02/02/2024
ঔষধঃ ওপিয়াম
লক্ষণঃ
ওপিয়ামের অনেক লক্ষণ নাক্সের সাথে মিল
সকাল বেলা মাথা ব্যাথা, সকালে ঘুম থেকে উঠতে চায় না,
নেশা ও লাম্পট্য করার পর তার পেটে সমস্যা গ্যাষ্টিক আলচারে ভোগে।
সাধারণ যেখানে পেটে অবসট্রাকশন হয় নাডিভুডি/ভাউয়েলে সে ক্ষেত্রে ওপিয়াম চিন্তা করতে পারি ।
এ ঔষধ বেশি ব্যবহার হয় অপারেশনের পর যদি পেটের ভিতরে পক্ষাঘাত হয় তখন বেশি ব্যবহুত হয়।
লিভার থেকে পিত্ত বা বাইল তৈরী হয়ে তা ডিউডেনামের মাধ্যমে খাদ্যে মিশে। কিন্তু ওপিয়ামের রোগীর খাদ্য ডিউডেনাম দিয়ে নিচে না নেমে উপরের দিকে উঠে পেটে চলে যায়, যার ফলে তার দুর্গন্ধ যুক্ত তিতা বমি হয়, পেট ফুলে থাকে। এ ক্ষেত্রে ওপিয়াম খুব ভাল কাজ করে।
নাক্সের ক্রনিক হিসেবে ওপিয়াম ব্যাবহুত হয়।
ওপিয়াম থেকে বিভিন্ন ধরনের ঔষধ তৈরী হয় যা পেইন কিলার হিসেবে ব্যবহুত হয়।মরফিন তন্মধ্যে একটি। অপারেশন পূর্বে ওপিয়াম ব্যবহার করলে পেটের বিভিন্ন অন্ত্রে প্যারালাইসিস দেখা দেয়।
শিশুদের intussusception বা অন্ত্রের এক অংশ অন্য অংশের মধ্যে ঢুকে যায় যার ফলে ব্লকেজ হয়, সে ক্ষেত্রে ওপিয়াম ভাল কাজ করে। ( লক্ষণ পেইন হয় , পেট ফাফা থাকে, বমি হয়, তখন হাঁটু টেনে বুকে কাছে নিয়ে এসে কান্নাকাটি করে, পায়খানার সাথে সামান্য পরিমান রক্ত মিশ্রিত মিউকাস হয়, কখনো রক্ত বের হয়।তারপরে বমি করে। পেটের মধ্যে চাকা হয়ে থাকে, পাতলা পায়খানা হয়ে রোগী দুর্বল হয়ে যায়।
(সাবধানতাঃ ভাওয়েল ছিদ্র হয়, ঐ খানে টিসু পচন ধরে ( তাই রোগীকে দীর্ঘ সময় না ধরে রেখে বরং কয়েক মাত্রা উপিয়াম দিয়ে উন্নতি না দেখলে অপারেশনের জন্য রেপার করা উচিত। উন্নতি দেখলে ওপিয়াম চালিয়ে যেতে হবে।(- সাধারণত তিন বছরের পূর্বে এ সমস্যা দেখা দেয়।
Hiatus hernia স্টমাক ফুলে যায় , umbilical hernia নাভির ভিতর অন্ত্র ঢুকে ফুলে যায়,
Inguinal hernia, femoral hernia, incisional hernia, epigastric hernia, hiatal hernia.
