01/12/2023
♥পড়ুন "স্টেম সেল থেরাপীর" গোপন রহস্য:
♦স্টেম সেল নিউট্রিশন ও স্টেম সেল রিপ্লেসমেন্ট দেহ রোগ নিরাময়ে দুটি ভিন্ন পদ্ধতি। আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে 'জীবন্ত স্টেম সেল " ব্যবহার করা হয়। আর নিউট্রিশন ব্যবহার হয় স্টেম সেল এর থাদ্য হিসাবে। আধুনিক চিকিৎসায় 'জীবন্ত স্টেম সেল ' এর ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন জটিল রোগের চিকিৎসা সফলতা দাবী করা হয় আর এর জন্য গড়ে উঠেছে নতুন একটি চিকিৎসা বিভাগ ' স্টেম সেল থেরাপী'। এর জন্য আলাদা হাসপাতাল, বিশেষ্জ্ঞ চিকিৎসক ও গবেষনা প্রতিষ্ঠান করার জন্য বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হচ্ছে। এর পুরো বিনিয়োগ হচ্ছে জীবন্ত স্টেম সেল সংগ্রহ,কালচার, সংরক্ষন ও কৌশলটি ব্যবহারের জন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তৈরির পেছনে ব্যয় হয়। "স্টেম সেল থেরাপী বাই নিউট্রিশন" নিয়ে ইতিমধ্যে একটি লেখা পোষ্ট করা হয়েছে। এখন আলোচনা করব ' স্টেম সেল থেরাপী বাই রিপ্লেসমেন্ট ' যেটি একটি ব্যবসা সফল চিকিৎসা হিসাবে বিশ্বে ঝড় তুলেছে। অথচ চিকিৎসা প্রার্থী রোগীরা এর সর্ম্পকে না জানার কারনে নানা ধরনের প্রতারনার শিকার হচ্ছে।
♦বিষয়টি জানার জন্য প্রথমেই পরিষ্কার হতে হবে স্টেম সেল কি ?
স্টেম সেল হচ্ছে বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন জীবন্ত কোষ যা প্রকৃতি রাজ্যের সব উদ্ভিদ ও প্রানী দেহের মাতৃ কোষ বা মাদার সেল। অর্থাৎ প্রকৃতির সব প্রান উদ্ভিদ ও প্রানীর নিজস্ব বৈশিষ্ট্য বহন করে যে কোষটি সেটিই মূলতঃ স্টেম সেল। অর্থাৎ মাছি থেকে মাছি ,হাতি থেকে হাতি বা আম গাছ থেকে আম গাছ এ ভাবে মানুষ থেকে মানুষ জন্ম নেয়ার পেছনে যে কোষটি মূখ্য ভূমিকা পালন করে সেটিই ' স্টেম সেল। আধুনিক কোষ গবেষনার মাধ্যমে এ স্টেম সেলের অনেক ক্ষমতার বৈশিষ্ট্য এর বিষয়গুলো নিশ্চিত জানা গছে। এর প্রধান দুটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে;
➡️১) এটি সব ধরনের কোষে রূপান্তর হতে পারে
➡️২) অনির্দিষ্টকাল বিভাজন ক্ষমতা , ক্ষতিগ্রস্ত দেহ অঙ্গের মেরামত এবং পুর্নগঠনের ক্ষমতা ।
আমাদের চারিদিকের জীব জগত সব সময় একই রকম থাকে 'স্টেম সেল 'এর এ ক্ষমতার কারনে। মানব দেহের ভিতরের অঙ্গ ও বাহিরের আকার আকৃতি একই রকম থাকে যদি স্টেম সেল সুস্থ থাকে।
দেহের সব প্রাণ রাসায়ন ঠিক থাকে যদি স্টেম সেল সুস্থ ও সবল থাকে। এ একটি মাত্র স্টেম সেল থেকেই পুরো দেহ তৈরি হয়েছে। সেই আদি মানব কোষটির নাম "জাইগোট"। যেটির সৃষ্টি হয়েছে বাবার একটি "শুক্রানু' ও মায়ের একটি ' ডিম্বানু' র মিলনের ফলে। এ জাইগোটই প্রথম স্টেম সেল। মানব দেহে অবস্থান ভেদে দু ধরনের স্টেম সেল রয়েছে:
➡️১/ এমব্রায়োনিক স্টেম সেল
