02/07/2024
#নবজাতকের_জন্ডিস 🔔🔔
শতকরা ৬০ থেকে ৮০ ভাগ নবজাতকেরই জন্মের পর পর জন্ডিস হতে পারে।
তবে ৫০ শতাংশের বেলায় একে বলে স্বাভাবিক জন্ডিস (physiological Jaundice)।
শিশুর লিভার পুরোপুরি কর্মক্ষম হয়ে উঠতে একটু দেরি হলে রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গিয়ে জন্ডিস হয়।
🔴নবজাতকের জন্ডিস কেন হয় ❓
কম ওজনে ভূমিষ্ঠ শিশু ( =Low birth weight) বা সময়ের আগে জন্ম নেওয়া( ) শিশুরা জন্ডিসে বেশি আক্রান্ত হয়।
এ ছাড়া জন্ডিসের কারণ হিসেবে যে বিষয়গুলো দায়ী হতে পারে, তা হলো-----
🚫মা ও শিশুর রক্তের গ্রুপজনিত জটিলতা।
🚫শিশু সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত বুকের দুধ না পেলে, অনেক সময় একে ব্রেস্ট ফিডিং জন্ডিসও বলা হয়।
🚫গর্ভাবস্থায় মায়ের কোনো সংক্রমণের ইতিহাস।
🚫শিশু জন্মগত কোনো রোগে আক্রান্ত হলে।
🚫জন্মের পর শিশুর রক্তে সংক্রমণ বা সেপটিসেমিয়া।
🚫জন্মগতভাবে শিশুর লিভার কিংবা পিত্তথলিতে কোনো সমস্যা ইত্যাদি।
🔴কীভাবে বুঝবেন জন্ডিস ❓
শিশুর হাতের তালু হলুদ হয়ে গেছে কি না লক্ষ করুন। সাধারণত শিশুর মুখ, হাত ও বুক বা পেটের ওপর পর্যন্ত হলুদ হতে দেখা যায়।
মলের রং সবুজ হতে পারে। শিশুর গায়ের রং পরিবর্তিত হতে দেখলে রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা পরীক্ষা করা যায়। রঙের পরিবর্তন বাড়তে দেখলে এই বিলিরুবিন প্রয়োজনে বারবার পরীক্ষা করা যায়।
টেস্টটির নাম--
🔴জন্ডিস হলে কি বুকের দুধ খাওয়ানো যাবে ❓
✅অবশ্যই বুকের দুধ খাওয়াতে হবে।কোনো অবস্থায়ই নবজাতককে বুকের দুধ খাওয়ানো থেকে বিরত রাখা যাবে না। শিশুকে নিয়মিত দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর পর বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। বিশেষ করে ফিজিওলজিক্যাল বা স্বাভাবিক জন্ডিসের মূল চিকিৎসাই হচ্ছে শিশুকে ঠিকমতো বুকের দুধ খাওয়ানো।
🔴আলো চিকিৎসা ( #ফটোথেরাপি) কেনো❓
✅বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে সাধারণত শিশুকে ফটোথেরাপি বা আলোক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর উপকারিতা ও কার্যকারিতা নিয়ে মতভেদ থাকলেও এখন পর্যন্ত এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে।
🔴নবজাতককে রোদে রাখা কতটা গুরুত্বপূর্ণ❓
কতটুকু সময় রোদে রাখবে❓
✅রোদটা একটি শিশুর জন্য প্রচণ্ড রকমভাবে জরুরি। প্রথম কথা হলো জন্মের পর পরই তো শিশুর জন্ডিস হয়। এটা কিন্তু শতকরা ৬০-৮০জনের হতে পারে। এটি ক্ষতিকর কিছু নয়, যদি একটি সীমা অতিক্রম না করে। যখনই একটু জন্ডিস দেখবে, তখনই রোদে রাখতে হবে।মিষ্টি রোদটা খুব ভালো। আর কাঁচের ভেতর দিয়ে যে রোদ আসে, এটাও কিন্তু জন্ডিসটা কমায়। যত বেশি জন্ডিস, তত বেশি সময় ধরে সে রাখবে। এক ঘণ্টা /দুই ঘণ্টা খুব জরুরি। সকালের দিকে।তবে দুপুরের দিকের সূর্যের কড়া রোদ এবং অতিবেগুনী রশ্মি শিশুর জন্য ক্ষতিকর।
🔴কখন সতর্ক হবেন ❓
✅ সাধারনত স্বাভাবিক জন্ডিস সাত দিনের মধ্যেই সেরে ওঠার কথা। এর পরও কিছু ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি।
তবে,
🚫জন্মের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই জন্ডিস দেখা দিলে,
🚫সাত বা দশ দিনের পরও না সারলে,
🚫শিশু খাওয়া বন্ধ করে দিলে বা কমিয়ে দিলে,
🚫জ্বর বা সংক্রমণের লক্ষণ থাকলে,
🚫বিলিরুবিনের মাত্রা দ্রুত বাড়তে থাকলে বা আগের শিশু জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে থাকলে অবশ্যই শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করুন।
নবজাতক ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ
ডা: মো: আতিকুর রহমান ( আতিক)
এম.বি.বি.এস( ঢাকা), সি.সি.ডি (বারডেম)
ডি.সি.এইচ ( শিশু)
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
নবজাতক ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ
রেজিস্ট্রার, শিশুবিভাগ
ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল,
টঙ্গি,গাজীপুর।