10/04/2024
It's World Homoeopathic Day on April 10, birthday of the founder of Homoeopathy - Dr. Samuel Hahnemann
জয়তু হ্যানিম্যান........
চিকিৎসা বিজ্ঞানি মহাত্মা হ্যানিম্যানের ২৬৯ তম জন্মদিনে আমি আমার বিনিত শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন করিলাম। এই দিনটিকে বিশ্ব হোমিওপ্যাথি দিবস হিসেবে বিশ্বব্যাপী পালন করা হয়।
(World Homoeopathy Day is observed every year on April 10 to acknowledge the contribution and importance of homoeopathy to the world of medicine.
The day is celebrated every year on the occasion of the birthday of German physician Dr Christian Friedrich Samuel Hahnemann. This year, April 10 marks the 267th birth anniversary of Dr Christian Friedrich Samuel Hahnemann.)....................................................
ক্রিস্টিয়ান ফ্রিডরিখ স্যামুয়েল হ্যানিম্যান (জার্মান: [ˈhaːnəman]; ১০ এপ্রিল ১৭৫৫ - ২ জুলাই ১৮৪৩) জার্মানির একজন বিখ্যাত চিকিৎসক ছিলেন, তিনি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার আবিষ্কারক।
হ্যানিম্যান ১৮০৫ সালে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা চালু করেন। ১৮১০ সালে চিকিৎসা নিয়মাবলী সংক্রান্ত গ্রন্থ অর্গানন অব রেসনাল হেলিং আর্ট (Organon der rationellen Heilkunde) জার্মানি ভাষায় প্রকাশ করেন
জামুয়্যেল হ্যানিম্যান (জার্মান উচ্চারণ) জার্মানির সাক্সনী রাজ্যের ড্রেসড্রেন শহরের নিকটে মিশেনে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ক্রিশ্চিয়ান গটফ্রিড হ্যানিম্যান (Christian Gottfried Hahnemann) চীনামাটির পাত্রের জন্য বিখ্যাত শহর মিশেন এ একজন চীনামাটির পাত্রের ডিজাইনার ও পেইন্টার ছিলেন। মাতা- জোহানা ক্রিশ্চিয়ানা (Johonna Christiana)
স্যামুয়েল হ্যানিম্যান এর বাল্যশিক্ষা ও লেখাপড়ায় হাতে খড়ি হয় বাবা-মায়ের কাছ থেকে। ১৭৬৭ সালের ২০ জুলাই ১২ বছর ২ মাস ১০ দিন বয়সে তাকে মিসেনের টাউন স্কুলে ভর্তি করা হয়। অতঃপর তিনি ১৭৭৪ সালের ২০ নভেম্বর ১৯ বছর বয়সে ফার্স্টেন অ্যাডল্যান্ডে স্কুল সেন্ট আফ্রা স্কুল তে ভর্তি হন।
এখানে তিনি হিপোক্র্যাটিসের লেখার সাথে পরিচিত হওয়ার পাশাপাশি ল্যাটিন, গ্রীক ও হিব্রু ভাষা এবং ইতিহাস, পদার্থবিদ্যা ও উদ্ভিদবিদ্যা শিক্ষা করেন। চিকিৎসা বিদ্যা ছিল তার প্রিয় বিষয়। ১৭৭৫ সনে বিশ বছর বয়সে তিনি লিপজিগ বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হন। কিন্তু তিনি এ প্রতিষ্ঠানের অব্যবস্থাপনা ও কম সুযোগ সুবিধার জন্য অস্বস্তি বোধ করেন। মেডিসিন শিক্ষার্থীদের জন্য লিপজিগ না ছিল ক্লিনিক, না ছিল হাসপাতাল।
হ্যানিম্যান লিপজিগ এ ঔষধ নিয়ে দুই বছর পড়াশোনা করেন। তার আয় কম থাকার কারণে তিনি অর্থের বিনিময়ে ইংরেজি হতে বই অনুবাদ এবং ধনী গ্রীকদেরকে ফ্রেঞ্চ ভাষা শিখানোর কাজ শুরু করেন। এভাবেই হ্যানিম্যান এর নিয়মিত ছাত্রজীবনের ইতি ঘটে।
