01/07/2023
"ডাক্তারবাবু, আপনি ভগবান....."
না, এটা একদমই ভুল ধারণা। ডাক্তারবাবুরা মোটেই কেউ ভগবান নন। ডাক্তারবাবুরাও মানুষ। একেবারে আপনার আমার মতনই রক্ত-মাংসে গড়া মানুষ। তাদেরও আর পাঁচটা মানুষের মতন সখ-আহ্লাদ, পরিবার-পরিজন, খিদে-তেষ্টা, সুখ-অসুখ, ভুল-ভ্রান্তি, ওঠা-পড়া সবই থাকে। নশ্বর মানুষের মতনই জন্ম-মৃত্যু দুইই থাকে। ডাক্তারবাবুরা যদি ভগবান হতেন, তবে তাঁরা নিজের বাবা-মা, আত্মীয়-বন্ধু এমনকি নিজেরও ব্যাধি-জরা-মৃত্যু আটকে দিতে পারতেন। তাঁরা সব রোগ-ব্যাধি বা মৃত্যুকে সবসময় জয় করতে পারেন না, কারণ তাঁরা মানুষ। হ্যাঁ, বিশেষ ধরণের প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত একজন মানুষ। তিনি চিকিৎসাশাস্ত্রে প্রশিক্ষণ পেয়ে , চিকিৎসা পেশায় একজন পেশাদার হয়েছেন। চিকিৎসাশাস্ত্রে প্রায় ৩০ টির মতন ভিন্ন ভিন্ন শাখা আছে, যে যার মতন বিভিন্ন শাখায় পেশাদার হিসাবে কাজ করেন, পরিষেবা দেন। তাঁর প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান হয়তো বেশিরভাগ অসুখকেই সারিয়ে দিতে পারে, আবার অনেক অসুখকে সারাতে পারে না। পৃথিবীর কোনও পেশাদার মানুষই তার পেশায় ১০০% সাফল্য পান না, সাফল্যের শতাংশ হয়তো বেশিটাই, কিন্তু ব্যর্থতাও থাকে বেশ কিছু ক্ষেত্রে, সেটাই স্বাভাবিক। তাঁরও নশ্বর মানুষের মতন সীমাবদ্ধতা আছে, থাকতে বাধ্য। ঈশ্বর না ভেবে, নশ্বর ডাক্তারবাবুদের স্বাভাবিক সীমাবদ্ধতাকে মেনে নিতে শিখুন। ভগবানের স্থানে ভগবানই চিরকাল ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। ডাক্তারবাবুরাও তাঁদের নিজেদের বিপদে-আপদে সেই সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকেই স্মরণ করেন।
তাই আসুন, ১লা জুলাই, আজ এই চিকিৎসক দিবসে, সব চিকিৎসককেই নশ্বর মানুষ হিসেবে ভাবতে শিখি, মানুষ হিসেবে তাঁদের সীমাবদ্ধতাগুলিকে মেনে নিতে শিখি। তাঁদের স্বাভাবিক নশ্বর সীমাবদ্ধতাগুলিকে মেনে নিয়ে, তাঁদের প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞানকে যথাযথ সম্মান দিতে শিখি।
ডাক্তারবাবুরা মোটেই ভগবানের সম্মান চান না। তাঁরা চান না যে, তাঁদের সাফল্যগুলি নিয়ে মানুষ নাচানাচি করুক আর ব্যর্থতায় পিটিয়ে আধমরা করে দিক অথবা গায়ে বিষ্ঠা লেপন করুক।
সমাজের বিভিন্ন পেশার আরও পাঁচজন পেশাদার ব্যক্তি, যে সামাজিক নিরাপত্তা ও সম্মানের সঙ্গে তাঁদের পরিষেবা প্রদান করেন, ডাক্তারবাবুরাও শুধু সেইটুকুনই সমাজের কাছ থেকে আশা করেন, তার বেশি কিছু না। ঠুনকো প্রশংসা, হাততালি বা ভগবানের সঙ্গে তুলনা…..
এসব ডাক্তারবাবুরা কোনওটাই চান না, চান শুধু ন্যায্য পরিষেবা দেওয়ার সুষ্ঠু, পেশাদারী, সুস্থ মানসিকতা ও পরিবেশ।🙏🏻