20/05/2024
মানুষ কেন এবং কখন আপনাকে হিংসা বা জেলাসী করবে?
আসুন দেখি সাইকোবায়োলজি কি বলে -
হিংসা আসলে একটা সহজাত প্রবৃত্তি। যেটা জীনগত ভাবেই একজন মানুষ পেয়ে থাকে। আমাদের সবার মধ্যেই কম বেশি এই প্রবৃত্তি বিদ্যামান। আর এই হিংসা এসেছে অস্তিত্বের প্রশ্ন থেকে৷
যদি বলি আপনার জীবনের সবচেয়ে প্রিয় ব্যাক্তি কে? আর তার উত্তর যদি হয় আপনার জীবনের প্রিয় ব্যাক্তি হচ্ছে আপনার বাবা, মা কিংবা আপনার ভাই বোন অথবা আপনার জীবন সংগী কিংবা অন্য কেউ তাহলে নিঃসন্দেহে আপনি মিথ্যে কথা বলছেন!
আপনার জীবনের সবচেয়ে প্রিয় ব্যাক্তিটি হচ্ছেন আপনি নিজে। আর এই নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য আপনার পক্ষে যা যা করা সম্ভব শেষ পর্যন্ত আপনি সেটাই করে যাবেন। এই জগতের প্রতি আপনার এপ্রোচ টা এমন যে যদি কখনো পৃথিবী ধ্বংসও হয়ে যায় এবং শেষ পর্যন্ত কেবল একজন মানুষ বাঁচার সম্ভাবনা থাকে তাহলে সেটা যেন আপনি হন! আর ঠিক এই কারনেই আমরা সবাই মৃত্যুর পর স্বর্গবাসী হতে চাই কিন্তু কেউই মরতে চাই না!
হিংসার উৎপত্তি আসলে এই পয়েন্ট টা থেকেই। লক্ষ্য করে দেখবেন যারা আপনার প্রতি হিংসাত্মক আচরন করছেন তারা কোন না কোন সময় মেধা, বিদ্যা, জ্ঞান, প্রজ্ঞা কিংবা সামাজিক অবস্থানের দিক দিয়ে আপনার সমপর্যায়ের ছিল। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তিনি হয়ত আপনার থেকে পিছিয়ে পড়েছেন,তা যে কারনেই হোক। সেই ব্যাক্তিটি হতে পারেন আপনার চাচাত, মামাত, ফুফাত ভাই বা বোন কিংবা হতে পারে আপনার স্কুল জীবনের সহপাঠী । অথবা হতে পারে এমন কেউ যার সাথে একসময় আপনাকে তুলনা করা হত।
তো একসময় একি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে থাকা কেঊ যদি হঠাৎ করে বিভিন্ন দিক দিয়ে আপনার থেকে পিছিয়ে পড়ে সেটা তার জন্য অবশ্যই পীড়াদায়ক হয়ে উঠবে ।আর তখনই নিজের অবচেতনে হোক কিংবা সচেতন ভাবেই হোক সে একরকম অস্তিত্ব সংকটে ভোগবে। আর এই অস্তিত্ব সংকট থেকেই আসলে হিংসার উৎপত্তি হয়। আর এই অস্থিত্ব সংকটের সাথে মানিয়ে নিতে গিয়ে বিভিন্ন ভাবে সে নিজেকে আপনার চেয়ে সুপিরিয়র দেখানোর চেস্টা করে। যেমন ধরেন সে গাড়ি চালাতে পারে কিন্তু আপনি সেটা পারেন না, অথচ আপনি অন্য সব দিক দিয়েই তার চেয়ে অনেক এগিয়ে আছেন। অথবা, অযথাই আপনার বাচন ভংগিমা কিংবা আইডিওলজি নিয়ে প্রশ্ন তোলতে পারে।আসলে এসব কিছু করার নিগুঢ় অর্থ হল নিজের দুর্বলতা ঢাকার চেস্টা করা।
সারাংশে যা বলতে চাই তা হলো আপনি আপনার আসে পাশের মানুষের অভিব্যাক্তি দেখে সমাজে নিজের অবস্থান কোথায় সেটা এনালাইসিস করতে পারবেন। যখন দেখবেন আপনার আসে পাশে আপনাকে হিংসা করার মত মানুষ বেড়ে গেছে তার মানে আপনি আত্ম উন্নয়নের দিকেই এগোচ্ছেন। আপনাকে হিংসা করা মানুষের সংখ্যা একটা নির্দিষ্ট পর্যায় পর্যন্ত বাড়তে থাকে।যখন একদম সাফল্যের চূড়ায় পৌছে যাবেন তখন দেখবেন সে সংখ্যাটা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। এর কারন হচ্ছে রাজা আর ভিক্ষুকে কখনো দ্বন্দ হয় না। দ্বন্দ হয় রাজায় রাজায় অথবা ভিক্ষুকে ভিক্ষুকে! এটাই নরমাল হিউম্যান সাইকোলজি।
লক্ষ্য ঠিক রেখে কাজ করতে থাকুন। নিন্দুকের হৃদয়ের অন্তর্দহনে উৎপন্ন তাপশক্তি আপনার জীবনের প্রানশক্তিতে নুতন মাত্রা যোগ করুক!