24/09/2025
🌟“চার দশকের আস্থা ও মানবসেবা—প্যারাডাইস মেডিকেল কমপ্লেক্স”🌟
1️⃣ ⭐ ভূমিকা ⭐
প্যারাডাইস মেডিকেল কমপ্লেক্স মানবিক স্বাস্থ্যসেবার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি মানুষের দোরগোড়ায় উন্নত ও সুলভ চিকিৎসা পৌঁছে দিতে। আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল এক ক্ষুদ্র উদ্যোগ থেকে, আর আজ এটি পরিণত হয়েছে একটি পূর্ণাঙ্গ মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতাল হিসেবে।
প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই আমাদের লক্ষ্য ছিল স্পষ্ট—অঞ্চলের মানুষের জন্য মানসম্মত চিকিৎসা নিশ্চিত করা, যাতে তারা শহরে না গিয়েও আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারেন। আন্তরিকতা, দক্ষতা ও মানবিক মূল্যবোধকে সঙ্গে নিয়ে আমরা চিকিৎসাকে ব্যবসা নয়, বরং সেবার মহৎ কাজে রূপান্তর করেছি।
আমাদের অঙ্গীকার—আস্থা, স্বচ্ছতা ও মানবসেবার আদর্শকে ধারণ করে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি টেকসই স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা।
2️⃣ ✦প্যারাডাইস মেডিকেল কমপ্লেক্স- এর দীর্ঘ ইতিহাস ও অবদান ✦
প্যারাডাইস মেডিকেল কমপ্লেক্স শুধু একটি হাসপাতাল নয়, এটি এক মানবিক উদ্যোগ—যা চার দশকেরও বেশি সময় ধরে এই অঞ্চলের গ্রামের সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় উন্নত স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছে।
🩺আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল স্মৃতি ফার্মেসী থেকে। পরে স্মৃতি আউটডোর ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালু করা হয়। এরপর ১০ বেড বিশিষ্ট প্যারাডাইস ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করি।
এখন এটি একটি অত্যাধুনিক, মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতাল হিসেবে গড়ে উঠেছে। যখন শুরু করেছিলাম, আশেপাশে কোনো হাসপাতাল বা ক্লিনিক ছিল না। আজও এই অঞ্চলে এটিই একমাত্র আধুনিক পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র।
প্রায় তিন প্রজন্ম ধরে আমরা স্থানীয় মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস পেয়ে তাদের সেবা দিয়ে আসছি। ভবিষ্যতেও আমরা একই আন্তরিকতা ও মান বজায় রেখে মানুষের পাশে থাকতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
🌿 প্রতিষ্ঠানের মূল বৈশিষ্ট্য ও অবদানগুলো 🌿
🏥স্থায়ী অবকাঠামো ও জমি দান:
পুরো হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত জমিতে, যা মানবসেবার উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ দাতব্য প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে।
💖অলাভজনক কার্যক্রম:
হাসপাতাল এখনও লাভজনক হয়নি বরং ব্যাংক ঋণ এবং দায়ভার মিটিয়ে চলছে। হাসপাতালের সব পরিচালন ব্যয়— বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আনা, যাতায়াত, চিকিৎসা সামগ্রী কেনা— সবই হাসপাতাল থেকে বহন করা হয়। শুধুমাত্র মুনাফার জন্য নয়, মানুষের সেবা করাই প্রধান উদ্দেশ্য।
