Dr. Himadri Sekhar Bera, MD-Medicine

Dr. Himadri Sekhar Bera, MD-Medicine 'docere' - to teach

কলকাতার 'প্রিমিয়ার' মেডিক্যাল কলেজ এস এস কে এম - এ রোগীর আত্মীয়র মাথা ফাটিয়ে দিল দুষ্কৃতীরা। এই তো নিরাপত্তার অবস্থা।...
13/10/2024

কলকাতার 'প্রিমিয়ার' মেডিক্যাল কলেজ এস এস কে এম - এ রোগীর আত্মীয়র মাথা ফাটিয়ে দিল দুষ্কৃতীরা। এই তো নিরাপত্তার অবস্থা। হাসপাতালে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত না করলে, দুর্নীতি, ভয়ের সংস্কৃতির অবসান ঘটাতে না পারলে রোগী - চিকিৎসক কেউ সুরক্ষিত নয়। দ্বিতীয় একটা অভয়ার ঘটনা আটকাতে হলে এই অনাচার শেষ করতেই হবে আমাদের। রোগী, স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক, সাধারণ মানুষ - এ লড়াই আমাদের সবার লড়াই।

WBJDF - West Bengal Junior Doctors' Front

নাগরিক, রাষ্ট্র, আন্দোলনআমার ডেঙ্গু হয়েছিল। এখন অনেকটাই সুস্থ, খানিক দুর্বলতা আছে। গত ১০ দিন জেলা, ব্লক, পঞ্চায়েত - বি...
09/10/2024

নাগরিক, রাষ্ট্র, আন্দোলন

আমার ডেঙ্গু হয়েছিল। এখন অনেকটাই সুস্থ, খানিক দুর্বলতা আছে। গত ১০ দিন জেলা, ব্লক, পঞ্চায়েত - বিভিন্ন স্তর থেকে স্বাস্থ্যকর্মীরা ফোনে যোগাযোগ করে আমার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছেন, বাড়ি এসে দেখা করেছেন। আমাদের এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যের উদ্যোগে এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের সহায়তায় বাড়ির সামনের খানিকটা অংশে ঝোপঝাড় পরিস্কার করা হয়েছে। নাগরিকের স্বাস্থ্য, জনস্বাস্থ্য নিয়ে এই সদর্থক ভূমিকা, সদিচ্ছার জন্য প্রশাসনের ধন্যবাদ প্রাপ্য।

একইসাথে এই প্রশাসনের একটা অংশ চূড়ান্ত ভাবে জনবিরোধী কাজ করে চলেছে। এই প্রশাসন-পুলিশের একটা অংশ আর জি করে অভয়ার মৃত্যুর পর তথ্য প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছে, এদের ব্যর্থতার জন্য হাসপাতালে রোগী - চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নেই, এরাই প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে, কর্মক্ষেত্রে 'থ্রেট কালচার' চালায়, ভেজাল ওষুধের চক্র চালায়, অর্গান ট্রাফিকিং করে, হাসপাতালে হাসপাতালে দালাল রাজ চালায়, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের আক্রমণ করে, অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা করে, জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনিক আধিকারিক হয়ে মিথ্যা কথার ফুলঝুরি ছুটিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে, ন্যায্য দাবির আন্দোলনকারীদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। নাগরিক হিসেবে এই প্রশাসনিক ব্যর্থতার, ভয়ের সংস্কৃতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার দায়িত্বও আমাদের।

একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে আমাদের কোনও দায় নেই কোনও রাজনৈতিক রঙে নিজেদের রাঙিয়ে নেওয়ার। রাষ্ট্রের জনমুখী কাজের প্রশংসা যেমন করতে পারি, একইসাথে রাষ্ট্র যখন নাগরিকের ন্যূনতম নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়, লুম্পেন রাজের পৃষ্ঠপোষক হয় তখন আমাদের নাগরিকদেরই প্রতিবাদে, আন্দোলনে এগিয়ে আসতে হয়।

ভোটের দিন আঙুলে কালি লাগানোর মধ্যেই শুধু গণতন্ত্র সীমাবদ্ধ নয়; শাসক ভুল করলে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা, আন্দোলনের মাধ্যমে নিজেদের ন্যায্য দাবি ছিনিয়ে আনা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, একইসাথে দায়িত্বও। ক্ষমতালোভী শাসক শুধু চেয়ারের লড়াই বোঝে, আর তাই গণ আন্দোলন হলে ভয়ে দিশাহারা হয়ে পড়ে।

