোষকে সুস্থ রাখতে হবে। কোষ সুস্থ থাকলে তা থেকে তৈরি হরমোন লক্ষ্য টিস্যু কোষে সঠিক ভাবে কার্যকর হয়।
আগেই একটু আলোচনা করেছি হরমোন গুলোর জৈব রসায়ন বিশ্লেষন করলে দেখা যায় এর জৈব উপাদান এমাইনোএসিড ও ফ্যাটিএসিড ছাড়া অন্য কিছু নয়। প্রোটিন ভেঙ্গে দেহে এমাইনোএসিড এবং চর্বি ভেঙ্গে ফ্যাটি এসিড তৈরি হয়। খাদ্যে যদি উপাদানগুলোর অভাব থাকে তবে এ হরমোন তৈরি ব্যাহত হয়। তবে মনে রাখতে হবে হরমোন ত্রুটি নিয়ে জন্মগ্রহণ করা শিশু অটিজমের অন্যতম প্রধান কারন।
সিনথেটিক হরমোন নয় প্রতিদিনের সঠিক খাদ্য পুষ্টি ব্যবস্থাপনা ও জীবন যাপন দেহ হরমোনের
উৎপাদন ঠিক রাখা শতভাগ সম্ভব।