
09/03/2025
এ্যাব্রোটেনাম
এই ঔষধের মাদার টিংচার দক্ষিণ ইউরোপের পার্বত্য এলাকার এক ধরনের ছোট গাছের টাটকা পাতার রস থেকে তৈরি হয়। গাছগুলি বেশি বড় হয় না ঝোপ টাইপের, তিন ফুটের মতন উচ্চতা হয়।
ডাঃ গ্যাটচেল নামের একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক ঔষধটি সর্বপ্রথম পরীক্ষা করেন।
এই ঔষধের প্রধান প্রধান লক্ষনগুলি হচ্ছে ------
★ ভালো খাওয়া দাওয়া সত্ত্বেও বাচ্চাদের শরীর শুকিয়ে যেতে থাকে, বিশেষ করে পায়ের দিকে বা শরীরের নিচের দিকটা বেশি শুকিয়ে যায়, এবং এই শুকিয়ে যাওয়া ভাবটা পায়ের দিক থেকে আস্তে আস্তে উপরের দিকে উঠতে থাকে, কিন্তু পেটটা সর্বদা ফোলা থাকে, পেটটা যেন দিন দিন বড় হয়ে ওঠে।
( বাচ্চাদের শুকিয়ে যাওয়া ভাবটা শরীরের উপরের দিক থেকে হঠাৎ ঘাড়, কাঁধ, হাত, এইসব দিক থেকে আরম্ভ হয়ে শরীরের নিচের দিকে অর্থাৎ পায়ের দিকে নামে -- লাইকোপোডিয়াম, প্লাম্বাম)।
( আয়োডামেও এমাসিয়েশন বা শুষ্কতা আছে তবে তা এ্যাব্রোটেনামের মতন পায়ের দিক থেকে উপরের দিকে উঠে না, তা সর্বাঙ্গীণ। তাদের সারা শরীর একসাথে শুকাতে থাকে। তাছাড়া আয়োডাম খুব গরম কাতর, এ্যাব্রোটেনাম শীতকাতর। আয়োডামে শিশুদের মানসিক অস্থিরতা বেশি থাকে )।
★ শিশুদের চামড়া কুঁচকে যায়, চেহারার মধ্যে অকাল বার্ধক্যতা আসে। মুখ দেখতে বৃদ্ধদের মতন লাগে।
★ শুকিয়ে যেতে থাকলেও এইসব বাচ্চাদের ক্ষুধা খুব বেশী থাকে, বাংলায় যাকে রাক্ষুসে ক্ষুধা বলে। সর্বদাই খাই করে, ( সিনা )।
★ এ্যাব্রোটেনামের বাচ্চারা সাধারণত খুব রাগী, জেদী, উগ্র, হিংস্র বা নিষ্ঠুর প্রকৃতির হয়, এদের মনে দয়া মায়া খুব একটা থাকে না। বাচ্চাদের বাচালতা স্বভাবও খুব বেশী, তারা অনর্গল বকবক করতে থাকে।
★ ডেলিভারি হওয়ার পরে নবজাতকের আম্বিলিকাল কর্ড কাটার জায়গাটা, ( চলতি বাংলায় যাকে নাড়ি কাটা বলে) , বেশ কয়েকদিন হয়ে গেলেও মোটেই শুকাতে চায় না, চুঁয়ে চুঁয়ে রস বা রক্ত পড়তে থাকে, ( ক্যাল্কেরিয়া ফস৷)
★ শীত বেশি, ঠান্ডা বা আদ্র আবহাওয়ায় এরা কষ্ট পায়, এবং গরম আবহাওয়ায় বা গরম ঘরে ভালো থাকে। এজন্য শীতকালে, এবং বর্ষাকালে এদের সব রকম রোগবৃদ্ধি হয়। রাতের দিকেও রোগবৃদ্ধি হয়। বাচ্চাদেরকে ঠান্ডা জলে স্নান করাতে গেলে কান্নাকাটি আরম্ভ করে।
★ এইসব বাচ্চারা প্রায় ডায়েরিয়া বা উদরাময়ে ভোগে। গ্রহণ করা খাদ্যদ্রব্য প্রায়ই মলের সাথে অজীর্ণ অবস্থায় বের হয়। ইংরেজিতে একে লায়ানটেরিক স্টুল বলা হয়। কখনো কখনো কোন বাচ্চার কিছুদিন পাতলা পায়খানা তারপর আবার কিছুদিন শক্ত পায়খানা এমন পর্যায়ক্রম মলত্যাগ চলতে থাকে।
★ পর্যায়ক্রমে রোগের প্রকোপ দেখা যায়। যেমন, কিছুদিন উদরাময় তারপর কোষ্ঠবদ্ধতা, বা কিছুদিন বাতের ব্যথা চলতে থাকে, তারপর বাতের ব্যথা কমে গিয়ে আবার আমাশা আরম্ভ হয়, এইরকম।
★ তাড়াতাড়ি ডায়েরিয়া সারানোর জন্য যদি বিশেষ ধরনের কিছু এ্যালোপ্যাথিক ট্যাবলেট খেয়ে থাকে তাহলে তার পরে শরীরের কোথাও ব্যথা হতে পারে। ব্যথা সাধারণত রাতের দিকে বাড়ে , ঠান্ডায় বাড়ে, এবং গরম সেঁক দিলে ভালো লাগে।
★ রয়াল লন্ডন হোমিওপ্যাথিক হসপিটালের প্রখ্যাত শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ ডগলাজ বোরল্যান্ড তার " চিলড্রেন্স টাইপস ", বইয়ে বলেছেন, এ্যাব্রোটেনাম বহু ক্ষেত্রে বাচ্চাদের কনজেনিটাল পাইলোরিক স্টেনোসিস রোগটি সারাতে সক্ষম হয়।
★ অনেকে বলেছেন ছোট ছোট বাচ্চাদের হাইড্রোসিলে এ্যাব্রোটেনাম ঔষধটি ভাল কাজ করে, অর্থাৎ হাইড্রোসিল স্যাক থেকে জল এ্যাবজর্ব করতে পারে ।
শততমিক শক্তি ---৩০, ২০০, ১০০০, যদি মনে করা হয় কোন রকম সাপ্রেশন বা চাপা পড়ার পরে রোগ হয়েছে, এবং সেই সাপ্রেশন বা অবদমন বের করতে না বেরোলে রোগী সুস্থ হবে না, তাহলে ২০০ শক্তি বা তদুর্ধ শক্তি প্রয়োগ করতে হবে।