ধর্মতলায় আন্দোলন মঞ্চে অনশনকারীদের পাশে দাঁড়ান, সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রতিবাদ ছড়িয়ে দিন, পূজা মন্ডপে, অভয়া দেবীর কাছে বিচারের দাবি তুলুন - নিজের মত করে এই আন্দোলনে অংশ নিন, প্রতিবাদ করুন। অভয়ার বিচারের দাবিতে, হাসপাতালে রোগী-চিকিৎসকের নিরাপত্তার দাবিতে, ভয়ের সংস্কৃতির বিরুদ্ধে, হাসপাতালে সুষ্ঠু পরিসেবার দাবিতে শাসকের চোখরাঙানির উল্টোদিকে এই আন্দোলন আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, দায়িত্বও বটে।

03/03/2024

চরক-সুশ্রুতের আয়ুর্বেদের কোনও বিজ্ঞানভিত্তিক চর্চা বাবা রামদেবের মত ব্যবসায়ীরা করেন না। আয়ুর্বেদের নাম করে জাতীয়তাবাদ আর ঐতিহ্যের বুলি আউড়ে বিজ্ঞাপনী চটকে কিছু অকার্যকর/ক্ষতিকর পণ্য বিক্রি করেন আর রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখতে চান। প্রাকৃতিক মানেই উপকারী - এই ভ্রান্ত ধারণায় নিজের ক্ষতি করবেন না।

Bishan Basu র নীচের লেখাটি পড়ার অনুরোধ রইল।

গত শতাব্দীর শেষের দিক। আমরা তখন ছাত্র। লাইব্রেরিতে কিছু বিদেশি জার্নাল আসত - এক অগ্রজপ্রতিম তরুণ স্যারের সঙ্গে আমরা কয়েকজন যেতাম, গিয়ে জার্নাল পড়তাম। সেখানেই জেনেছিলাম, প্রথম বিশ্বের বেশ কিছু দেশে ‘হেভি মেটাল পয়জনিং’ - শরীরের ভেতরে বিভিন্ন অঙ্গে সোনা সীসা পারদ জাতীয় ভারি ধাতুর জমা হওয়া - উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। কারণ হিসেবে তাঁরা চিহ্নিত করেছিলেন ওষুধের দোকানে আলটপকা বিক্রি হওয়া কিছু ‘হার্বাল মেডিসিন’'-কে। উন্নত বিশ্বে ওষুধ বিক্রির ব্যাপারে বেশ কড়াকড়ি আছে, চাইলেই দোকানে গিয়ে যা-খুশি ওষুধ কিনে বসা যায় না - কিন্তু ‘হার্বাল মেডিসিন’-এর সমস্যা হলো, এগুলো সাধারণত তালিকাভুক্ত ওষুধের মতো করে বিক্রি হয় না, আর পাঁচটা ওষুধের মতো এগুলোর গুণগত মানের পরীক্ষানিরীক্ষার বন্দোবস্ত (কোয়ালিটি কন্ট্রোল) নেই এবং যে কেউ এসব ওষুধ ‘স্বাস্থ্যরক্ষা’'-র জন্য কিনে খেতে পারেন। পড়ে অবাক হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, বিলেতেই যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে এদেশে?

