
14/07/2025
যোগ — এটি শুধু একটি শরীরচর্চা নয়, এটি একটি প্রাচীন ভারতীয় জ্ঞানতত্ত্ব, যার শিকড় গভীরভাবে প্রোথিত আমাদের সংস্কৃতি, দর্শন এবং আধ্যাত্মিকতায়।
যোগ শব্দটির উৎপত্তি "যুজ্" ধাতু থেকে, যার অর্থ 'সংযোগ' বা 'একত্র হওয়া'। এটি শরীর, মন ও আত্মার মিলনের এক পদ্ধতি। প্রাচীন ঋষিরা বিশ্বাস করতেন যে, যোগের মাধ্যমে মানুষ নিজেকে পরম সত্য বা ব্রহ্মের সাথে যুক্ত করতে পারে।
যোগের ইতিহাস হাজার হাজার বছর পুরনো। ঋগ্বেদ, উপনিষদ, গীতা-তে যোগের উল্লেখ পাওয়া যায়। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রভাবশালী গ্রন্থ হল **"যোগসূত্র"**, যা প্রণীত হয়েছিলেন মহর্ষি পতঞ্জলি দ্বারা। পতঞ্জলি "অষ্টাঙ্গ যোগ" বা আটটি অঙ্গবিশিষ্ট যোগপথের কথা বলেন — যম, নিয়ম, আসন, প্রণায়াম, প্রত্যাহার, ধারনা, ধ্যান ও সমাধি।
পরবর্তী কালে হঠযোগ জনপ্রিয়তা পায়, যেখানে মূলত শারীরিক আসন এবং শ্বাসনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে শরীর ও মনকে প্রস্তুত করা হয় ধ্যান ও আধ্যাত্মিক চেতনার জন্য।
বিশ্বজুড়ে যোগ জনপ্রিয়তা পায় বিশ শতকে, বিশেষত স্বামী বিবেকানন্দ, পরমহংস যোগানন্দ, বি.কে.এস. আইয়েঙ্গার, এবং অন্যান্য গুরুদের প্রচেষ্টায়। ২০১৫ সাল থেকে, ২১শে জুন আন্তর্জাতিক যোগ দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে, যা ভারতের প্রস্তাবে জাতিসংঘ স্বীকৃতি দিয়েছে।
আজকের দিনে যোগ শুধুই আধ্যাত্মিক চর্চা নয়, এটি স্বাস্থ্য ও সুস্থ জীবনের অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে।
#যোগাসন #সুস্থতা