23/08/2023
♦️মাইগ্রেন কী?
মাইগ্রেন এক বিশেষ ধরনের মাথাব্যথা। মাথার যেকোন একপাশ থেকে শুরু হয়ে অনেক সময় পুরো মাথায় ব্যথা করে। এতে মস্তিষ্কে স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হয়। মস্তিষ্কের বহিরাবরণে যে ধমনীগুলো আছে, সেগুলো মাথাব্যথার শুরুতে স্ফীত হয়ে যায়। মাথাব্যথার সঙ্গে বমি বমি ভাবে রোগীর দৃষ্টিবিভ্রম ঘটতে পারে।
মাথাব্যথা বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে। তাদের সবগুলিতেই অস্বস্তি ও ব্যথা হয়।মাথা ব্যথার অন্যতম একটি মাইগ্রেন হেডেক।যা আমরা আধকপালি বলে জানি।
♦️মাইগ্রেন শব্দটি ফরাসি, এর উৎপত্তি ল্যাটিন হেমিক্রেনিয়া থেকে। হেমি=অর্ধেক, ক্রেনিয়া= মাথার খুলি (করোটি)। মেয়েদের মধ্যে এ রোগ বেশি দেখা যায়। সাধারণত ২০-৩০ বছর বয়সে এই রোগের শুরু হয়। যে কোনো পেশার লোকেরই মাইগ্রেন হতে পারে। বাংলায় আধকপালি। বর্তমানে বিশ্বে শতকরা প্রায় ১১ জন বয়স্ক মানুষ মাইগ্রেনজনিত মাথা ব্যথায় ভোগেন। ২৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সে এর ব্যাপ্তি বেশি হয়।
কিছু ব্যক্তি,যারা প্রায়ই এই আধকপালি রোগে ভোগেন তারা এর কারণ চিহ্নিত করতে পারেন, যেমন এলার্জি, মানসিক চাপ, আলো এবং বিশেষ কয়েকটি খাদ্য।
♦️কাদের বেশি হয়?
এটি পুরুষদের থেকে মহিলাদের বেশি হয়।
♦️মাইগ্রেনের কারণ
চকোলেট,পনির,কফি খেলে মাইগ্রেনের প্রকোপ বাড়ে
অনেকক্ষণ টিভি দেখা
দীর্ঘসময় কম্পিউটারে কাজ করা
জন্মবিরতিকরণ ওষুধ
অনেকক্ষণ মোবাইলে কথা বলা
মানসিক চাপ
দুশ্চিন্তা
কোষ্ঠকাঠিন্য
অতি উজ্জ্বল আলো
মোবাইল, ট্যাব থেকে নিঃসৃত ক্ষতিকর আলোক রশ্মি।
♦️লক্ষণ
👉মাথাব্যথা শুরু হলে তা কয়েকঘণ্টা এমনকী কয়েকদিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। চোখের পেছনে ব্যথা হতে শুরু করে। শব্দ ও আলো ভাল লাগে না।
👉মাঝারি থেকে তীব্র ব্যথা, যা সাধারণত মাথার এক পাশে হয় বা দুই পাশেই হয়।
👉ব্যথা ধিকধিক করে মৃদু থেকে ক্রমশ তীব্রতর হতে থাকে ।
👉শারীরিক কাজ করলে ব্যথা আরও বৃদ্ধি পায়।
👉ব্যথা দৈনিক কাজ কর্মে বাধা দেয়।
👉বমির ভাব; বমি হতেও পারে, নাও পারে।
👉আলো এবং শব্দের প্রতি সংবেদনশীল।
👉আলো, শব্দ এবং গন্ধ অসহ্য লাগে।
👉শরীর খুবই দুর্বল লাগে।
👉যন্ত্রণা এবং মেজাজ পরিবর্তন হয়।
♦️মাইগ্রেনের সমস্যা প্রতিরোধ করে
👉ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার।ঢেঁকি ছাঁটা চালের ভাত,আলু ,বার্লি মাইগ্রেন প্রতিরোধক।
👉সবুজ,হলুদ,কমলা রঙের শাকসবজি মাইগ্রেন আটকায়।
👉ক্যালসিয়াম,ভিটামিন ডি মাইগ্রেন প্রতিরোধ করে।
👉 তিল,আটা,বিট ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম আছে।
👉আদার টুকরো বা রস খেলে আরাম পাওয়া যায়।
♦️কোন খাবার এড়িয়ে চলবেন
👉চা,কফি, সফট ড্রিঙ্কস,চকোলেট,আইসক্রিম,টমেটো,টক জাতীয় ফল খাবেন না।
👉আপেল,কলা,চিনাবাদাম খাবেন না। পেঁয়াজও না।
♦️কিছু সাধারণ নিয়ম
কিছু নিয়মকানুন মেনে চললে মাইগ্রেনের সমস্যা থেকে অনেকটাই রেহাই পাওয়া যায়।
👉প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমোতে হবে।
👉নিয়ম করে অন্তত ৬/৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে।
👉অতিরিক্ত বা কম আলোতে কাজ না করা।
👉কড়া রোদ বা তীব্র ঠান্ডা এড়িয়ে চলা।
👉বেশিক্ষণ কম্পিউটারের মনিটরের সামনে না বসা।
👉মাইগ্রেন শুরু হয়ে গেলে প্রচুর পরিমানে পানি খেতে হবে।
👉ঘুমাতে যাবার এক থেকে দেড় ঘন্টার মধ্যে কোনো প্রকার ইলেকট্রনিক ডিভাইস ধরা থেকে বিরত থাকতে হবে।
👉অন্ধকারে কোনো প্রকার ডিভাইস দেখা যাবে না।
👉ঠান্ডা কাপড় মাথায় জড়িয়ে বিশ্রাম নিতে পারেন আরাম পাওয়া যায়।
♦️চিকিৎসা
চিকিৎসকের পরামর্শ মত ওষুধ সেবন করলে মাইগ্রেন কে ককন্ট্রোল এ রেখে ভালো থাকা সম্ভব।
🔷 অনেক ক্ষেত্রে চোখের পাওয়ার জনিত সমস্যা থাকলে, মাইগ্রেন ব্যথার তীব্রতা বেড়ে যায়, তাই প্রথমেই চোখের ডাক্তার এর পরামর্শ নিন।
______________
২৩.০৮.২০২৩
সিরাজুল ✍️ ইসলাম।