
12/09/2025
স্বাস্থ্য বীমা নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য বীমা সংস্থা স্টার হেলথ এবং হাসপাতালের মধ্যে একটি গুরুতর সমস্যা তৈরি হয়েছে। এই সমস্যায় সাধারণ মানুষ, অর্থাৎ যারা স্টার হেলথ-এর গ্রাহক, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথকেয়ার প্রোভাইডার্স ইন্ডিয়া (AHPI), যা দেশের ২০,০০০ এরও বেশি হাসপাতালকে প্রতিনিধিত্ব করে, স্টার হেলথ-এর বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ তুলেছে।
মূল সমস্যা কী?
1. স্বাস্থ্যসেবার ক্রমবর্ধমান খরচের সাথে তাল মিলিয়ে ট্যারিফ বা মূল্যতালিকা সংশোধন না করা।
2. বিদ্যমান ট্যারিফ কমানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করা।
3. অনুমোদিত বিল (ক্লেম) থেকে টাকা কেটে নেওয়া।
4. চূড়ান্ত অনুমোদনের পরেও বিল প্রত্যাখ্যান করা।
5. এবং হঠাৎ করে ক্যাশলেস পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া।
টাকা-পয়সা সংক্রান্ত বিরোধ: হাসপাতালগুলোর অভিযোগ, স্টার হেলথ তাদের প্রাপ্য টাকা সময়মতো মেটাচ্ছে না এবং তাদের চিকিৎসার খরচের জন্য যে পরিমাণ টাকা দিচ্ছে, তা বর্তমান বাজার মূল্যের তুলনায় অনেক কম। এই দামগুলো বহু বছর ধরে বাড়ানো হয়নি, অথচ চিকিৎসার খরচ, যেমন - ওষুধপত্র, সরঞ্জাম এবং কর্মীদের বেতন ইত্যাদি প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
ক্যাশলেস সুবিধা বন্ধের হুমকি: এই সমস্যার কারণে AHPI সতর্ক করে দিয়েছে যে তারা স্টার হেলথ-এর পলিসি হোল্ডারদের জন্য ক্যাশলেস পরিষেবা বন্ধ করে দিতে পারে। যদি এমনটা হয়, তাহলে গ্রাহকদের চিকিৎসার খরচ প্রথমে নিজেদের পকেট থেকে দিতে হবে এবং পরে বীমা সংস্থার কাছ থেকে সেই টাকা ফেরত পেতে হবে। এই প্রক্রিয়াটি বেশ ঝামেলার এবং সময়সাপেক্ষ।
রোগীদের দুর্ভোগ: এই বিরোধের ফলে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়বেন রোগীরা। কারণ জরুরি অবস্থায় নগদ টাকা জোগাড় করা কঠিন হতে পারে এবং ক্যাশলেস সুবিধা না থাকলে চিকিৎসা শুরু করতে দেরি হতে পারে।
সাধারণ মানুষের জন্য এর অর্থ কী?
সচেতন থাকুন: যদি আপনার স্টার হেলথ-এর পলিসি থাকে, তাহলে আপনাকে সচেতন থাকতে হবে। হাসপাতাল এবং বীমা সংস্থার মধ্যে কী আলোচনা চলছে, তা নজরে রাখুন।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা: ভবিষ্যতে, যদি এই ধরনের সমস্যা আবার দেখা যায়, তাহলে আপনার কাছে কিছু নগদ টাকা প্রস্তুত রাখা জরুরি।
সঠিক হাসপাতাল বেছে নিন: হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগে জেনে নিন, সেই হাসপাতালটি বীমা সংস্থার সাথে যুক্ত আছে কিনা এবং ক্যাশলেস পরিষেবা চালু আছে কিনা।
এই পরিস্থিতিতে, বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা IRDAI-এর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাদের উচিত উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসা এবং এমন একটি সমাধান বের করা, যা সাধারণ মানুষের স্বার্থ রক্ষা করে। একই সাথে, হাসপাতাল এবং বীমা সংস্থা উভয়েরই উচিত, রোগীদের দুর্ভোগের কথা মাথায় রেখে দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করা।