30/07/2025
PCOS সম্পর্কে একটু জেনে নেই-
👉PCOS বা Polycystic O***y Syndrome (পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম) হলো একধরনের হরমোনজনিত সমস্যা যা মূলত নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। এটি একটি সাধারণ সমস্যা, বিশেষ করে ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
👉 PCOS-এর লক্ষণসমূহ:
১)অনিয়মিত পিরিয়ড – মাসিক চক্র অনিয়মিত বা একেবারে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এটা যে সবার ক্ষেত্রে হবে তা না , অনেক রোগী পেয়েছি যাদের মাসিক নিয়মিত ছিল।
২)ওভারিতে সিস্ট – ডিম্বাশয়ে ছোট ছোট সিস্ট (ফোলাভাব) তৈরি হয়। অনেক সময় ব্যথা ও হয়।
৩)অ্যান্ড্রোজেন হরমোন বেড়ে যাওয়া – "পুরুষালী" হরমোন (যেমন টেস্টোস্টেরন) বেড়ে যায়, যার ফলে অতিরিক্ত লোম, ব্রণ, চুল পড়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়।
৪)গর্ভধারণে সমস্যা – ডিম্বাণু নিয়মিত নিঃসরণ না হওয়ায় প্রেগন্যান্সিতে জটিলতা তৈরি হতে পারে।
🌿PCOS রোগীদের জন্য কিছু সাধারণ পরামর্শ দেওয়া হলো যাতে তাদের জীবনযাত্রা ও স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং রোগের উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
✅সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যগ্রহণ
✅নিয়মিত ব্যায়াম: প্রতিদিন অন্তত ৪৫ মিনিট হাঁটা, জগিং, সাইকেল চালানো বা যোগব্যায়াম করুন। অভ্যাস না থাকলে বা ওজন অনেক বেশি থাকলে ১৫ মিনিট করে ৩ বারে হাঁটতে শুরু করুন। পরবর্তীতে সময় বাড়াতে থাকবেন পর্যায়ক্রমে।
ওজন কমানো ও হরমোন ব্যালেন্স রাখার জন্য ব্যায়াম খুবই জরুরি।
✅ওজন নিয়ন্ত্রণ: ওজন কমালে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স ও হরমোনের সমস্যা অনেকটাই কমে।
অতিরিক্ত ওজন থাকলে ধাপে ধাপে কমানোর চেষ্টা করুন।
✅স্ট্রেস কমানো: ইয়োগা বা শখের কাজ করুন যা মানসিক চাপ কমায়।
✅পর্যাপ্ত ঘুমানোর চেষ্টা করুন। সেক্ষেত্রে অবশ্যই সময়মতো ঘুমাতে হবে। চেষ্টা করবেন ১১ টার মধ্যে ঘুমানোর। তবে ১২ টার পর কখনোই না। এতে আমাদের বায়োলজিক্যাল ক্লক ঠিক থাকে না এবং হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। তাই সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন।
✅পর্যাপ্ত পানি পান:
দিনে ২-৩ লিটার পানি পান করুন। ওজন অনুযায়ী পান করতে হবে।
🚫 PCOS রোগীদের জন্য এড়ানো উচিত এমন খাবারসমূহ:
🛑 মিষ্টি ও চিনি জাতীয় খাবার:
ক্যান্ডি, চকোলেট, মিষ্টি, কেক, পেস্ট্রি,জ্যাম, সিরাপ, শর্করা যুক্ত পানীয় (সফট ড্রিঙ্ক, জুস)
🛑 ফাস্ট ফুড ও প্রক্রিয়াজাত খাবার:
ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, বার্গার, পিজ্জা, সসেজ, ফ্রোজেন বা ডিপ ফ্রাইড খাবার
🛑 রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট:
সাদা ব্রেড, সাদা চিনি, সাদা চাল,প্রোসেসড স্ন্যাকস যেমন চিপস, ক্র্যাকার
🛑 ট্রান্স ফ্যাট ও অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার:
মার্জারিন, প্যাকেটজাত কুকিজ, পেস্ট্রি,
বেশি তেল দিয়ে ভাজা খাবার।
🛑 দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার (যদি অ্যালার্জি বা সংবেদনশীলতা থাকে):
কিছু রোগীর ক্ষেত্রে বেশি দুধ বা দুধজাত খাবার হরমোনের সমস্যা বাড়াতে পারে। তবে প্রত্যেকের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়, তাই পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
🛑 অতিরিক্ত ক্যাফেইন:
বেশি চা-কফি বা এনার্জি ড্রিঙ্ক।
🛑 অ্যালকোহল:
PCOS থাকলে অ্যালকোহল গ্রহণ এড়ানো উচিত কারণ এটা হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।
✅সহজ ভাষায় বলতে গেলে ননপ্রসেসড, ফ্রেশ এবং হালকা খাবার খান। যা শরীরের ইনসুলিন এবং হরমোন ব্যালেন্স ভালো রাখে।
✅ PCOS রোগীদের জন্য খাওয়ার উপযোগী খাবারসমূহ:
👉 কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) খাবার:
ব্রাউন রাইস, কিনোয়া,
ওটস, ডাল, ছোলা, মটর, মিষ্টি আলু।
👉 প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার:
মুরগির বুকের মাংস, মাছ (সামন, টুনা),ডিম
যেকোন বাদাম।
👉 ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার:
সবুজ শাক-সবজি (পালং শাক, বেটেল শাক, মুলা পাতাসহ),ব্রোকলি, ফুলকপি, গাজর, বিটরুট,
ফল (আপেল, বেরি, কমলা, পেয়ারা পরিমাণ মতো)
👉স্বাস্থ্যকর চর্বি:
অলিভ অয়েল, নারকেল তেল, আভোকাডো,বাদাম চিয়াসিড, ফ্ল্যাক্সসিড।
👉 ফারমেন্টেড খাবার:
টক দই ( সপ্তাহে ১ দিন)
✅যখন তখন না খেয়ে খুদা লাগার পর খাবেন । একটা মোটামুটি নির্দিষ্ট রুটিন ফলো করুন। ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করতে পারেন তবে অবশ্যই কোন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে।
এটা একটা সাধারণ গাইডলাইন যারা নিজেদের জন্য ওজন , উচ্চতা, শারীরিক অন্যান্য সকল সমস্যার ভিত্তিতে ডায়েট চার্ট নিতে চান তারা ইনবক্স করতে পারেন।
🍁আমাদের আশেপাশে অনেক রোগী আছে তাই সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পোস্টটি শেয়ার করুন।🍁
🌼পুষ্টিবিদ সুরাইয়া বিনতে সাদিক🌼
বি.এস.সি ও এম.এস.সি (খাদ্য ও পুষ্টি),(GCAHS, ঢা.বি)
পি.জি.টি ( সার্টিফিকেট কোর্স ওন ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন এন্ড ডায়েটেটিকস (বি.এ.ডি.এন)
বিশেষ ট্রেনিং( ওয়েট ম্যানেজমেন্ট নিউট্রিশন),
(রেনাল নিউট্রিশন), ( চাইল্ড নিউট্রিশন)( বি.এ.ডি.এন)
অনলাইনে কনসালটেন্সির জন্য সিরিয়াল নিতে পেজের ইনবক্সে যোগাযোগ করুন।