পরবর্তীতে ১৭৭৭ সালে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনার লিওপোল্ডস্টট জেলার ব্রাদার্স অব মার্সি হাসপাতালে চিকিৎসা বিদ্যা শিখতে আসেন। এখানে তিনি হিপোক্রিটাস , গ্যালেন ও স্টোয়ার্কের লেখাগুলিা সম্পর্কে ভালভাবে জানতে পারেন। এছাড়াও প্রখ্যাত চিকিৎসক জে ভন কোয়ারিনের প্রত্যক্ষ সহানুভূতি লাভ করে তার কাছে হাতে কলমে রোগী দেখার শিক্ষা পান।
এ হাসপাতালে নয় মাস থাকার পর ছাত্রাবাস হতে হ্যানিম্যানের অর্থ চুরি যাবার ফলে ও দারিদ্রতার কারণে তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। তখন প্রফেসর জে ভন কোয়ারিনের সহযোগিতায় তিনি ট্রানসেলভ্যানিয়ার গভর্নর ব্যারণ এস ভন ব্রউঁকেনথল এর সাথে হার্মানস্ট্যাটে চলে যান। এখানে তিনি গভর্নরের মুদ্রা ও চিত্রকর্মের সংগ্রহশালার তত্ত্বাবধায়ক, লাইব্রেরিয়ান ও পারিবারিক চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেন। একই সাথে হাতে কলমে বাইরের রোগী দেখার ও ব্যাপক পড়াশুনার সুযোগ পান।
এরপর আবার ১ বছর ৯ মাস পরে ১৭৭৯ সালে এরল্যাঞ্জেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা শুরু করেন। এরপর আবার ১ বছর ৯ মাস পরে ১৭৭৯ সালে এরল্যাঞ্জেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা শুরু করেন। এখানে তিনি হেফ্রাথ স্কেবারের কাছে এসে উদ্ভিদবিদ্যায় পারদর্শী হন এবং ১৭৭৯ সালের ১০ ই আগস্ট চিকিৎসাবিদ্যায় ডক্টরেট অব মেডিসিন বা এম.ডি ডিগ্রী লাভ করেন। এ ডিগ্রী লাভের জন্য হ্যানিম্যান “ আপেক্ষিক রোগের কারণ ও এর চিকিৎসা” (Conspectus adfectuum spasmodicorum aetiologicus et therapeuticus) বিষয়ে ২০ পৃষ্ঠা ব্যাপী একখানা ছাপানো গবেষণাপত্র পেশ করেছিলেন।
স্যামুয়েল হ্যানিম্যান ২২ বছর বয়সে ১১টি ভাষায় সুপন্ডিত হন,
তিনি একজন নামকরা অনুবাদক ছিলেন। রসায়নবিদ হিসেবে হ্যানিম্যানের সুখ্যাতি ছিল। তিনি সর্ব প্রথম পারদ এর শক্তিকরণ (Dynamization) ও ব্যবহার পদ্ধতি আবিষ্কার করেন| হ্যানিম্যান তার পূর্বের আড়াই হাজার বছরের চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাস অধ্যয়ণ ও পর্যালোচনা করেন।
তিনি ১৭৭৮-১৭৭৯ সাল পর্যন্ত ছাত্র অবস্থাতেই ট্রানসেলভেনিয়ার গভর্নরের পারিবারিক চিকিৎসক ছিলেন। এছাড়া এসময় বাইরের রোগীও দেখতেন। কিন্তু এম.ডি ডিগ্রীধারী চিকিৎসক হিসেবে ১৭৮১ সালে তাম্রখনি অঞ্চল হিসেবে খ্যাত ম্যান্সফিল্ড রাজ্যের হেটস্টেড শহরে সর্বপ্রথম চিকিৎসা পেশা শুরু করেন।
১৭৮১ সালের শেষ দিকে তিনি ম্যাগডিবার্গের নিকটবর্তী গোমেরন এ জেলা মেডিকেল অফিসার নিযুক্ত হন। এসময় তিনি প্রচলিত অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসার কুফল ও অসারতা উপলব্ধি করে তার বিভিন্ন প্রবন্ধ ও বইতে এ বিষয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু করেন।
হোমিওপ্যাথি আবিষ্কার ও চিকিৎসক সম্পাদনা...............................