💸কম খরচে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা সেবা:
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ যেখানে সিলেট শহরে ৮০০-১২০০ টাকা, আমাদের এখানে তা ৫০০-৬০০ টাকায় পাওয়া যায়। কোনো কমিশন প্রথা নেই, যা চিকিৎসার খরচ কমিয়ে এনেছে।
⏰২৪ ঘণ্টা সার্বিক সেবা:
ইনডোর-আউটডোর, ইমার্জেন্সি, সকল ধরনের মাইনর ও মধ্যম অপারেশন, NICU চালু রয়েছে এবং ICU চালুর প্রক্রিয়ায় রয়েছে। দুর্যোগ বা মহামারি পরিস্থিতিতেও (যেমন করোনা, বন্যা, ডায়রিয়া ইত্যাদি) সেবা কখনো বন্ধ হয়নি।
👩⚕️পর্যাপ্ত বিশেষজ্ঞ ও দক্ষ টিম:
বর্তমানে এখানে ১৪ জনের বেশি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, মেডিকেল অফিসার (এমবিবিএস), কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (ডিএমএফ), নার্স (বিএসসি ও ডিপ্লোমা) ও স্বাস্থ্যকর্মী দিনরাত সেবা দিচ্ছেন। যাহা অত্র অঞ্চলের মানুষরা প্রতিদিন এবং প্রতি মুহূর্তে সেবা নিচ্ছেন।
আমাদের অঙ্গীকার—সত্যতা, নির্ভুলতা এবং বিশ্বস্থতা।
💊নিজস্ব ফার্মেসী:
আমাদের ফার্মেসি ইউনিট রোগীদের জন্য নিরাপদ, মানসম্মত এবং সঠিক দামে ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করতে সর্বদা সচেষ্ট। এখানে শুধুমাত্র স্বনামধন্য ও অনুমোদিত কোম্পানির ওষুধ সরবরাহ করা হয়। রোগীদের আস্থা বজায় রাখতে আমরা কোনো অতিরিক্ত চার্জ বা অনৈতিক ছাড়ের প্রথা অনুসরণ করি না; সব ওষুধ সরকার-নির্ধারিত ন্যায্য মূল্যে প্রদান করা হয়।
স্বচ্ছতা বজায় রাখতে ফার্মেসি থেকে প্রতিটি লেনদেন সফটওয়্যারের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় এবং রোগীকে ক্যাশ মেমো প্রদান করা হয়। জরুরি সেবার জন্য ফার্মেসি ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে, যাতে রোগীরা যেকোনো সময়ে ওষুধ পেতে পারেন।
রোগীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি প্রেসক্রিপশন একজন অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত ফার্মাসিস্ট যাচাই করেন এবং প্রয়োজনে ওষুধ সেবনের সঠিক নির্দেশনা প্রদান করেন।
আমাদের অঙ্গীকার—স্বচ্ছতা, ন্যায্য মূল্য, মানসম্মত ওষুধ এবং রোগীর আস্থা।
☀️অন্যান্য মানবিক সুবিধা:
ক্যান্টিন, আলাদা পুরুষ-মহিলা নামাজের স্থান ও আজানের ব্যবস্থা রয়েছে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এখানে চাকরি করার সুযোগ পাচ্ছেন। প্রায় ১২০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এখানে কর্মরত, যাদের অনেকেই স্থানীয় দরিদ্র পরিবারের সন্তান।
🏅বিশেষ অর্জনসমূহ:
আমাদের হাসপাতাল থেকে অভিজ্ঞতা সনদ পেয়ে অনেকেই বিদেশে চাকরি পেয়েছেন। বহু গরিব রোগী নিয়মিত আর্থিক সহযোগিতা পাচ্ছেন। সেবা মানে ছাড় না দিয়ে খরচ কমানো এবং গরিবদের সেবার সুযোগ—এই দুয়ের সমন্বয়ে আমরা কাজ করছি।
🧹পরিচ্ছন্নতা ও সরকারি তদারকি:
প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি নিয়মিত সরকারি পরিদর্শনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানা হয়।
