23/05/2025
ছবি'র মানুষটির বয়স কত হবে?
স্বভাবতই উত্তর আসবে- ১০ কিংবা ১২ বছর।
কিন্ত না।
উনার নাম রুহুল আমিন। সার্জারির গত এডমিশনে
মা ও ভাইসহ হাসপাতালে আসেন আমার ওয়ার্ডে।
তখন আমি এডমিশন ডেস্কে ছিলাম।
সব কাগজপত্র দেখে ও হিস্ট্রি নিয়ে জানতে পারি উনি জন্মগত ক্রনিক কিডনি ডিজিজ সহ রিকেটস (Congenital CKD with ?Rickets) রোগে ভুগছেন।
এখন হাসপাতালে এসেছেন কপালে একটি বিষফোঁড়া নিয়ে। ইনফেকশন হয়ে গেছে, ব্যথায় কাতরাচ্ছেন।দেখে মায়া হলো,সাথে সাথেই সিনিয়র স্যারকে জানালাম,এবং ওটিতে নিয়ে বিষফোঁড়াটি অপারেশন করে ভিতরে থাকা ময়লা বের করে দেওয়া হলো।
পোস্ট অপেরাটিভে সেদিন রাত থেকে সকালে ওয়ার্ডে এসে ভালোই ছিলেন।কিন্ত পরের দিন রাতে একদমই ঘুমাচ্ছিলো না, সাথে আবোল তাবোল বলা শুরু করেন।
আমি গিয়ে দেখে চিকিৎসা দেই এবং মোটামুটি সুস্থ হন।
যেহেতু উনি কিডনি রোগে ভুগছেন তাই তার ডায়ালাইসিস করা প্রয়োজন। তাই আমরা উনাকে সার্জারি থেকে নেফ্রোলজি বিভাগে(কিডনি রোগ বিভাগ) ট্রান্সফার করে দেই,কিন্ত ওখানে কোন সীট ফাকা না থাকায় মেডিসিনে ট্রান্সফার করে দেই।
তন্মার্ধ্যে মেডিসিন বিভাগ আমার এলাকার একজন রোগী ভর্তি হন,তাকে দেখতে আমি মেডিসিন বিভাগে যাই।আমাকে দেখেই রুহুল আমিন স্যার স্যার বলে চিৎকার করা শুরু করে,স্বভাবতই আমি গিয়ে রুহুল আমিনকে বলি- (ছোট মানুষ তাই স্নেহ করে "তুই" বলে সম্বোধন করেছি)
আমি: কি খবর রুহুল আমিন, কেমন আছো এখন?
রুহুল আমিন: হাসতে হাসতে বলে স্যার এখন ভালো আছি।
আমি: ডায়ালাইসিস কি হয়েছে?
রুহুল আমিন: জি স্যার ১ বার করেছি।
আমি মেডিসিনের স্যারদের ওর ব্যাপারে জানিয়ে এসেছি,যাতে একটু ভালো সেবা পান। এবং গত কয়েকদিনে যতবারই মেডিসিন ওয়ার্ডে গিয়েছে ওর খোঁজ খবর নিয়েছি।
আজও একটু আগেই দেখে আসলাম।
এখন রুহুল আমিন হাতে ফিস্টুলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন,যাতে নিয়মিত ডায়ালাইসিস চালিয়ে যেতে পারে।
ভালো থাকুক রুহুল আমিন'রা!.........
ও হ্যা,ওর বয়সইতো বলা হলোনা,ওর বয়স ১৯ বছর!
রোগজনিত জটিলতার কারণে ওকে দেখতে বাচ্চাদের মতো।
বি.দ্র: রুহুল আমিনের পারমিশন নিয়েই ছবিটি ক্লিক করা হয়েছে।
লেখা: ২৩ মে,২০২৫