হ্যানিম্যান তার সময়ের প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি বিরূপ ছিলেন এবং ঐ চিকিৎসার উদ্দেশ্য তাকে ক্ষতবিক্ষত করে দিচ্ছিল। তিনি দাবি করলেন যে তাকে যে ঔষধ সম্পর্কে শেখানো হয়েছে তা রোগীর ভালর চেয়ে বেশি ক্ষতিকর।
“এই সকল অজানা চিকিৎসা পদ্ধতি দ্বারা আমার রোগভোগকারী ভাইদেরকে চিকিৎসা করতে আমার বিবেক আমাকে সহজেই অনুমোদন দেয় না। চিন্তাধারা এমনদিকে যাচ্ছিল যেন আমি একজন অনিষ্টকারী খুনি অথবা মানুষের অমঙ্গলসাধক, সুতরাং আমি আমার বিয়ের প্রথম বছরেই এই ভয়ানক চিকিৎসা পদ্ধতি ছেড়ে দেই এবং নিজেকে রসায়নশাস্ত্র ও অনুবাদকের কাজে নিয়োজিত করি”
১৭৮৪ সালের দিকে চিকিৎসা পেশা ছেড়ে দেবার পর হ্যানিম্যান লেখনী ও অনুবাদকের কাজ করে কষ্টেসৃষ্টে তার জীবন নির্বাহ এবং পাশাপাশি বিভিন্ন ঔষধে বর্ণিত চিকিৎসাগত অসঙ্গতি বের করার কাজও করেন।
উইলিয়াম কুলেন এর “এ ট্রিয়েট্রাইজ অন মেটেরিয়া মেডিকা” (A Treatise on the Materia Medica) বইটি অনুবাদ করার সময় হ্যানিম্যান পেরুভিয়ান বার্ক থেকে তৈরী ম্যালেরিয়া (malaria) জ্বরের জন্য “সিঙ্কোনা” (cinchona) নামক গাছের ছালের কার্যকারিতা দেখতে পান। হ্যানিম্যান বিশ্বাস করলেন যে ম্যালেরিয়া জ্বরে সিঙ্কোনা’র মত অন্যান্য সহায়ক উপাদান (astringent substances) ততটা কার্যকরী নয় এবং তাই তিনি “সিঙ্কোনা” (cinchona) গাছের বাকল এর কার্যকারীতা নিজদেহে পরীক্ষা করা শুরু করলেন, দেখলেন যে এটা ম্যালেরিয়ার মত তার দেহে কম্পজ্বর উৎপন্ন করছে এবং এটা যে কোন সুস্থ দেহেই করতে সক্ষম। এ বিষয়টি তাকে একটি মৌলিক নীতির দিকে ধাবিত করে “ যা একজন সুস্থ ব্যক্তির উপর প্রয়োগের ফলে বিভিন্ন লক্ষণ সমষ্টির উৎপন্ন করতে পারে, তা একই রকম লক্ষন সমষ্টি সমৃদ্ধ অসুস্থ দেহে প্রয়োগ করলে নিরাময় করতে সক্ষম” এটাই “লাইক কিউর লাইক” (like cures like) যা একটি নতুন ধারার চিকিৎসা পদ্ধতির প্রচেষ্টা এবং তিনি এর নাম দেন হোমিওপ্যাথি।
১৮০৭ সালে হুফেলান্ড (Hufeland)[২৭] জার্নাল এ প্রকাশিত ইন্ডিকেশনস অব দ্যা হোমিওপ্যাথিক ইমপ্লয়মেন্ট অব মেডিসিনেস ইন অর্ডিনারি প্র্যাকটিস (Indications of the Homeopathic Employment of Medicines in Ordinary Practice) নামে এক প্রবন্ধে প্রথম “ হোমিওপ্যাথি” (homeopathy) শব্দটি হ্যানিম্যান প্রথম ব্যবহার করেন।