এইসব কারণেই আমাদের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের মফস্বল অঞ্চলের জন্য এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। শহরের বিলাসী সুবিধার বাইরে থেকেও আমরা সর্বোচ্চ আন্তরিকতায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিচ্ছি।
3️⃣ ✪ আধুনিক ও নির্ভরযোগ্য ডায়াগনস্টিক সেন্টার ✪
প্যারাডাইস মেডিকেল কমপ্লেক্সের ডায়াগনস্টিক বিভাগ পরিচালিত হচ্ছে এমবিবিএস, এমডি (ল্যাবরেটরি মেডিসিন), এফসিপিএস (মাইক্রোবায়োলজি) বিশেষজ্ঞের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে। সাথে রয়েছেন একজন অভিজ্ঞ মাইক্রোবায়োলজিস্ট ও প্রশিক্ষিত এক্স-রে টেকনোলজিস্ট।
আমাদের আধুনিক স্যাম্পল কালেকশন রুম ও স্বতন্ত্র মাইক্রোবায়োলজি ইউনিটে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও উন্নত যন্ত্রপাতির মাধ্যমে এক্স-রে, আল্ট্রাসনোগ্রাফি, ইসিজি, ইকো ও প্যাথলজি টেস্টসহ প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। জরুরী রোগীর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় টেস্টসহ ব্লাড প্রতিস্থাপন করা হয়।
এলাকার অনেক হাসপাতালের তুলনায় আমাদের ল্যাব প্রযুক্তি ও রিপোর্টিং মানে অনেক এগিয়ে; এমনকি সিলেট শহরের অনেক প্রাইভেট হাসপাতালের চেয়েও কিছু সুবিধায় আমরা উন্নত।
➡রিপোর্টের মান নিয়ে আমাদের অবস্থান: কোনো টেস্ট রিপোর্টে ভিন্নতা থাকলেই তা ভুল নয়। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতভাবে ল্যাবরেটরিতে কিছুটা ত্রুটির সম্ভাবনা থাকতেই পারে— যন্ত্রের ত্রুটি, রিয়েজেন্টের প্রতিক্রিয়া, নম্বর বিভ্রাট বা টাইপিং ভুলের মতো কারণে এ ধরনের পার্থক্য হতে পারে। এজন্যই আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থা নির্দিষ্ট একটি গ্রহণযোগ্য সীমা নির্ধারণ করেছে।
আমরা নিয়মিত ইন্টার্নাল ও এক্সটার্নাল কোয়ালিটি কন্ট্রোল অনুসরণ করি, যাতে ভুলের হার সর্বনিম্নে থাকে। তারপরও মানবিক ভুলের সীমা আমরা স্বীকার করি। কোনো রিপোর্ট বা সেবায় ত্রুটি থাকলে দয়া করে আমাদের জানালে আমরা আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ থাকব এবং দ্রুত সংশোধনের উদ্যোগ নেব ইনশাআল্লাহ।
4️⃣ ❖ ফিজিওথেরাপি ও রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগ ❖
ফিজিওথেরাপি ও রিহ্যাবিলিটেশন আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা। ওষুধ ও অস্ত্রোপচার ছাড়াই বিভিন্ন ব্যথা ও শারীরিক জটিলতা নিরাময়ে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখে। যেমন: বাত, কোমর ও ঘাড়ের ব্যথা, হাঁটু ও কাঁধের ব্যথা, পেশিজনিত টান, হাড় ক্ষয়, জয়েন্ট শক্ত হয়ে যাওয়া, ডিস্ক প্রলাপ্স (অপারেশন বিহীন), স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি, লিগামেন্ট বা স্পোর্টস ইনজুরি, সায়াটিকা, স্পন্ডাইলোসিস ও স্পাইনাল স্টেনোসিস, ফ্র্যাকচার ও জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট পরবর্তী জটিলতা।
