15/06/2025
🩺 ডায়াবেটিস (Diabetes Mellitus)
✅ ভূমিকা:
ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘমেয়াদি (ক্রনিক) রোগ, যেখানে রক্তে শর্করার (গ্লুকোজ) মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি হয়ে যায়। এটি সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও এক ভয়াবহ জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। সময়মতো নিয়ন্ত্রণ না করলে এটি হৃদরোগ, কিডনি বিকল, অন্ধত্বসহ নানা জটিলতা তৈরি করতে পারে।
🔍 ডায়াবেটিস কত প্রকার?
১. টাইপ ১ ডায়াবেটিস (Type 1 Diabetes):
অল্প বয়সে শুরু হয়
শরীরে ইনসুলিন তৈরি হয় না
ইনসুলিন ইনজেকশন দেওয়া লাগে
২. টাইপ ২ ডায়াবেটিস (Type 2 Diabetes):
সবচেয়ে বেশি দেখা যায় (প্রায় ৯০%)
শরীরে ইনসুলিন কম কার্যকর হয় বা ঠিকভাবে কাজ করে না
খাদ্যাভ্যাস ও ওষুধে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব
৩. গর্ভকালীন ডায়াবেটিস (Gestational Diabetes):
গর্ভবতী মায়েদের হয়ে থাকে
সাধারণত সন্তান জন্মের পর সেরে যায়, তবে ভবিষ্যতে টাইপ ২ হওয়ার ঝুঁকি থাকে
⚠️ ডায়াবেটিসের লক্ষণ:
অতিরিক্ত পিপাসা লাগা।
ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া।
ওজন কমে যাওয়া।
অতিরিক্ত ক্ষুধা লাগা।
ক্লান্তি বা দুর্বলতা।
চোখে ঝাপসা দেখা।
ক্ষত সহজে না শুকানো।
অনেক সময় কোনো উপসর্গ ছাড়াই ধরা পড়ে, তাই নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা জরুরি।
🧪 ডায়াগনসিস / পরীক্ষাসমূহ:
Fasting Blood Sugar (খালি পেটে রক্তে চিনি): ≥ ৭.০ mmol/L হলে ডায়াবেটিস
2-Hour Post Meal (খাওয়ার ২ ঘণ্টা পর): ≥ ১১.১ mmol/L
HbA1c (৩ মাসের গড় শর্করার মাত্রা): ≥ ৬.৫% হলে ডায়াবেটিস
💊 চিকিৎসা ও নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি:
🥗 ১. খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ:
চিনিযুক্ত খাবার, মিষ্টি, সফট ড্রিংকস পরিহার করুন
কম চর্বিযুক্ত, উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার খান
ফল ও সবজি বেশি খান
পরিমাণমতো খাবার খান (অতিরিক্ত নয়)
🏃 ২. নিয়মিত ব্যায়াম:
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম
শরীর সচল রাখা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ
💊 ৩. ওষুধ ও ইনসুলিন:
টাইপ ২ ডায়াবেটিসে মুখে খাওয়ার ওষুধ (যেমন: মেটফর্মিন)
টাইপ ১ ও জটিল রোগীদের ইনসুলিন প্রয়োজন হতে পারে
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ পরিবর্তন নয়
---
🛑 ডায়াবেটিসের জটিলতা (যদি নিয়ন্ত্রণে না থাকে):
হৃদরোগ ও স্ট্রোক
কিডনি নষ্ট হয়ে ডায়ালাইসিস প্রয়োজন
চোখে রক্তক্ষরণ বা অন্ধত্ব
পা বা হাতের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত (যন্ত্রণা, অসাড়তা)
পায়ের ক্ষত, যা অবহেলায় কেটে ফেল