28/08/2025
🙏দ্বিতীয় পর্ব শুরু করছি,
🔯 "মানুষের কাহিনী "
অধ্যায়-৫ ♦️ গ্রামের অসুস্থ বৃদ্ধা,
শরতের ভোর।হালকা কুয়াশায় মোড়া গ্রামের গলিপথ দিয়ে পিতা-পুত্র হাটতেছি।হঠাৎ এক ঘর থেকে কান্না ও গোঙানির শব্দ শুনতে পেলাম।ঘরের ভেতর গিয়ে দেখলাম আমাদের সেই চিরপরিচিত বৃদ্ধা শয্যাশায়ী,
শরীর মুখ ফোলা,কন্টস্বর দূর্বল।ক্লান্ত শরীর দূর্বল,চুপচাপ গুটিসুটি মেরে পড়ে আছে।
বৃদ্ধার কন্ঠে ক্লান্তি,
-"বাবা আমার শরীর ভার হয়ে গেছে।ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে না।কেবল অনেকক্ষণ পর পর জল খেয়ে বেঁচে আছি,বুকে সূচ ফুটানো ব্যাথা,নড়া চড়া করতে ইচ্ছে হয় না।শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। "
পিতাশ্রী বৃদ্ধার নাড়ি ধরলেন,মুখে আশ্বাস ঝরালেন।
-"চিন্তা করবেন না,প্রকৃতি নিজেই আপনাকে সুস্থ করবেন,আমি কেবল।তাকে পথ দেখিয়ে দিচ্ছি।"
ঔষধ খাওয়ানোর কিছুক্ষণ পর বৃদ্ধার চোঁখে। মুখে এক সন্তোষ ও প্রশান্তির চিহ্ন প্রকাশ ঘটল।আমি অবাক বিস্ময়ে থাকিয়ে রইলাম।
পিতাশ্রী শান্তস্বরে বললেন,
-"ঔষধ কেবল শরীরের ভার তোলল না,বরং আত্মার ভেতরের ভারসাম্য ফিরিয়ে দিল।দেহ তাই নিজেই নিজের ভারসাম্য ফিরে পেয়েছে।
🔯সেদিন আমি উপলব্ধি করেছিলাম -চিকিৎসা মানে শুধু শরীরকে নাড়া দেওয়া নয়,আত্মাকে ছুয়ে দেওয়া।
অধ্যায়-৬ ♦️ শিশুর কান্না
একদা গ্রামের বাড়ির প্রতিবেশী গরিব পরিবারে ছোট্র শিশু সারারাত ধরে কেঁদে চলছে।কোন কিছুতেই থামার উপায় নাই।আমরা গিয়ে দেখলাম,জ্বর আর ক্ষুধা হীনতায় ক্লান্ত তবুও কান্না থামছে না,খুব অস্থির ছটফট করতেছে।শিশুটিকে দেখে মন মমতায় ভরে উঠল,তার কষ্ট হৃদয়কে ছোঁয়ে গেল,
-"বাবাকে বললাম,সে এতো কাঁদছে কেন?"
পিতাশ্রী শিশুর কপালে হাত রাখলেন।ছোট্র বোতল থেকে একটি গ্লোবিউলস দানা মুখে দিলেন,কিছুক্ষণ পর শিশুটি ধীরে ধীরে ঘুমিয়ে পড়লেন।
আমি বিস্মিত নয়নে বললাম,
-"এতো ক্ষুদ্র ডোজে এমন শান্তি কিভাবে এলো?"
পিতাশ্রী উত্তরে বললেন-
-"শিশু প্রকৃতির সবচেয়ে কোমল সৃষ্টির এক শ্রেষ্ঠ উপহার।তাই তার আত্মা ক্ষুদ্রতম স্পর্শেও সারা দেয়। হোমিওপ্যাথিও কোমলতার ভাষায় কথা বলে,যেখানে শক্তি নয়,সুরই কাজ করে।"
🔯শিশুর ঘুমন্ত মুখের দিকে থাকিয়ে মনে মনে প্রতিজ্ঞা ও সংকল্প করেছিলাম-এই কোমল শক্তির উৎস ও ভাষা একদিন আমিও শিখব।
অধ্যায়-৭♦️অসহায় কৃষক
বিকালের পড়ন্ত রোদে গরুর গাড়ি ঠেলে নিয়ে আসছিল এক কৃষক। শরীর কাহিল,বল শক্তি দূর্বল।
মুখ শুকনো কাছে গিয়ে বাবা জিজ্ঞেস করলেন-
-"কি রে,হল কি?
কৃষক হেসে ফেলল তিক্তভাবে।
-"ক্ষেতে ফসল নেই,শরীরে শক্তি নেই,ঘরে স্রী পুত্র কন্যাদের খাওয়াতে পারছি না,আর খাওয়াবই বা কি?"
আমি বাবাকে প্রশ্ন করলাম-
-" বাবা এতো কেবল অসুখ নয়,এতো দুঃখ ভরা দারিদ্র?"
পিতাশ্রী দীর্ঘশ্বাস ফেললেন,আর বললেন-
-" হ্যা পুত্র।রোগ কেবল শরীরের নয়,জীবনেরও।
দারিদ্র্য, দুঃচিন্তা,অবহেলা -সবই আত্মাকে দূর্বল করে।ঔষধ আমরা দেই সত্য কিন্তু আসল আরগ্য আসে তখনই,যখন মানুষ আশার আলো ফিরে পায়।"
পিতাশ্রী কৃষককে সামান্য ঔষধ দিলেন,সাথে ভরসার কথা শুনালেন।কৃষকের চোঁখ অশ্রুুর জলে ভরে উঠল,যেন ভেতরে নতুন সাহসের পুনর্জাগরণ ঘটল।
🔯 আমি উপলব্দি করেছিলাম-চিকিৎসা কেবল শরীরের নয়,মানুষকে আশা জাগানোও চিকিৎসার অংশ।
👉এভাবেই দ্বিতীয় পর্ব শেষ হলো।
এখন গল্প ধীরে ধীরে দর্শনের গভীরে প্রবেশ করবে- প্রানশক্তি,অভ্যন্তরের সংগতি,আর মানুষের ভেতরের শান্তি নিয়েই এগোবে আগামীতে,