06/06/2025
🐄 গল্প: “ছোট হাসান আর বড় কোরবানি”
ছোট্ট ছেলেটার নাম হাসান। বয়স ৯ বছর। গরিবের ঘরে জন্ম। ঈদের আগে সে প্রতিদিন গ্রামের ধনী বাড়িগুলোর গরুগুলো দেখে আসে—বড়, সাদা, লালচে গরু। তার চোখে ঝিলিক পড়ে, সে হাত বাড়িয়ে ছুঁয়ে দেখে, গরুগুলোর গলায় ঝুলছে রঙিন মালা।
সে মাকে একদিন জিজ্ঞেস করে,
“আম্মু, আমরা কি কখনও গরু কোরবানি দিতে পারব?”
মা একটু থেমে বলেন,
“আমরা মানুষকে ভালোবাসা দিয়ে কোরবানি করি, বাবা। সেটাও অনেক বড় কোরবানি।”
হাসান বোঝে না ঠিকই, কিন্তু মায়ের মুখের দিকে চেয়ে মাথা নেড়ে দেয়।
ঈদের দিন ভোরে হাসান উঠে দেখে, আশেপাশে চারদিকেই কোরবানি চলছে। সে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখে, গরুগুলোর চোখে জল। হঠাৎ তার চোখে পড়ে এক বাচ্চা ছেলের কান্না—ছেলেটির বাবা কসাই, কিন্তু গরিব—নিজের ঘরে কোনো মাংস নেই।
হাসান নিজের হাতে ভাঙা হাড়ের থালাটা নিয়ে দৌড়ে গিয়ে এক বড়লোকের বাড়িতে বলে,
“চাচা, একটু মাংস দিবেন? আমার এক বন্ধু কিছু খায়নি আজও।”
লোকটা অবাক হয়ে দেখে, এই ছেলেটা নিজের জন্য নয়, অন্যের জন্য চাইছে।
সে হাসিমুখে হাসানকে মাংসের একটা প্যাকেট দেয়। হাসান সেটা নিয়ে দৌড়ে যায়, ছোট ছেলেটাকে দেয়।
ছেলেটা জড়িয়ে ধরে বলে,
“তুই তো আমার ঈদের গরু!”
হাসান হেসে ফেলে। সেই হাসিতে ঈদের আসল চেহারা—ভালোবাসা, ত্যাগ আর মানবতা।
সন্ধ্যায় মায়ের কাছে এসে হাসান বলে,
“আম্মু, আজ আমরাও কোরবানি দিলাম—হৃদয় দিয়ে। তুমি বলছিলে, মানুষকে ভালোবাসা দিয়ে কোরবানি করতে হয়—আজ আমি বুঝেছি।”
🕊️ শেষ কথা:
কুরবানীর ঈদ মানে শুধু পশু কোরবানি না,
বরং নিজের ভেতরের হিংসা, অহংকার, আর স্বার্থপরতাকে কোরবানি দেওয়ার উৎসব।
কেউ খালি হাতে থাকলে, তার পাশে দাঁড়ানোই আসল কোরবানি।
ঈদুল আযহার শুভেচছা।