গত শতাব্দীর শেষের দিক থেকে এই শতাব্দীর প্রথম দশক অবধি, হিমালয়ের কোলে এক চিকিৎসা-আশ্রমে জনৈক সন্ন্যাসী-চিকিৎসক (রামদেব নন) মৃগীরোগের ‘অব্যর্থ ঔষধ’ বিক্রি করতেন। এই রাজ্যের বিভিন্ন পত্রপত্রিকার প্রথম পাতায় তার বিজ্ঞাপন বেরোতো। তিনি নাকি প্রথম ডোজ-টি রোগীকে স্বহস্তে খাইয়ে দেন - তারপর মাসছয়েকের ওষুধ রোগীর হাতে দিয়ে বাড়ি পাঠান। এর কিছুদিনের মধ্যেই আফিম-জাতীয় ওষুধের বেআইনি ব্যবসার অভিযোগে সে চিকিৎসা-আশ্রম বন্ধ হয়ে যায়, সন্ন্যাসী-চিকিৎসকের কী সাজা হয়েছিল, তা আর মনে নেই। কিন্তু এই ঘটনার পরোক্ষ অভিঘাত টের পেয়েছিলেন কলকাতার স্নায়ুরোগবিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। মৃগীরোগে ভুগতে থাকা অজস্র মানুষ আচমকা তাঁদের কাছে উপস্থিত হতে থাকলেন, যাঁদের অসুখ বাজারচলতি কোনও ওষুধেই সারে না। বলা বাহুল্য, এঁরা সকলেই এতদিন ধরে উপরিউক্ত আশ্রমের ওষুধ খেতেন। জনৈক দুঃসাহসী চিকিৎসক এক রোগীর সংগ্রহে থাকা কিছু ভেষজ বড়ি কলকাতার একটি বিশিষ্ট ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছিলেন - মৃগীরোগের সব ওষুধের রাসায়নিক নির্ণয় সেখানে হতো না, তবে যে পাঁচখানা ওষুধের পরীক্ষা হতো, তার সবক'টিই সেই বড়ি-তে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া গিয়েছিল - আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে দীক্ষিত চিকিৎসকরা অমন করে একইসঙ্গে চার-পাঁচখানা ওষুধ দিতে পারেন না, তাহলে পাঁচরকম দাবাইয়ে অভ্যস্ত মৃগীরোগ তাঁরা সারাতে পারবেন কোত্থেকে? ঘটনাটি কোনও সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়নি - সেই চিকিৎসকই জানাজানি করতে ভয় পেয়েছিলেন - আমি জেনেছি স্রেফ ব্যক্তিগত সূত্রে।

অতএব, বাবা রামদেব ও পতঞ্জলি-র উত্থানের বহু আগে থেকেই, এদেশে এবং বিদেশেও, আয়ুর্বেদিক ঔষধ তথা হার্বাল মেডিসিন একটি অনিয়ন্ত্রিত শিল্প। শিক্ষিত-অশিক্ষিত নির্বিশেষে - এবং প্রথাগত বিজ্ঞানশিক্ষার পরিমাণ নির্বিশেষেও - এদেশে তো বটেই, উন্নত দেশেও বিজ্ঞানমনস্কতার প্রসার খুব একটা ঘটেনি। এর কারণ বহুবিধ। বিজ্ঞানজগতের লোকজন বিজ্ঞান বিষয়ে সাধারণের বোধগম্য ভাষায় বলেন বা লেখেন না, ওদিকে বিজ্ঞানের খবর হিসেবে মিডিয়ায় যা প্রকাশিত হয় তার অধিকাংশই আদ্ধেক বুঝে লিখে ফেলা হাইপ বা গিমিক - বিজ্ঞান বিষয়ে আস্থা যেটুকু, তার মধ্যেও বিশ্বাস ও ভক্তিরই প্রাধান্য, বিজ্ঞানবোধ বা বিজ্ঞানমনস্কতা অনুপস্থিত। তদুপরি বিজ্ঞানকে আশ্রয় করে বহুজাতিক কোম্পানির বাণিজ্যের রমরমা ও চিকিৎসাক্ষেত্রে তার কদর্য প্রকাশ দেখে এমনকি বিজ্ঞানজগতের মানুষের মনেও সন্দেহ জাগতে বাধ্য। এরই বিপরীতে, যা কিছু প্রাকৃতিক - তা-ই সহজ ও স্বাভাবিক, সুতরাং ক্ষতিকারক প্রভাব হতে মুক্ত - শরীরের পক্ষে উপকারী, এমন বিশ্বাস। তাহলে যে সাপের বিষ বা বটুলিনিয়াম টক্সিন, দুইই সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক, অথচ প্রাণঘাতী, এ কেমন বিচার - এই সহজ প্রশ্ন কারও মনে জাগে না। একদিকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের উত্তরোত্তর জটিল হয়ে চলা, ক্রমশ দুর্মূল্য হয়ে ওঠা - তদুপরি তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও ক্ষতিকারক প্রভাব বিষয়ে উত্তরোত্তর উৎকণ্ঠা - আরেকদিকে ‘ন্যাচারাল হিলিং’ বিষয়ে বাড়াবাড়ি রকমের আস্থা - গ্রিন টি-র উপকারিতা বিষয়ে অত্যধিক প্রত্যাশা বা গ্রিন কফি খেয়ে রোগা হওয়ার আশা দিয়ে যার শুরু, হিমালয়া বা পতঞ্জলির ক্যাপসুল খেয়ে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে নীরোগ থাকার আকাঙ্ক্ষা তার থেকে খুব দূরে নয় - মিডিয়ায় প্রকাশিত অর্ধপাচিত দাবিসহ বিজ্ঞাপনের প্রভাবও অনস্বীকার্য - সব মিলিয়ে এদেশে (এবং বিদেশেও) 'প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে সারিয়ে তোলার' আশ্বাসযুক্ত আয়ুর্বেদের প্রসার ক্রমবর্ধমান। বলাই বাহুল্য, এর পেছনে প্রচারের আলো আছে, জটিল আর্থসামাজিক বাস্তবতা ও রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা আছে, কিন্তু বিজ্ঞানের প্রয়োগ নেই।

