19/09/2025
সর্প দংশনে করণীয়
আমাদের দেশে সর্প দংশনে প্রতি বছর ৭৫০০ মানুষ মারা যান। এই মানুষগুলো সাধারনত কর্মক্ষম এবং ওই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। একটু সচেতন হলেই এই মৃত্যুগুলো আমরা অনায়াসেই প্রতিরোধ করতে পারি।
সাপ কামড়ানোর ঘটনাগুলো সাধারনত এরকম-
১।মাঠে মাছ ধরতে গিয়ে সাপে কামড়ের শিকার হোন।
২। বর্ষার সময় চারিদিকে যখন পানি থাকে তখন সাপ শুকনো জায়গার জন্য বাসার ভিতরে আশ্রয় নেয়। সাধারনত খড়ি রাখার জায়গায়, বিছানা, রান্না ঘর, আলনা, খড়ের গাদা ইত্যাদিতে আশ্রয় নেয়। এসব জায়গায় অন্ধকারে/শব্দহীন ভাবে গেলে সাপ কামড়ানোর ঝুকি অনেক থাকে।
৩। রাতের বেলা অন্ধকারে রাস্তায় চলার সময়। (কারন সাপ সাধারনত রাতের বেলা চলাচল বেশি করে)।
৪। মুরগী বা হাঁসের ঘরে সাপ ডিম বা মুরগীর বাচ্চা খেতে আসে।
৫। গরমের সময় বারান্দায় বা উঠানে ঘুমানোর সময়।
সাপ কামড়ালে কি করবেন?
১। আতংকিত হবেন না। কারন সাধারনত সর্প দংশনের মাত্র ২৫ শতাংশ মানুষের শরীরে বিষক্রিয়া হয়।
২। যে জায়গায় সাপ কামড় দিয়েছে সে জায়গাটা নাড়ানো যাবে না। পাতলা গামছা বা শাড়ির কাটা অংশ দিয়ে লুস করে বেঁধে যেতে পারে। দংশিত স্থান নড়াচড়া করলে বিষ দ্রুত শরীরে ছড়িয়ে পড়বে।
৩। রোগীকে ঝারফুক ও কবিরাজী করা, সাপ কাটার জায়গা ব্লেড দিয়ে কেটে ফেলা ইত্যাদি করা যাবেনা।
৪। রোগীকে দ্রুত কাছের হাঁসপাতাল যেখানে সাপের বিষ নিষ্ক্রিয় করার ঔষধ দেবার ব্যাবস্থা আছে সেখানে নিয়ে যেতে হবে।
৫। রোগীকে সাপ কামড়ানোর সময় থেকে ২৪ ঘন্টা অবজার্ভ করতে হবে। কারন সাধারনত সাপ কামড়ানোর ২৪ ঘন্টার মধ্যে শরীরে বিষক্রিয়া হয়। এই সময়ের মধ্যে বিষক্রিয়ার কোন লক্ষন না হলে আর ভয়ের কোন কারন নেই।
কেন কবিরাজরা ঝারফুক করলে সাপ কামড়ানো রোগী ভালো হয়?
আমাদের দেশের বেশির ভাগ সাপ হলো অবিষাক্ত। এছাড়াও সর্প দংশনের মাত্র ২৫ শতাংশ মানুষের শরীরে বিষক্রিয়া হয়। তাই যে সব রোগীর শরীরের সাপের বিষক্রিয়া হয় না, তাদেরকে কবিরাজ চিকিৎসা দিলে সে সুস্থ হয়ে যাবে। যে রোগীর শরীরে বিষক্রিয়া হয়েছে, তাকে বিষ নিষ্ক্রিয় করার ঔষধ না দিলে মৃত্যু অবধারিত।
ডাঃ রতীন্দ্র নাথ মণ্ডল
সহযোগী অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ
প্রাইম মেডিকেল কলেজ