06/05/2025
যোগ সম্পর্কে আমরা কি জানি ?
ভারতীয় সভ্যতায় 'যোগ' শব্দটি প্রাচীন।
যোগ এর সৃষ্টিকাল ও সৃষ্টিকর্তা সম্বন্ধে সঠিকভাবে কিছু জানা যায় না। প্রাচীন শাস্ত্রকারগণের মতে শিব যোগ এর সৃষ্টিকর্তা। তাই শিব কে আদি যোগী বলাহয়।
আজ থেকে আনুমানিক ৪০০০ বছর পূর্বে রচিত ঋক্ বেদ-এ যোগ-এর উল্লেখ পাওয়া যায়।
সম্ভবতঃ তারও অনেক আগে থেকে যোগ এর ধারনা প্রচলিত।
'যোগ ' ছিল গুপ্তবিদ্যা ও গুরুমুখী বিদ্যা। গুরু কেবলমাত্র উপযুক্ত শিষ্যকেই যোগ শিক্ষা দিতেন।
সাধনায় সিদ্ধিলাভ এবং আত্মিক উন্নতিই ছিল যোগ চর্চার মূল উদ্দেশ্য।
প্রায় ২৫০০ বছর আগে মহর্ষি পতঞ্জলি, যোগ এর বিভিন্ন ধারাকে সুসংহত করে রচনা করেন যোগসূত্র, যা 'পাতঞ্জল যোগ দর্শন ' নামে পরিচিত।
যোগ দর্শন যোগের শ্রেষ্ঠ প্রামাণিক গ্রন্থ মানা হয়।
এখানে যোগ সম্পর্কে আলোচনার সাথে সাথে মানব জীবনের আচার-আচরণগত বিভিন্ন দিক নিয়ে রয়েছে সুন্দর বিশ্লেষণ।
মহর্ষি পতঞ্জলিকে "যোগ-এর জনক" বলা হয়।
বিভিন্ন সময়ে যোগ-সাধক মুনি-ঋষিগণ রচিত 'হঠযোগ প্রদীপিকা', 'ঘেরণ্ড সংহিতা ', 'যোগ রহস্যম', 'শিব সংহিতা ' প্রভৃতি গ্ৰন্থ থেকে আসন, প্রাণায়াম, মুদ্রা, বন্ধ, ষটকর্ম প্রভৃতি সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়।
সংস্কৃত 'যুজ্' ধাতু থেকে 'যোগ' শব্দের উৎপত্তি। যার অর্থ যুক্ত করা ।
মনের সাথে শরীরের, চেতনার সাথে প্রকৃতির, জীবাত্মার সাথে পরমাত্মার মিলনই হলো যোগ।
মহর্ষি পতঞ্জলি ' যোগ' এর সংজ্ঞা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন -
'যোগশ্চিত্তবৃত্তিনিরোধঃ'
চিত্তের বৃত্তি নিরোধ করাই যোগ।
যোগ সেই প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আমাদের চিন্তা -ভাবনা, বিচার, অনুভব, কল্পনা, চাহিদা, ভয় প্রভৃতি মানসিক বৃত্তি বা কার্যাবলীর উপর নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব।
চিন্তাধারা ও কাজকর্মের মধ্যে সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে দেহ-মনকে এক সুরে বেঁধে জীবনকে সুন্দর ভাবে গড়ে তোলাই 'যোগ' ।
সূত্র: সুস্বাস্থ্য ও যোগব্যায়াম
( জয়ন্ত হোড় )