24/10/2022
একজনের জীবন বদলে দেবার জন্য একজন ভালো শিক্ষকই যথেষ্ঠ কিন্তু সিস্টেম যদি খারাপ হয় তাহলে আসলে কোন পরিবর্তন আনাই সম্ভব নয়।
আমরা সিস্টেম বদলানোর কথা ২০২২ সালে এসেও ভাবতে পারিনা। ইন্ডিয়া সিস্যেম বদলাতে না পারুক অন্তত সেসব নিয়ে ভাবে।
সময়টা ২০০২ এর শুরুর দিকের ঘটনা। ব্যক্তিগত ও শারীরিক কারণে আমি এনজিওর জবটা ছেড়ে দেই। আমার প্রথম বেবিটা মিস ক্যারেজ হবার পর বেশ ডিপ্রেসনে পড়ে যাই...
তখন বাসা থেকে আমার মন ভালোর জন্য বলা হলো আমি যেন কোন স্বল্প সময় এবং অল্প কাজ করতে হয়, এরকম একটা কাজ করি...
তখনকার একটা নামকরা ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলে কিছুদিনের জন্য ঢুকেছিলাম। মাস ছয়েক কাজ করেছি।
শিক্ষক হিসেবে নয়, ঢুকেছিলাম এডমিনিস্ট্রেশনে। পড়ানোটা আমার কাছে খুব বেশি দায়িত্বের মনে হয়। তার চেয়েও বেশি দায়িত্বের মনে হয় খাতা দেখা, আমি ঐ শরীরে করতে চাইনি।
আমার সেই স্কুলের ছয়টা শাখা। আমি যে শাখায় কাজ করি, সেই শাখার প্রিন্সিপাল একজন ডিগ্রি পাশ ভদ্রলোক ছিলেন। তারা কয়েককজন মিলে এই স্কুল খুলেছেন। তার দাপট ছিলো অন্য রকম।
তিনি তার অধস্তন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের কুকুরের বাচ্চা, শুয়োরের বাচ্চা ছাড়া কথা বলতেন না।
পুরোদস্তর ব্যবসায়ী ছিলেন। শিক্ষার শ' ও তার মধ্যে ছিলো না। এক বর্ণ ইংরেজি বলতে পারতেন না। একজন লিবিয়া ফেরত তরুণী শিক্ষিকা তার স্ক্রিপ্ট লিখে দিলে তিনি মুখস্থ করে দেখে দেখে রিডিং পড়তেন পেরেন্টস সামনে।
একবার এক আয়াকে মানবিক কারণ এবং হরতালের জন্য ছুটি দেওয়াতে দাঁত মুখ খিঁচিয়ে এসে আমাকে বলেছিলেন, আজকের চা-টা আপনিই বানিয়ে সবাইকে খাওয়াবেন।
সেই স্কুলে এক ছোট্ট ক্লাস ওয়ানের একটা বাচ্চাকে শিক্ষক তার গলায় "I'm a bad boy.'' লিখে ঝুলিয়ে তাকে ক্লাসের বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন কারণ যাতে সব ক্লাসের শিক্ষার্থীরা সেটা দেখতে পায়।
ক্লাস সেভেনের এক মেধাবী ছাত্রকে সামলাতে না পেরর তাকে মেরে টিসি দেওয়া হয়েছিলো। সেই ছাত্রের মা ছিলেন একজন অতিরিক্ত সচিব।
তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন, আমার ছেলের কী সমস্যা একটু বলবেন।
বাচ্চাটি অতিরিক্ত মেধাবী। তার ক্লাসের পড়া এক ঘেঁয়ে লাগতো...তার তখন আগ্রহ জিওপলিটিক্স নিয়ে। ইরাক ইরানের যুদ্ধ নিয়ে তার বিস্তর আগ্রহ!! সে পরীক্ষায় হায়েস্ট মার্কস পেতো কিন্তু ক্লাসে ছিলো চূড়ান্ত অমনোযোগী এং প্রচণ্ড দুষ্টুমি করতো কারণ তার সাথে কথা বলার মতো শিক্ষক বা শিক্ষার্থী কেউ ছিলো না। এবং তাকে এনগেইজ বা ম্যানেজ করার মতো কেউ ছিলো না।
হঠাৎ কিছু কিছু ছবি সামনে চলে আসে। সেরকম একটা ছবি দেখলাম, chalk N duster.
২০১৬ সালে তৈরি। সত্যিই ছবিটিতে বেশ ভালো কিছু মেসেজ আছে। ইন্ডিয়ার একটা সুবিধা ওরা যা চিন্তা করে সেটা সিনেমায় রুপ দিতে পারে।