ফিমোরাল হার্নিয়া টা সাধারণত উরুর উপরের অংশে হয়ে থাকে
আর আম্বিলিকাল টা নাভি প্রদেশে।
*ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া: এই ধরনের হার্নিয়া উদর ও উরুর সংযোগস্থলে দেখা যায়।তখন ওই স্থানটি ফোলা মনে হয়।
*ইঙ্গুইনো-স্ক্রোটাল:- ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া অবস্থায় চিকিৎসার ব্যবস্থা না নিলে ইঙ্গুইনো-স্ক্রোটাল হার্নিয়া দেখা দেয়।এই হার্নিয়া অন্ডথলিতে হয়ে থাকে।মুলত ইঙ্গুইনাল হার্নিয়ার ফলে অন্ত্রের অংশবিশেষ নামতে নামতে অন্ডথলিতে চলে আসে এবং জায়গাটি ফুলে যায়।
*আম্বিলিকাল হার্নিয়া:- এই হার্নিয়া নাভির পাশে হয়ে থাকে। এতে নাভির একপাশ বা চারপাশ ফুলে যায়।
*ফিমোরাল হার্নিয়া:- এটি হলে উরুরু ভেতরের দিকটা ফোলা মনে হয়।এটি মুলত নারীদের হয়ে থাকে।
*ইনসিসনাল হার্নিয়া:- অপারেশনের ফলে শরীরের অঙ্গগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে।আর উরুতে অপারেশান হলে ,দুর্বল উরুতে এক ধরনের হার্নিয়া দেখা যায়,এটিই ইনসিসনাল হার্নিয়া ।
নাডি পেচিয়ে যাওয়ারে বলে- volvulus) ( আম্বলিকাল কর্ড হলো মাতৃগর্ভে শিশু অন্ত্রে পেছিয়ে যায় সেই অন্ত্র)
** অবিরাম বমি ভাব , পেট খালি খালি ভাব, ক্ষুধা রুচি না থাকা, পিত্ত মিশ্রিত তরল বমি করে।
** ওপিয়ামের রোগীদের তিব্র পানি পিপাসা থাকে। কোনভাবেই পিপাসা যায়না।জিহ্বা শুকিয়ে থাকে।
** ঘুম ঘুম ভাব, চোখ অর্ধ নির্মিত থাকে। ওপিয়ামের রোগী ঘুমাইলে তার রোগ আরো বেডে যায়, মাংস গুলো টুইষ্টিং হতে থাকে, ঘুম থেকে উঠলে তীব্র মাথা ব্যাথা থাকে।
** পায়খানা খুব কষা থাকে।
** রাতের বেলা উদ্বিগ্ন থাকে, রাতে ভয়ানক কিছু সে দেখতে পায় ডিলুশনে ভুগে।রাতে ভয় পেলে তখন চোখ বড় হয়ে যায়।
** রোগী জাগ্রত/রেস্টিং অবস্থায় থাকলে তার চেহারা ক্লান্ত থাকে, রোগ আক্রান্ত হলে চেহারা নিলাভ হয়ে যায়, রক্তিম দেখায়, ঘাম হয়, পেট ব্যাথা হলে তখন চোখ সংকুচিত হয়ে যায়। নিদ্রালুতা।
** ওপিয়ামের রোগীরা ব্যাথার সময় মনে করে- পেটের কোথাও বন্ধ হয়ে আছে বা obstruction সংকুচিত হয়ে আছে, ডাক্তারের সেই অনুভুতির কথা বলে।
** সাধারণত রোগী গরম কাতর, গরম সহ্য করতে পারেনা, কিন্তু পেটের ব্যাথায় গরম ভাল লাগে। ওপিয়ামের রোগীর মাথা ঘাড় গরম থাকে কিন্তু হাত পা ঠান্ডা থাকে।
প্রলাপের সময় সে বিড়বিড় করে, হিংস্র হয়ে ওঠে,তার মুখমণ্ডল লাল হয়, চোখগুলি চকচক করে ( glistening) এবং প্রচণ্ড শারীরিক সক্রিয়তা দেখা যায়।