"২৫০০ বছরের চিকিৎসা ইতিহাসে শুধুমাত্র আলব্রেচ ফন হেলারই বুঝতে পেরেছিলেন যে এটাই প্রাকৃতিক পদ্ধতি, অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং সঠিক ঔষধ প্রয়োগ পদ্ধতি যা মানুষের সঠিক স্বাস্থের উপর প্রভাব ফেলে এবং আমি তার পরবর্তী ব্যক্তি যে আবার এই প্রাকৃতিক পদ্ধতি চালু করলাম"।
হ্যানিম্যান পুরাতন চিকিৎসা পদ্ধতি অ্যালোপ্যাথিকে ওল্ড স্কুল এর চিকিৎসা পদ্ধতি বলে অভিহিত করতেন। তিনি ১৭৯২ সালে টুরিংগেন জংগলে জর্জেন্থল এর পাগলা গারদের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এখানে হ্যানিম্যান হ্যানোভার মন্ত্রী ক্লকেন ব্রিং এর বিষাদ উন্মাদ চিকিৎসা করেন। এ সময় তিনি রক্তমোক্ষণকারী চিকিৎসা ব্যবস্থা ও মানসিক রোগীর চিকিৎসার নির্যাতনমূলক পদ্ধতির তীব্র সমালোচনা করেন।
তিনি হোমিওপ্যাথির উন্নয়নে যে সকল পদ্ধতি প্রচলন করেন, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য- ১) পরীক্ষামূলক ও আরোগ্যকারী সদৃশবিধানে প্রাকৃতিক চিকিৎসা পদ্ধতি (সিমিলিয়া-সিমিলিবাস-কিউরেন্টার)[৩২], ২) সুস্থ মানব দেহে ঔষধ পরীক্ষা করে ঔষধের কার্যকরী ক্ষমতা নির্ধারণ, ৩) চিকিৎসা ক্ষেত্রে জীবনীশক্তি তত্ত্বের আবিষ্কার [৩০] , ৪) রোগ সংক্রমণ তত্ত্ব ও কলেরার কারণ প্রসংঙ্গে জীবাণুতত্ত্বের পূর্বাভাষ ৫) চির বা স্থায়ী রোগ তত্ত্ব, ৬) অপরাধ তত্ত্ব ও অপরাধ প্রবণতা, ৭) রোগীর পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা পদ্ধতি, ৮) মানসিক রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি ও নির্যাতনমূলক চিকিৎসার বিরোধিতা, ৯) ঔষধের শক্তিকরণ ও নতুন শক্তিকরণ পদ্ধতি (৫০ সহস্রতমিক পদ্ধতি), ১০) ঔষধকে শক্তিকৃত ও অবিমিশ্রিত অবস্থায় সূক্ষ্ম পরিবর্তিত মাত্রায় প্রয়োগ, ১১) পথ্যবিজ্ঞানে নির্দিষ্ট নিয়মনীতি- খাদ্যতত্ত্ব ও পথ্যাপথ্যেও প্রয়োজনীয়তা, ১২) স্বাস্থ্যতত্ত্ব ও নাগরিক স্বাস্থ্য - পাগলাগারদ, এতিমখানা ও জেলের স্বাস্থ্যবিধির দুর্দশা এবং ব্যয়াম সহ স্বাস্থ রক্ষার নিয়মাবলী, ১৩) সার্জারিতে ড্রাই ড্রেসিং ও অস্থি চাঁচন পদ্ধতি, ১৪) পারদকে দ্রবীভূত করা ও এর সূক্ষ্ম উগ্রতাবিহীন প্রস্তুতি ও সফল ব্যবহার, আর্সেনিকের ক্রিয়া প্রসংগ ও চিকিৎসা আইনে রাসায়নের অবদান, আলকোহলে ভেজাল নির্ধারণ পদ্ধতি, বিষের ব্যবহার ও সংরক্ষণ বিধি, ব্যবস্থাপত্রের বিধি, ভেষজের জলীয় অংশ নিষ্কাশন, বাষ্পীয় পাতন ও তরল মাধ্যমে ভেষজের নির্যাসের বাষ্পীয়ভবন, টাটকা গাছ থেকে আরক তৈরী, ইত্যাদি।
তিনি রোগ ও ঔষধের লাক্ষণিক উৎস আবিষ্কার করে চিকিৎসা বিজ্ঞানকে বৈজ্ঞানিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠা করেন|