18/01/2025
খাদ্যবস্তুর তালিকায় কার্বোহাইড্রেটকে এখন ফেলা হচ্ছে নন্দ ঘোষের তালিকায়। যত দোষ সব কার্বস্-এর জন্য। ডায়াবেটিস, থলথলে ভুঁড়ি, উচ্চ রক্তচাপ, দু’পা হাঁটলেই হাঁপিয়ে যাওয়া – অ্যাভয়েড কার্বস্!
এর সঙ্গে যোগ করুন এই সব ন্যাকামোগুলো – ও মা, ওতে তো শুধুই কার্বস্, একদম খাসনে, নো ফুড ভ্যালু!
চার কিলোক্যালরি পার গ্রাম, নো ফুড ভ্যালু!! প্রোটিনেও যা, কার্বোহাইড্রেটেও তা; কিন্তু গেদে প্রোটিন খাও, বাদ দাও কার্বস্!
সাহস থাকে তো দুনিয়া থেকে উড়িয়ে দাও ধান-গম-ভুট্টা-আলু ও অন্যান্য কন্দ! দেখা যাবে কটা মানুষ বেঁচে থাকে আর কেমন তাদের শরীরের তাকৎ।
গদি চেপে বসে থাকবেন সারাদিন, গতর নাড়াবেন না, আর দোষ চাপাবেন কার্বসের ওপর, এ কেমন কথা! দোষ কার্বসের নয়। দোষ আপনার কুঁড়েমির। আলস্যের। আমাদের বাপ-ঠাকুরদা যাঁরা মাঠে চাষবাস করতেন, সারাদিন গতর নাড়ালেও দিনশেষে কোনো রকম দু’মুঠো জুটতো, তাঁদের জিজ্ঞেস করুন কার্বসের ভ্যালু, সঠিক (ও সটীক) উত্তর পাবেন। আজই গতর নাড়ানো প্র্যাকটিশ করুন। চাষবাস করার দরকার না থাকলে মাঠে গিয়ে দৌড়ান। বল পেটান। ঘুড়ি ওড়ান। কাটা ঘুড়ির পেছনে দৌড়ান। নিজের পেছনে কুকুর লেলিয়ে দিন। কিছু একটা করুন।
ক্রমাগত ফাইবার ফাইবার করবেন না। ফাইবার হচ্ছে সেই জিনিস যার ফুড ভ্যালু নেই। ওটা জাস্ট মলত্যাগের সুবিধার জন্য। সেটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ নয়। সারাদিন গেদে ফাইবার খেতে যাবেন না।
ব্যালান্স ইজ দ্য কী! কার্বোহাইড্রেট ইনক্লুডিং ফাইবার, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিনস, মিনারেলস, জল, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টস – সব খেতে হবে। এটা ভালো, ওটা খারাপ, এইসব নিটপিটানি ছাড়ুন। অল্প-স্বল্প সব খান।
সুপারফুড বলে কিস্যু নেই, সব চরম ধাপ্পা। অর্গানিকও প্রায় তাই। আপনার ব্যাঙ্ক-ব্যালান্স লুটে নেওয়ার ফন্দি। শুধু ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের পেছনে ছুটবেন তো রোগবালাইও আপনার পেছনে ছুটবে। কিটো-ডায়েট ফায়েট হইতে সাবধান।
যা জুটবে, সোনামুখ করে খেয়ে নেবেন। ছুটবেন। হাঁটবেন। খেলাধূলা করবেন। আকাশ-জল-গাছপালা-মানুষজন-জীবজন্তু দেখবেন। মাঝেমধ্যে ঠান্ডা জলে চান করবেন।
এতে কী হবে? মহাকুম্ভস্নানের চাইতেও বেশি পুণ্য হবে। লোকে কুম্ভে যায় কেন? এইগুলো করতেই। এ ছাড়া আর জীবনে কী আছে?
[সংগৃহীত]