স্ট্রোক, ফেসিয়াল পালসি, সেরিব্রাল পালসি, শিশুর বিকাশজনিত বিলম্বসহ নারীদের প্রেগন্যান্সি ও প্রসব-পরবর্তী ব্যথা এবং অস্বস্তির ক্ষেত্রেও এই চিকিৎসা পদ্ধতি উপকারী।
বর্তমানে অনেক রোগী ওষুধ সেবনের পরও সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হচ্ছেন না। এই অবস্থায় নির্ভরযোগ্য বিকল্প হিসেবে ফিজিওথেরাপির জনপ্রিয়তা বাড়ছে। ফিজিওথেরাপি ডাক্তার রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা পরিকল্পনা ও প্রয়োগের মাধ্যমে রোগীকে ধাপে ধাপে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনেন।
➡সেবার বাস্তব অবস্থা ও আমাদের অঙ্গীকার:
বাংলাদেশে এখনো ফিজিওথেরাপি ও রিহ্যাবিলিটেশন চিকিৎসা সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছায়নি। অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালে ডিপ্লোমা টেকনোলজিস্টদের দ্বারা এবং নামমাত্র প্রেসক্রিপশনের ভিত্তিতে সেবা দেওয়া হচ্ছে, যেখানে ব্যাচেলর ডিগ্রিধারী ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে অসংখ্য মানুষ ভুল চিকিৎসার শিকার হচ্ছেন।
এই বাস্তবতায়, উপজেলা পর্যায়ে বৈজ্ঞানিক ও মানসম্পন্ন চিকিৎসা নিশ্চিত করতে প্যারাডাইজ মেডিকেল কমপ্লেক্স গড়ে তুলেছে একটি স্বতন্ত্র ফিজিওথেরাপি ও রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগ। এটি পরিচালিত হচ্ছে রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশকৃত একজন ব্যাচেলর ডিগ্রিধারী অভিজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে। রয়েছে উন্নত ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি, আলাদা ফিজিও জিম, এবং নারী-পুরুষের জন্য পৃথক ওয়ার্ড।
আমাদের এই উদ্যোগ শুধু চিকিৎসা নয়—এটি উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবার এক অনন্য উদাহরণ।
⚠️সতর্কবার্তা: ব্যাচেলর ডিগ্রিধারী ফিজিওথেরাপি ডাক্তার ছাড়া কখনো ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা গ্রহণ করবেন না। নিরাপদ থাকুন, সচেতন হোন।
5️⃣ ✿ ডেন্টাল ইউনিট ✿
আমাদের ডেন্টাল ইউনিটে শহরের সর্বাধুনিক ডেন্টাল ক্লিনিকের সমতুল্য বা তার চেয়েও উন্নত মানের সেবা প্রদান করা হয়। এটি পরিচালিত হচ্ছে একজন অভিজ্ঞ ও দক্ষ ডেন্টাল সার্জনের তত্ত্বাবধানে, যিনি আধুনিক প্রযুক্তি ও সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের দাঁতের রোগের চিকিৎসা, রুট ক্যানাল থেরাপি, দাঁতের সার্জারি, দাঁত পরিষ্কার এবং অন্যান্য ডেন্টাল কেয়ার সেবা প্রদান করেন। রোগীর স্বাচ্ছন্দ্য ও নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। উন্নতমানের ডায়াগনস্টিক সুবিধা ও Pain-free প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত করি যে প্রতিটি রোগী পায় সেরা এবং নির্ভরযোগ্য চিকিৎসা।
6️⃣ ⏳ আমাদের প্রতিদিনের সংগ্রাম ও নিরলস প্রচেষ্ট ⏳
🌾প্রতিদিনের চ্যালেঞ্জ🌾
➡গ্রামীণ এলাকায় বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের স্থায়ী করা কঠিন, তাই সিলেট শহর থেকে আনতে মোটা অংকের বাড়তি সম্মানী ও ভাতা দিতে হয়।