➡️২/ এডাল্ট স্টেম সেল।
আধুনিক স্টেম সেল থেরাপীতে দেহের দুটি উৎস থেকে সংগৃহীত জীবন্ত স্টেম সেল ব্যবহার হয়।
➡️এমব্রায়োনিক স্টেম সেল সংগ্রহ, সংরক্ষন ও বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে এর ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করা যাক। এমব্রায়োনিক স্টেম সেল সংগ্রহ করা হয় ৪/৫ দিনের ভ্রুন বা এমব্রায়ো খেকে। অর্থাৎ ডিম্বানু ও শুক্রানূন মিলনের ৪/৫ দিন অতিক্রম করার পর যে কোষটি তৈরি হয় এটিকে "ব্লাসটোসিষ্ট " বলে। এ কোষে ১০০/১৫০ টির মত কোষ থাকে। এ কোষ গুলিই অত্যন্ত শক্তিশালি স্টেম সেল। আর এমব্রায়ো বা ভ্রুণ থেকে সংগ্রহ করা হয় বলে এ কোষ গুলোকে "এমব্রায়োনিক স্টেম সেল " বলে। এ কোষগুলো অত্যন্ত দ্রুত বিভাজনশীল ও যে কোন দেহ কোষে রূপান্তর হতে পারে। ভ্রুণ থেকে কোষ সংগ্রহের কারনে ভ্রুণের মৃত্যু ঘঠে। ল্যাবে ভ্রুণ এর সৃষ্টি এবং এর থেকে কোষ সংগ্রহ করে পুনরায় কালচার এর মাধ্যমে কোষ সংগ্রহ ও ভবিষৎ ব্যবহারের জন্য সংরক্ষন করা হয়।
স্টেম সেল গবেষকদের দাবী অসুস্থ দেহ অঙ্গে এ জীবনন্ত কোষ প্রবেশ করানো হলে এ কোষগুলার বায়োলজিক্যাল বৈশিষ্ট্য অনুসারে দ্রুত বিভাজন শুরু করে এবং ঐ নির্দিষ্ট অঙ্গ কোষে রুপান্তরিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ অঙ্গ পুর্নগঠনে সক্রিয় হয়। আর এ জন্যই ডিজেনারেটিভ ডিজিজ নিরাময়ে জীবন্ত স্টেম সেল ইনজেকশান এর মাধ্যমে দেয়া হয়।
এ চিকিৎসা পদ্ধতি পরিচালনার জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন হয়। কারন স্টেম সেল দুটি উৎস থেকে আসে। একটি উৎস রোগীর নিজস্ব ভ্রুণ থেকে সৃষ্ট স্টেম সেল। এটি তুলনামূলক নিরাপদ ঝুঁকি কম,ব্যয়বহূল ও বির্তকিত। বির্তকিত কারন এতে নিজ ভ্রুনের হত্যা হয়।
অন্যের ভ্রুণ থেকে সংগৃহীত স্টেম সেল ব্যবহারের ঝুকি ৫০% থেকে ৭০% পর্যন্ত হতে পারে। এর কারন একজনের দেহ কোষের জিন এর সাথে অন্য জনের জিনের গঠনে কখনোই ১০০% মিল হয় না। ফলে স্টেম সেল রিজেকশন ঘটতে পারে। এবং ফল স্বরূপ প্রচন্ড পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয়ে মৃত্যুর সম্ভবনাও থাকে। এ জন্যই স্টেম সেল থেরাপীর জন্য বিশেষয়াতি হাসপাতাল ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন হয়।
➡️স্টেমসেল থেরাপীতে দেহের অন্য আরেকটি উৎস থেকে সংগৃহীত স্টেম সেল ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের স্টেম সেল কে "এডাল্ট স্টেম সেল" বলে । মানব দেহের অধিকাংশ দেহ অঙ্গ টিস্যুতে এ "এডাল্ট স্টেম সেল " রয়েছে। এ সেলের কাজ হচ্ছে দেহ অঙ্গের নানা কারনে বিধ্বস্ত কোষ গুলোর ত্রুটি সাড়িয়ে তোলা এবং পুর্নগঠনে সাহায্য করা। দেহের টিস্যুগুলো কেটে গেলে ছিড়েঁ গেলে রোগাক্রান্ত বা বার্ধক্যে পৌঁছে গেলে এ 'এডাল্ট স্টেম সেল ' টিস্যুগুলোকে পুর্বের অবস্থানে নিয়ে আসে। এখন বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন কাটা ছেড়াঁ গেলে কেন জোড়া লাগে বা অসুস্থ মানেুষের সুস্থ হয়ে উঠার গোপন রহস্য কি। সেটি অন্য কিছু নয় দেহের অভ্যন্তরস্থ বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন সেল " এডাল্ট স্টেম সেল। এ 'এডাল্ট স্টেম সেল ' সংগ্রহ,সংরক্ষন করা হয়। স্টেম সেল থেরাপীর বড় অংশ সরবরাহ হয় 'এডাল্ট স্টেম সেল।" থেকে।
"এডাল্ট স্টেম সেল " সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে এর ব্যবহার নিয়ে জানা দরকার। এ কারনে জানা দরকার যে, রোগ নিরাময় প্রার্থীদের না জানার কারনে অর্থদন্ড ও প্রানদন্ড দুটিই ঘটতে পারে।
এডাল্ট স্টেম সেলের প্রধান উৎসগুলো হচ্ছে গর্ভবতী নারীর প্লসেন্টা,নাভী, লিভার ও মেরুমজ্জা বা বোন ম্যারো। নারীর সন্তান ধারনের জন্য জরায়ূতে একটি অঙ্গ তৈরি হয় এটিকে "প্লাসেন্টা" বলে। এ প্লাসেন্টার মাধ্যমে গর্ভস্থ্য শিশু অক্সিজেন ,পুষ্টি,রক্ত সরবরাহ এবং শিশুর বর্জ অপসারিত হয়। শিশুর নাভীর সাথে একটি নালির মাধ্যমে সংযোগ স্থাপিত হয়। আর এ সংযোগ নালীকেই নাভী বা আমবিলিকল কর্ড বলে। এ কর্ড ও প্লাসেন্টা সব ধরনের রক্ত ও পুষ্টি ধারন করে এবং বিশেষ প্রকৃতির এডাল্ট স্টেম সেল ধারন করে যেটিকে বলা হয় " হেমাটোপোয়েটিক স্টেম সেল"। এ স্টেম সেল থেকে দেহে সব ধরনের রক্ত কনিকা (রেড,হোয়াইট ও প্লাটিলেট) তৈরি হয়। ভ্রুণের পরিপক্কতার সাথে এটি লিভার থেকে তৈরি হয়। পরিপক্ক শিশু থেকে এটি অস্থিমজ্জা থেকে তৈরি শুরু হয়। এবং জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এটি বোন ম্যারোতেই তৈরি হয়।
এডাল্ট স্টেম সেল সংগ্রহ করার জন্য প্লাসেন্টা ,নাভি ,লিভার ও অস্থিমজ্জা ব্যবহার করা হয়। বানিজ্যিক ভাবে সরাসরি প্লাসেন্টা থেকে রক্ত সংগ্রহ ও সংরক্ষন করা হয়।এবং সেটি কালচার করে বানিজ্যিক ভাবে সরবরাহ করা হয়। এডাল্ট স্টেম সেল সংগ্রহের বড় উৎস হচ্ছে 'আমবিালকল কর্ড বা নাভী। অস্থিমজ্জা ও লিভার থেকেও এই " হেমাটোপোয়েটিক এডাল্ট স্টেম সেল সংগ্রহ করা হয়। ব্লাড ক্যান্সার রোগীদের অস্থিমজ্জায় এ
'হেমাটোপোয়েটিক স্টেম সেল" প্রতিস্থাপন করা হয়। আর এ পদ্ধতিকে বলে ' বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট। কারন হেমাটোপোয়েটিক স্টেম সেল থেকেই দেহে সব ধরনের রক্ত তৈরি হয়। এ ছাড়া নার্ভ , স্কিন, সহ প্রায় ২০ টি অর্গান টিস্যুতে "এডাল্ট স্টেম সেল" রয়েছে। এ ছাড়া দেহের প্রয়োজনে "এডাল্ট স্টেম সেল" "এমব্রায়োনিক স্টেম সেল " এ রুপান্তর হতে পারে বলে কোষ বিজ্ঞানিরা নিশ্চিত করেছেন।
➡️জীবন্ত স্টেম সেল থেরাপী অনেক ব্যয় বহুল এবং নিরাপদ নয়। ব্যয় বহূলের কারন এর অসহজলভ্যতা। অর্থাৎ পুরো একটা অর্থনৈতিক , বৈজ্ঞানিক কর্মকান্ডের মাধ্যম্যে এটি পরিচালিত হয়।