সে দিবারাত্র প্রলাপ বকে।সে ঘোষণা করে যে বিছানায় একা নয়।কোনো প্রশ্ন করা হলে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে উত্তর দেয় কিন্তু পুনরায় প্রলাপ বকতে আরম্ভ করে।রোগী উন্মত্ত, সে পালাতে চায়।সে বলে যে তার বিছানার ওপর একদল অশ্বারোহী সেনা ( regiment of horsemen) রয়েছে এবং সে ভয় পাচ্ছে যে তারা বুঝি তাকে মাড়িয়ে দেবে।তাকে যদি বলা হয় ঘোড়ারা খুবই সতর্ক প্রাণী তবে সে বলে যে ঘোড়াদের পিছনে মালবাহী গাড়িগুলি ( wagon) আসছে সেগুলি তাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেবে।বিশেষত নিউমোনিয়ার সময় এগুলি দেখতে পাওয়া যায়।
রোগীর মধ্যে মদ্যপান জনিত উন্মাদনা ( Mania a potu) দেখতে পাওয়া যায়।ভোঁতা ইন্দ্রিয় ( dulness of senses), অসাড়তার সঙ্গে নাক ডাকে।রোগী যে কোনো কৃশকায় ব্যক্তিকে মনে করে যেন কোনো পশু তার দিকে এগিয়ে আসছে।সে ভাবে লোকজন তার ক্ষতি করতে চায়, মেরে ফেলতে চায়।রোগী কোনো সুরক্ষিত জায়গায় গুটিয়ে বসে থাকে (creeping) অথবা বিছানা থেকে লাফ দিয়ে উঠে পড়ে।অপরাধী বা পুরানো পাপীদের( "old sinners") দীর্ঘ ও অতিরিক্ত জীবন তাদের গঠনকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেয়।যাদের মধ্যে বারংবার এই রোগের প্রকোপ দেখা যায়, এমনকি সামান্য পরিমাণ মদ্যও রোগীকে আবার প্রলাপের পর্যায়ে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারে।রোগীর মুখে সর্বদাই একটা ভীতি ও আশঙ্কা বিরাজ করে।এর ঠিক আগেই রোগী মৃগীরোগে আক্রান্ত হয়।রোগীরা কল্পনায় ভয়ঙ্কর জিনিসপত্র দেখে এবং প্রচণ্ড ভয় পায়।তারা নিজেদের খুনি ও অপরাধী মনে করে যাদেরকে ফাঁসিতে চড়ানো হবে।তাই তারা পালাতে চায়।তারা একদৃষ্টে চেয়ে থাকে।তাদের মুখের এবং মুখমণ্ডলের পেশিতে টান ধরে।চোয়াল আটকে যায়।রোগীর মধ্যে কম্পন দেখা যায়।
ভয়ঙ্কর স্বপ্নের সঙ্গে উদ্ভট ( fantastical) পাগলামি দেখা যায়।সে বিভ্রান্তভাবে কথা বলে।অভদ্র( indicent) আচরণ করে।হাসিখুশি থাকে এবং নিজেকে প্রচণ্ড শক্তিশালী মনে করে।মৃত্যুকে ঘৃণা করে।উশৃঙ্খল স্ফূর্তির ( hilarity) সঙ্গে ভাঁড়ামি করে ( buffoonery)।পরবর্তীতে হিংস্র রাগ বা কাঁদুনে দুঃখ দেখা যায়।রোগীর মধ্যে অস্থিরতা ( instability) এবং জড় ইচ্ছেশক্তি পরিলক্ষিত হয়।আনন্দে এবং দুঃখে উদাসীনতা দেখা যায়।সম্পূর্ণ স্মৃতিশক্তি লোপ( dementia) , এমনকি নিজের আত্মীয় স্বজনকেও চিনতে পারে না।প্রচণ্ড দুর্বলতা, অসাড়তা( Stupor) , কখনো কখনো ঘাম হয় এবং চর্মে উদ্ভেদ দেখা যায়।মূত্র ত্যাগের পরিমাণ কমতে থাকে।এই সময় মস্তিষ্ক বিকৃতি দেখা যায়।