➡প্রতিনিয়ত ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন এবং পরবর্তী সময়ে অনেক ঋণগ্রস্ত হয়ে আজও আমরা ঋণের বোঝা টানছি।
🌟উন্নয়নের নিরলস প্রচেষ্টা🌟
➡গরিব রোগীদের জন্য সবসময় ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প এবং বিনামূল্যে সেবা প্রদান চালু করার চেষ্টা করছি।
➡প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় স্বচ্ছতা আনতে নিয়মিত প্রশাসনিক বৈঠক এবং রিপোর্টিং চালু রেখেছি।
আমরা সহজ পথে যাইনি, মানবতার কঠিন পথকে বেছে নিয়েছি। আমাদের সংকল্প — চিকিৎসা ব্যবসা নয়, এটা মানবসেবা।
7️⃣ 💎 আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও মানসম্মত সেবা 💎
প্যারাডাইস মেডিকেল কমপ্লেক্স একটি আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান, যা রোগীর কল্যাণ ও সুস্থতাকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেয়। আমাদের ডাক্তার ও নার্সরা দিন-রাত নিরলস পরিশ্রম করে রোগীকে সুস্থ করে তোলার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। রোগীর সুস্থতা আমাদের সবচেয়ে বড় আনন্দ। একজন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার মুহূর্তটি আমাদের পেশাগত জীবনের সবচেয়ে বড় পুরস্কার।
আমাদের হাসপাতাল শুধুমাত্র চিকিৎসার স্থান নয়; এটি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ। প্রতিটি রোগী ও পরিবারকে আমরা আশা, দায়িত্ববোধ এবং মানবিক সহানুভূতির সঙ্গে সেবা দেই। সেবা আমাদের নীতি, মানবতা আমাদের অঙ্গীকার।
➡সেবার মান ও ব্যবস্থাপনা
আমাদের সেবা নিয়মিত সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিদর্শনের আওতায় থাকে। হাসপাতালের প্রতিটি বিভাগে কার্যকারিতা, ব্যবস্থাপনা ও রোগীর সেবা নিশ্চিত করতে টিমটি নিরবিচারে কাজ করে। নিয়মিত মূল্যায়ন ও মনিটরিং আমাদের অঙ্গীকার।
➡কর্মীদের পেশাদারিত্ব ও আন্তরিকতা
আমাদের সকল কর্মী রোগীর প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান ও আন্তরিকতা প্রদর্শন করেন। পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও মনিটরিং চালু রয়েছে। আমরা নিশ্চিত করি, প্রতিটি রোগী যেন সর্বোচ্চ মানের সেবা পান এবং সেবা গ্রহণের সময় তারা আরামদায়ক ও নিরাপদ বোধ করেন।
➡চিকিৎসার খরচ ও আর্থিক সহায়তা
আমাদের চিকিৎসার খরচ রোগীর সুবিধা এবং সেবার মানের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়। শহরের তুলনায় আমাদের সেবা অনেক সাশ্রয়ী। বিশেষজ্ঞ পরামর্শ, অপারেশন ও বেড ভাড়ায় নিয়মিত ছাড় দেওয়া হয়। গরিব ও অসহায় রোগীদের জন্য আর্থিক সহায়তা ও বিশেষ ছাড় চালু রয়েছে।
➡নতুন প্রজন্মের রোগী ও স্থানীয় সমাজের প্রতি প্রতিশ্রুতি
আমরা নতুন প্রজন্মের রোগী ও অভিভাবককে সেবার মান, দায়িত্ববোধ এবং মানবিকতার সঙ্গে পরিচিত করতে সর্বদা সচেষ্ট। গ্রামীণ এলাকায় আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে আমরা স্বচ্ছতা, পেশাদারিত্ব এবং সমবেদনা বজায় রাখি।
8️⃣ 🌈 আমাদের প্রতিশ্রুতি ও প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য 🌈
