18/03/2024
পিএইচডি করতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত আমি পাঞ্জাবী-পায়জামা-টুপি পড়তাম। মেট্রিক পরীক্ষার পর চিল্লা দেয়ার পর বেশ-ভূষা পরিবর্তন করেছিলাম। ২৫ বছর আগে ইসলামিক পোষাক পড়ার কারণে বিভিন্ন ধরণের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যে স্বীকার হয়েছি।
বিদেশের যাওয়ার প্রাক্কালে আইসিডিডিআরবি'র এইচআর অফিসে গিয়েছিলাম অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট আনতে। সেসময় ফিনান্স/একাউন্স ডিরেক্টর আমাকে দেখে স্টাফদের বাজে বকা দিচ্ছিলেন। কেন এই মাদ্রাসার ছেলেকে অফিসে ঢুকতে দেয়া হলো। এইচআর কর্মকর্তা উনার আচরণে মন খারাপ করেছিলেন।
তখন আমার কান্না পেয়েছিল, কেদেও ছিলাম......
বর্তমান পরিস্থিতি আরো খারাপ হওয়ার কথা। কয়েকমাস আগে আমেরিকার এক বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ নিয়ে একটি গবেষণা দেখায় যে ইসলামিক পোষাক পরিহিত বা মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ডের লোকদের জবের প্রাথমিক বাছাইয়ে বাদ দেয়া হয়, অর্থাৎ তারা প্রচন্ডভাবে বৈষম্যের শিকার হোন।
গ্রামের মেয়ে বৃষ্টি খাতুন ঢাকায় ক্যারিয়ার গড়তে সনাতন ধর্মের নাম নেয়,। সেই প্রতিবেদনে দাবী করা হয়েছে নামের কারণে অনেক সুবিধা পায় বাংলাদেশে।
আমাদের মুসলিম আইডেন্টিটি আজ প্রশ্নের সম্মুখীন যদিও এই পরিচয়ের জন্য বাংলাদেশ নামক দেশের জন্ম হয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তৈরী হয়েছিল মুসলিম ইস্যুতে এবং এর ৬০০ একর জমি দান করেন মুসলিম দাতা (স্যার সলিমুল্লাহ)। সেখানে কুরআন পাঠ করা নিয়ে শোকজ দেয়। ভাবতেই অবাক লাগে আমাদের এত অধপতন দেখে
মুসলিম পরিচয় নিয়ে আমরা একধরণের হীনমন্যতায় ভুগি যা কর্পোরেটে, সুশীল সমাজে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে দৃষ্টিকটুভাবে ভিজিবল।
যারা অন্তরে ইসলাম ধারণ করেন, এর জন্য তৃপ্তিবোধ করেন তাদের সবাইকে এই আইডেন্টিটি ক্রাইসিস সংগ্রামে সফল হতে এমন কাজ করতে হবে যাতে মুসলিম পরিচয় আরো ভিজিবল বা দৃশ্যমান হয়..
সোস্যাল মিডিয়া, সামাজিক পরিবেশে বেশী আসসালামু আইকুম, আলহামদুলিল্লাহ, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম, জাজাকুমুল্লাহ ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করেন।
দেখবেন, এতে মনে অন্যধরণের সাহস তৈরী হবে। যারা প্র্যাক্টিশ করছেন তাদের এপ্রিশিয়েট করবেন যদিও নিজে করতে পারছেন না। ,
ইসলামিক পোষাক বেশ-ভূষা ধারণ করা। পাঞ্জাবী, টুপি হিজাব, নিকাপ, দাড়ি রাখা ইত্যাদি
নিজে প্র্যাক্টিশ করা, সন্তানের মধ্যে ছোটবেলা থেকে অভ্যাস গড়ে তোলা।
আত্ন-পরিচয়ে সাবলীল না হলে একটি দেশ কখনোই কাংখিত পজিটিভ সমাজ তৈরী করতে পারে না।
Mohammad Sorowar Hossain