09/09/2025
গর্ভাবস্থায় ওষুধের নিরাপত্তা: Pregnancy Drug Category
গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের দেওয়া প্রতিটি ওষুধ শুধু মায়ের শরীরেই নয়, অনাগত শিশুর শরীরেও প্রভাব ফেলতে পারে। তাই চিকিৎসা বিজ্ঞানে ওষুধগুলোকে ভিন্ন ভিন্ন Pregnancy Category–তে ভাগ করা হয়েছে, যাতে মা ও ভ্রূণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।
কেন প্রয়োজন এই শ্রেণিবিন্যাস?
গর্ভকালীন সময়ে ভ্রূণ খুব সংবেদনশীল থাকে। বিশেষ করে প্রথম ১২ সপ্তাহে (organogenesis period) অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গঠন হয়। এ সময়ে কিছু ওষুধ জন্মগত ত্রুটি (congenital anomaly), ভ্রূণের বৃদ্ধি কমে যাওয়া, এমনকি গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই চিকিৎসকরা ঝুঁকি–সুবিধা বিচার করে ওষুধ নির্ধারণ করেন।
পুরনো (FDA) Pregnancy Category
যুক্তরাষ্ট্রের Food and Drug Administration (FDA) ওষুধগুলোকে পাঁচটি ভাগে ভাগ করেছিল:
Category A 🟢
পর্যাপ্ত গবেষণায় দেখা গেছে—মা ও শিশুর জন্য নিরাপদ।
উদাহরণ: Folic acid, Levothyroxine
Category B
প্রাণীতে পরীক্ষায় ঝুঁকি নেই, তবে মানুষের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত প্রমাণ নেই।
উদাহরণ: Amoxicillin, Metformin
Category C ⚠️
প্রাণীতে ক্ষতিকর প্রমাণ আছে, কিন্তু মানুষের ক্ষেত্রে পরিষ্কার তথ্য নেই। প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয়।*****
উদাহরণ: Fluoroquinolones, Methomol (Paracetamol কিছু ডোজে এখানে ধরা হয়)
Category D 🔴
ভ্রূণের ক্ষতি হওয়ার স্পষ্ট প্রমাণ আছে, কিন্তু মায়ের জীবন রক্ষায় প্রয়োজনে ব্যবহার করা যেতে পারে।
উদাহরণ: Tetracycline, Phenytoin
Category X ❌
মা ও শিশুর জন্য সম্পূর্ণ ক্ষতিকর। কখনো ব্যবহার করা উচিত নয়।
উদাহরণ: Isotretinoin, Thalidomide
---
নতুন ব্যবস্থা (Pregnancy and Lactation Labeling Rule - PLLR)
২০১৫ সাল থেকে FDA পুরনো অক্ষর-ভিত্তিক সিস্টেম বাদ দিয়ে বিস্তারিত বর্ণনা-ভিত্তিক লেবেলিং চালু করেছে। এখন প্রতিটি ওষুধের লেবেলে তিনটি বিষয় উল্লেখ থাকে:
1. Pregnancy risk summary
2. Lactation safety
3. Reproductive potential
এর ফলে চিকিৎসকরা শুধু অক্ষর দেখে নয়, বরং গবেষণা ও ঝুঁকি–সুবিধার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ জেনে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।******
---
বাস্তব জীবনে গুরুত্ব
মায়ের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, মৃগী বা সংক্রমণ থাকলে ওষুধ প্রয়োজন হয়।
চিকিৎসকরা সাধারণত সবচেয়ে নিরাপদ বিকল্প বেছে নেন।
অপ্রয়োজনীয় Self-medication গর্ভবতী মায়েদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
---
উপসংহার
Pregnancy Category শুধু একটি দিকনির্দেশনা। সঠিক সময়ে সঠিক ডোজে ওষুধ ব্যবহার করলে মায়ের স্বাস্থ্য রক্ষা ও শিশুর সুস্থ জন্ম নিশ্চিত করা সম্ভব। তাই গর্ভাবস্থায় কোনো ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। 🌸