আমরা, প্যারাডাইস মেডিকেল কমপ্লেক্স, মানুষের উপকারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করি। প্রায় চার দশক ধরে এই এলাকার মানুষের পাশে থেকে আমরা প্রতিদিন নিরলস পরিশ্রম করছি, যাতে প্রতিটি রোগী সুস্থতা ও আরাম পায়। আমাদের লক্ষ্য কখনো ব্যক্তিস্বার্থ নয়, বরং মানুষের কল্যাণই আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য।
আমাদের স্বপ্ন হলো, প্যারাডাইস মেডিকেল কমপ্লেক্স ভবিষ্যতেও সদকায়ে জারিয়া হিসেবে মানুষের কল্যাণে নিবেদিত থাকবে। আমরা চাই, আমাদের প্রতিষ্ঠান মানুষের সেবা ও সুস্থতা নিশ্চিত করতে সর্বদা কার্যকর এবং নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠুক।
আমরা স্থানীয় জনগণ, রোগী এবং অভিভাবকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখি। প্রতিটি মতামত, পরামর্শ ও সুপারিশ আমাদের আরও উন্নত সেবা প্রদানে সহায়তা করে। আমরা নিশ্চিত করি, প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘমেয়াদেও সেবামূলক, মানবিক এবং পেশাদারিত্বপূর্ণভাবে পরিচালিত হবে।
আমাদের টিমের সদস্যরা প্রতিদিন আন্তরিকতা, দায়িত্ববোধ এবং মানবিক সহানুভূতির সঙ্গে কাজ করে। এই প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ও মানদণ্ড আমাদের জন্য গর্বের বিষয় এবং আমরা তা ধরে রাখার অঙ্গীকার করি। মানুষের সুস্থতা ও কল্যাণই আমাদের সফলতার একমাত্র মাপকাঠি।
9️⃣ 🚀 আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং বৃহৎ স্বপ্ন 🚀
আমাদের লক্ষ্য—প্যারাডাইস মেডিকেল কমপ্লেক্সকে একটি দাতব্য ও ট্রাস্টি পরিচালিত প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা। যেখানে লাভ নয়, থাকবে শুধু গরিব-অসহায় মানুষের সেবা করার দৃঢ় অঙ্গীকার।
⭐আমাদের পরিকল্পনাগুলো হল—⭐
➡প্রতিষ্ঠানটি একটি দাতব্য চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের আদলে পরিচালিত হবে, যেমন দাতব্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মাদ্রাসা, মসজিদ বা মন্দির পরিচালিত হয়—যাতে এটি একটি প্রকৃত কল্যাণকেন্দ্রে পরিণত হয়।
➡সৎ ও দায়িত্বশীল স্থানীয় ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত হবে একটি পরিচালনা কমিটি।
➡দুঃস্থ ও অসহায় রোগীদের জন্য স্বল্পমূল্যে চিকিৎসা সুবিধা প্রদান করা হবে।
➡আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ও দানশীল ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় হাসপাতালের মান উন্নত করা হবে।
➡স্থানীয় ছেলে-মেয়েদের দক্ষ জনশক্তিতে গড়ে তুলতে একটি নার্সিং ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হবে।
➡গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য আর্থিক সহায়তা এবং নার্সিং ইনস্টিটিউটে স্বল্পমূল্যে বা বিনামূল্যে পড়াশোনার ব্যবস্থা থাকবে।
➡দীর্ঘদিনের নিবেদিতপ্রাণ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য ফ্রি বাসস্থান এবং তাদের সন্তানের পড়াশোনার জন্য আর্থিক সহায়তা কার্যক্রম চালু করা হবে।