নিরাপদ নয় এ কারনে যে, একজনের দেহের স্টেম সেল অন্য জনের দেহে ১০০% ম্যাচ করে না। ঝুঁকি এড়ানোর জন্য নিজ দেহের স্টেম সেল ব্যবহার পদ্ধতি নিয়ে কাজ হচ্ছে । এ পদ্ধতিকে বলা হয় "অটোলোগাস"।
আমার এ বিশদ আলোচনা টানার কারন একটি ভাল সংবাদ উপস্থাপন করা। সংবাদটি হচ্ছে "স্টেম সেল " তো কৃত্রিম ভাবে তৈরি হয় না। এটি জীবন্ত দেহে প্রতিনিয়ত তৈরি হয়। দেহের বাইরে সংরক্ষিত "স্টেম সেল " বেশী দিন বাঁচে না। এবং ইনএকটিভ থাকে। শুধু মাত্র জীবন্ত দেহে এটি সক্রিয় হয়। এত কষ্ট করে এত ব্যয় করে বাহির থেকে স্টেম সেল পুষ করার প্রয়োজন আছে বলে প্রমানাদি উপস্থাপন সম্ভব নয়।
জীবন্ত স্টেম সেল এর বেঁচে থাকার জন্য দেহ হচ্ছে উপযুক্ত নিবাস। কারন প্রতিটি কোষের বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেন ও পুষ্টি অপরিহার্য। অক্সিজেন ছাড়া কোষ দেড় মিনিটের বেশী বাঁচেনা। সব কোষের জন্য ৬টি নির্দিষ্ট পুষ্টি অপরিহার্য। আর এ পুষ্টি গুলো শুধু মাত্র উদ্ভিদ দেহে তৈরি হয়। তাই সুষম প্রাকৃতিক খাদ্য ব্যবস্থাপনা সুস্থ ও সবল কোষের জন্য অপরিহার্য। বাহির থেকে জীবন্ত স্টেম সেল প্রবেশ করানো হলেও এর বেঁচে থাকার জন্য দেহের অভ্যন্তরীন প্রান রাসায়নিক পরিবেশ,পযাপ্ত অক্সিজেন ও সঠিক পুষ্টি যেমন গ্লুকোজ, এমাইনোএসিড, ফ্যাটিএসিড, ভিটামিনস , মিনারেলস ও পানির প্রযোজন। দেহ কোষের জন্য প্রায় ৩০/৩২ ধরনের মিনারেলস যেমন সোডিয়াম, পটাসিয়াম, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, কার্বন , আয়রন, ক্লোরিন ফ্লোরিন প্রভৃতি এবং ভিটামিনস যেমন ,ভিটামিন এ,বি,সি,ডি,কে সহ সব ধরনের ভিটামিন কোষের প্রান রাসায়নিক কাজ সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজন হয়। আর এর সব পুষ্টির একমাত্র যোগানদার প্রাকৃতিক খাদ্য।
স্টেম সেল নিউট্রিশন থেরাপী মূলতঃ কোষের পুষ্টি ব্যবস্থাপনা। দেহ কোষ ড্রাগ ,ডাক্তার হাসপাতাল কিছুই চেনে না। দেহ কোষ শুধু চেনে প্রাকৃতিক পুষ্টি ও অক্সিজেন। আধুনিক স্টেম সেল পুষ্টি ব্যবস্থাপনা বৈজ্ঞানিক গবেষনায় প্রতিষ্ঠিত পুষ্টি ব্যবস্থাপনা। কোষ কোন পুষ্টি কিভাবে ব্যবহার করে এবং পুষ্টির ব্যবহার করে কি কি প্রান রাসায়নিক কাজ সম্পন্ন করে এটি প্রান রসায়ন গবেষনার মাধ্যমে জানা গেছে। সুতরাং স্টেম সেল নিউট্রিশন থেরাপীর প্রয়োজনীয়তা আছে যদি কারও দেহে জীবন্ত স্টেম সেল প্রবেশ ঘটানোও হয়।
স্টেম সেল নিউট্রিশন ১০০% কার্যকরী ও নিরাপদ । কারন এটি কোষের খাবার।
Dr.Shebendra karmakar
PhD in Naturopathy,
Stem Cell Nutritionist
www.facebook.com/Dr.Naturopathy
Mobile: 01712393053
My Artical on Stem Cell Nutrition therapy uploads for Nursing course at Harvard University, USA