11/10/2023
⭕⭕⭕ডিভোর্সের আগে জানা জরুরি⭕⭕⭕
===================================
🖋️আব্দুল্লাহ জিয়াদ
এম.এস. (ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি, ঢাবি)
এম.এস. (সাইকোলজি, ঢাবি)
বি.এস. (সাইকোলজি, ঢাবি)
===================================
বিবাহ বন্ধন একটি আবেগঘন সামাজিক বন্ধন। প্রতিটি বিয়েই শুরু হয় আজীবন সম্পর্কটিকে টিকিয়ে রাখার প্রতিশ্রুতি নিয়ে। কিন্তু কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রেক্ষিতে কখনো কখনো এই আবেগঘন বন্ধনের ইতি টানতে হয়। নিতে হয় ডিভোর্সের মত কঠিন এবং জটিল সিদ্ধান্ত। কখনো কখনো এই কঠিন এবং জটিল সিদ্ধান্তই হয়ে যায় জরুরি যখন সম্পর্কের মাঝে নিরাপত্তা জনিত কোন সমস্যার উদয় হয়। এই কঠিন এবং জটিল সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে ভুল করে ফেলার সম্ভাবনা আছে ব্যাপক। তাই কিছু পদক্ষেপ নিয়ে কথা বলা যাক, যা এই সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পারে।
📌১. চিন্তা ও আবেগ উভয়কেই গুরুত্ব দেয়া:
কোন বিষয়গুলো আপনাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে আগ্রহী করছে? এমন কি ঘটেছিলো, যার পর থেকে মনে হলো এই সম্পর্কে টিকে থাকা আর সম্ভব নয়? এই সম্পর্কের মাঝে এমন কিছু কি আছে কিনা যার জন্য এই সম্পর্ক ধরে রাখা যায়? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানা থাকলে আপনার সিদ্ধান্তের পেছনে আপনার চিন্তা ও আবেগ সম্পর্কে আপনি সচেতন থাকবেন।
📌২. উন্মুক্ত যোগাযোগ:
আপনার উদ্বেগ এবং অনুভূতি সম্পর্কে আপনার পার্টনারের সাথে খোলামেলা এবং সততার সাথে কথা বলুন। এ পর্যায়ে একটু বিবেচনা করা দরকার, আপনি কি আপনার ইচ্ছে গুলো বা যে সকল পরিবর্তন আপনি চান তা স্পষ্টভাবে আপনার পার্টনারের নিকট তুলে ধরেছেন কিনা। অথবা কি হলে আপনি এই ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতেন তা কি আলোচনা করেছেন কিনা। এই সম্পর্কের সন্তোষ এবং অসন্তোষের জায়গাগুলো কি স্পষ্ট করে উপস্থাপন করেছেন কিনা।
📌৩. পেশাদার মনোবিজ্ঞানীর সহায়তা গ্রহণ:
উন্মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে কোন সুরাহা না হলে একজন পেশাদার মনোবিজ্ঞানীর সহযোগিতা নিন। একজন পেশাদার মনোবিজ্ঞানী আপনাকে এমন একটি পরিবেশ তৈরি করবেন যেখানে আপনি নিজের যোগ্যতা, দক্ষতা, সমস্যা ও সম্ভাবনাগুলো একটি নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করতে পারবেন।
📌৪. পুনর্মিলন বাস্তবসম্মত কিনা বিবেচনা করা:
আপনার বর্তমান পার্টনারের সাথে সম্পর্ক পুনর্নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ও পর্যাপ্ত সময়, প্রচেষ্টা এবং প্রতিশ্রুতি ব্যয় করতে ইচ্ছুক কিনা তা ভেবে দেখুন। একটি বৈবাহিক সম্পর্ক কখনও কখনও পুনরুজ্জীবিত হতে পারে যখন স্বামী এবং স্ত্রী উভয়ই এনিয়ে কাজ করতে ইচ্ছুক থাকে। অনেক দম্পতি নিজেদের ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের পার্থক্যগুলো মেনে নিয়েই সম্পর্ক পুনর্নির্মাণে এগিয়ে আসে। আবার অনেকেই হাল ছেড়ে দিয়ে আলাদা হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।
📌৫. দীর্ঘমেয়াদী চিন্তা করা:
বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ থাকা অথবা ডিভোর্সে চলে যাওয়ার সম্ভাব্য দীর্ঘমেয়াদী পরিণতি কী হতে পারে? ডিভোর্সর সিদ্ধান্তটি আপনার ভবিষ্যতের মানসিক সুস্থতা, আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং সামগ্রিক সুখকে ইতিবাচকভাবে নাকি নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করবে সে সম্পর্কে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে চিন্তা করে তবেই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া দরকার। প্রয়োজনে নিজেকে প্রশ্ন করতে পারেন যে, "আগামী পাঁচ বছরে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখলে আপনাকে কি কি অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হতে পারে আর সম্পর্কের ইতি টানলে কি কি অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে?" আর এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আপনার সম্পর্ক চলাকালীন সময়ের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে পারেন। আর এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই আপনার ব্যক্তিগত ডায়েরিতে লিখে রাখবেন।
📌৬. পরিবার এবং বন্ধুদের মাঝে বিশ্বস্তদের পাশে রাখা:
আপনার পরিবার এবং বন্ধু মহলের সবচেয়ে বিশ্বস্ত মানুষদের এই সিদ্ধান্ত নেয়ার সময়টিতে আপনার পাশে থাকতে বলুন। তাদের প্রত্যেকের কাছে পরামর্শ না চেয়ে বরং তাদেরকে এমন একটি সাপোর্টিভ পরিবেশ আপনার জন্য তৈরি করতে বলুন যাতে করে আপনি একটি নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কারণ ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত হতে হবে একান্তই নিজের, সেখানে অন্য কারো প্রভাব থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে হবে।
📌৭. নিজের যত্নকে অগ্রাধিকার দেয়া:
আপনাকে মনে রাখতে হবে যে আপনি একটি মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। আর এই সময়টাতে নিজের যত্নের ব্যাপারে আমাদের বেখেয়ালি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই এই সময়ে প্রতিদিন নিজের যত্নের বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি। নিজের যত্ন মানেই হলো নিজের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য উদ্দেশ্য প্রনোদিত হয়ে কিছু করা। তাই প্রতিদিনের কার্যতালিকা এমন কিছু রাখতে হবে যা আপনাকে শারীরিকভাবে প্রশান্তি দেয়া এবং মানসিক ভাবেও আনন্দ দেয়।
পরিশেষে বলতে চাই, বিবাহ বিচ্ছেদ যেহেতু একটি জটিল এবং কঠিন সিদ্ধান্ত, সেহেতু শারীরিক এবং মানসিক ভাবে সুস্থ থাকতে পারলেই এই সময়ে তুলনামূলক কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে। আর এই কঠিন সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে তাড়াহুড়ো না করে কিছুটা সময় নেয়াই শ্রেয়।
🟰🟰🟰🟰🟰🟰🟰🟰
আপনার যেকোন মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় সাইকোথেরাপি সেবা নিতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
আমাদের সাথে যোগাযোগের নাম্বার-
📞 +8801684-340534
আমাদের ঠিকানা-
আহবান সাইকোথেরাপি এন্ড কাউন্সেলিং সেন্টার
🏪 ব্লক-এ, রোড ৪, বাসা ১১, শাহ্জালাল উপশহর, সিলেট।
📬 Email: aahban.org@gmail.com
🌐 www.aahban.org
https://www.facebook.com/aahbancounselingcenter/