➡প্রতিষ্ঠানের আয়ের একটি নির্দিষ্ট অংশ স্থায়ী ও পরিচালন খাতে ব্যয় করা হবে, একটি অংশ ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণ করা হবে এবং আরেকটি অংশ গরিব ও অসহায়দের সহায়তায় ব্যয় করা হবে।
আমাদের লক্ষ্য একটাই—এই হাসপাতাল যুগের পর যুগ মানবতার সেবায় নিয়োজিত থাকবে।
⭐নতুন প্রযুক্তি ও সুবিধা (২০২৫ সালের শেষের লক্ষ্য)⭐
এই বছরের শেষে আমরা নিম্নোক্ত উন্নত প্রযুক্তি ও সেবা বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করেছি:
➡4G Ultra: দ্রুত ও নির্ভুল ডিজিটাল যোগাযোগ ও চিকিৎসা তথ্য ব্যবস্থাপনা।
➡C-Arm: উচ্চমানের ইমেজিং সুবিধা, যা সার্জারি ও ইন্টারভেনশনাল প্রক্রিয়াকে আরও নিরাপদ ও কার্যকর করবে।
➡CT Scan: উন্নতমানের সিটি স্ক্যান সুবিধা, যা রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার মান বৃদ্ধি করবে।
➡Orthopaedical Development: অস্থি ও জয়েন্ট সংক্রান্ত চিকিৎসা ও সার্জারি ক্ষেত্রে উন্নত ও আধুনিক সেবা।
আমাদের এই পরিকল্পনা ও স্বপ্নের মূল উদ্দেশ্য হলো—প্যারাডাইস মেডিকেল কমপ্লেক্সকে একটি স্থায়ী ও বিশ্বস্ত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা, যা মানুষের কল্যাণ ও সুস্থতার জন্য নিবেদিত থাকবে।
🔟🤲উপসংহার: আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে আমাদের অঙ্গীকার🤲
আকাশ-বাতাস, পাহাড়-নদী—সবকিছুই আল্লাহ মানবকল্যাণের জন্য সৃষ্টি করেছেন। মানুষকে দিয়েছেন সৃষ্টির সেরা মর্যাদা, আর আমাদের লক্ষ্য হলো সেই মর্যাদা রক্ষা করা। প্যারাডাইস মেডিকেল কমপ্লেক্সে আমাদের প্রত্যেক কর্মী আল্লাহর সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ লক্ষ্য হিসেবে ধরে রাখেন।
আমরা চাই, আমাদের চিকিৎসা পেশা সদকায়ে জারিয়া হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হোক—মৃত্যুর পরও মানবিক সেবা অব্যাহত থাকুক। হাসপাতালের উদ্দেশ্য হলো মানবসেবা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন—একটি বৈষম্যহীন, আন্তরিক ও পেশাদার পরিবেশের মধ্যে।
আমরা স্বীকার করি, ভুল-ত্রুটি মানুষের স্বাভাবিক অংশ। তবে হতাশ না হয়ে, আমরা সবসময় আল্লাহর কাছে হেদায়েত ও সহায়তা কামনা করি। গরিব ও অসহায় রোগীদের সাহায্য, ধর্মনিরপেক্ষ সেবা এবং সকল রোগীর প্রতি সম্মান ও আন্তরিকতা আমাদের মূল নীতি।
ভালো কাজের স্বীকৃতি দুনিয়ায় মিলুক বা না মিলুক, আমরা বিশ্বাস করি আল্লাহর কাছে তার প্রতিদান নিশ্চয়ই রয়েছে। রোগ নিরাময়, জীবন ও মৃত্যু—সবই একমাত্র সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর হাতে। আমরা শুধুমাত্র মানুষের কল্যাণে কাজ করি এবং আল্লাহর নির্দেশে চলি।
এই বিশ্বাস, নীতি এবং সংস্কার আমাদের প্রতিদিনের কার্যক্রমকে পরিচালিত করে, এবং আমাদের লক্ষ্য হলো—প্যারাডাইস মেডিকেল কমপ্লেক্সকে ভবিষ্যতেও মানুষের কল্যাণে নিবেদিত রাখার অঙ্গীকার বজায় রাখা।
ডা. সামছুল ইসলাম চৌধুরী
প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও ব্যাবস্থাপনা পরিচালক
প্যারাডাইস মেডিকেল কমপ্লেক্স