08/09/2022
সালফার ও সোরিনামের গুরুত্বপূর্ণ কিছু পার্থক্য।
সালফার ও সোরিনাম এই দুটি ওষুধে অনেক সাদৃশ্য রয়েছে। উভয়েরই অস্বাস্থ্যকর ত্বক, শরীরের চামড়ায় নানা প্রকার রোগ এবং দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব রয়েছে। কিন্তু এদের মধ্যে পার্থক্য অনেক। বুঝার সুবিধার্থে নিম্নে দেয়া হলো।
১। সালফার গরম কাতর। পক্ষান্তরে সোরিনাম প্রচন্ড শীতকাতর।
২। সোরিনামের চর্মরোগ সাধারণত মাথা থেকে পায়ের দিকে প্রসারিত হয়। পক্ষান্তরে সালফারের চর্ম রোগে এমন কোন অভিমুখ নেই।
৩। সোরিনামের স্রাবের দুর্গন্ধ সালফারের স্রাবের দুর্গন্ধের চেয়েও অনেক বেশি, গন্ধে বমি আসে।
৪। সালফারের তাপ ও জ্বালা আছে। সোরিনামের তাপ ও জ্বালা নেই বরং শীতল।
৫। সালফারের খিদে কম, পিপাসা বেশি। সোরিনাম সর্বদা ক্ষুধার্ত, খিদের চোটে রাতে ঘুম ভেঙ্গে যায় এবং তখন কিছু খেতে হয়।
৬। সালফার প্রয়োগে আশানুরূপ ফল না পেলে সোরিনাম প্রয়োগ করতে হয়। এ প্রসঙ্গে দুটি কথা বিশেষভাবে স্মরণ রাখতে হবে।
১। বর্তমান যুগে মানুষ ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য ও পরিছন্নতা নিয়ে বিশেষ সচেতন। প্রচারের বদৌলতে প্রসাধনী সামগ্রী এবং চাপা দেওয়া সামগ্রীর ব্যাপক ব্যবহারের ধরুন আজকাল অপরিচ্ছন্ন শরীর এবং নোংরা পোশাক পরিচ্ছন্নকর লোক খুব কম দেখা যায়। তারমানে এই নয় যে সালফার প্রয়োগের আর প্রয়োজনীয়তা নেই। এটা একটা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা।
বরং সালফারের প্রয়োজন আরও বেড়ে গেছে। যা ছিল বাইরে, চোখের সামনে তাকে ভেতরে চোখের আড়ালে চাপা দেওয়া হয়েছে। ভেতরে ভেতরে ধ্বংসলীলা বিনা বাধাই অগোচরে চলতে দেওয়া হয়। ফলে কঠিন কঠিন রোগ যথা এলার্জি, আর্থারাইটিস, সোরিয়াসিস, যক্ষা, ক্যান্সার, উন্মত্ততা এবং আত্মহত্যার প্রবণতা সহ নানাবিদ দৈহিক ও মানসিক রোগের সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। এমনকি সর্দি, কাশি, জ্বর, পরিপাকের গোলযোগ ইত্যাদি সাধারণ ধরনের রোগও সহজে সারতে চায় না।
২। ব্যক্তি জীবন ও সামাজিক জীবনে এই শৃঙ্খলাহীনতার কারণে সমাজে এক সুদূরপ্রসারী প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। মানবিক মূল্যবোধ, দুর্নীতি, নিষ্ঠুরতা, অপরাধমূলক হিংসাত্মক কার্যকলাপ, প্রতিহিংসা প্রবণতা সমাজ জীবনকে গ্রাস করে ফেলেছে। এই সুযোগে অন্য দুটি মায়াজম সিফিলিস ও সাইকোসিস ব্যক্তি জীবনে ঢুকে পড়েছে। আত্মকেন্দ্রিক মানুষ তার মা-বাবা স্ত্রী সন্তান ও প্রতিবেশী মানুষকে ভালোবাসে না। ব্যক্তি মানুষ ও সমাজ এক ভয়াবহ পরিণতির দিকে এগিয়ে চলেছে। এজন্য সালফারের মত ওষুধের প্রয়োজন আজকাল এত বেশি বেড়ে গেছে যা বলে শেষ করা যাবে না। সালফার শেখা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে যদি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক হিসেবে আমরা সমাজের নিকট আমাদের দায়িত্ব ও সামর্থ্য সম্বন্ধে সচেতন না হই।