এমতাবস্থায় বিভিন্ন মনগড়া দাবি ও সরকারি হিন্দুত্ববাদের বয়ানের সঙ্গে মিলিয়ে আয়ুর্বেদের প্রচারের সুবাদে আয়ুর্বেদ শিল্পের উন্নতি ঘটছে বটে, কিন্তু বিজ্ঞানসম্মত ও মান্য চিকিৎসাপদ্ধতি হিসেবে আয়ুর্বেদের যেটুকু সম্ভাবনা ছিল তা যে ক্রমশ অন্ধকারে নিমজ্জিত হতে চলেছে, সেটুকু নিশ্চিত। বিলেতের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশদ্বারে শল্যচিকিৎসার আদিপুরুষ হিসেবে সুশ্রুত-এর মূর্তি স্থাপিত হয়েছে, সে খবরে আমাদের বংশগৌরব বাড়লেও বাড়তে পারে, কিন্তু হাজার ঢক্কানিনাদ সহযোগে সুশ্রুতসংহিতার হুবহু অনুসরণের কথা বলে চললে যে দেশের শল্যচিকিৎসা এতটুকুও এগোবে না এবং বিদেশে এদেশের বিজ্ঞানের মান নিয়ে সম্মান কিছু বাড়বে না - এ নিয়ে তো সংশয়ের অবকাশ নেই।

অথচ, দেশের সুপ্রাচীন চিকিৎসাপদ্ধতির সুফল কীভাবে সমকালে পৌঁছে দেওয়া যায় এবং সেই সুবাদে দেশের চিকিৎসা-ঐতিহ্যকে কীভাবে বিশ্বের দরবারে সম্মানের আসনে প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে, তার চমৎকার একটি উদাহরণ হাতের কাছেই ছিল - চিনদেশের গবেষক তু ইউইউ যেভাবে হাজার বছরের পুরনো পুঁথি ঘেটে ম্যালেরিয়ার ওষুধ আর্টেমিসিনিন পুনরাবিষ্কার করলেন এবং সেই ওষুধকে সমকালীন বিজ্ঞানের পদ্ধতিতে নিষ্কাশন করে যাচাই করে প্রয়োগ করে সাফল্যলাভ করলেন - আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম এবং নোবেল পুরস্কার দ্বারাও স্বীকৃত - তা আমাদের কাছে মডেল হতে পারত। হলো না, হবেও না - কেননা, এদেশে সে সম্ভাবনা অঙ্কুরেই বিনষ্ট। কেননা, এদেশে আয়ুর্বেদের প্রসার ঘটানোর প্রয়াস উপলক্ষ মাত্র - মুখ্য অভীষ্ট হলো সুপ্রাচীন অতীতের রেফারেন্স দিয়ে প্রাচীন ধর্মের কথাটি বারবার মনে করিয়ে দেওয়া এবং ‘মা কী ছিলেন ও কী হইয়াছেন’ জাতীয় হাহুতাশের মাধ্যমে একধরনের ছদ্ম-দেশাত্মবোধ ও অপরের প্রতি অবিশ্বাস-বিদ্বেষ জাগিয়ে তোলা।

অতএব, সংস্থা হিসেবে পতঞ্জলি ঠিক কী গবেষণা করছে, সে গবেষণালব্ধ কার্যকারিতার প্রমাণ আদৌ কোনও স্বীকৃত জার্নালে প্রকাশিত হচ্ছে কি হচ্ছে না, এই সবকিছুই গৌণ - মুখ্য ব্যাপার হলো, সংস্থার মালিক যে গেরুয়া-পরিহিত বাবাজি, তিনি প্রধানমন্ত্রীর স্নেহধন্য ও দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক ধর্মাদর্শের অনুগামী, তাঁর কর্মপন্থাও তদনুসারী। অতএব, দেশে আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের গবেষণায় অর্থের জোগান ক্রমহ্রাসমান হলেও পতঞ্জলি জলের দরে (বা বিনেপয়সাতে) জমি পেয়ে যায় - বিপুল সরকারি আনুকূল্য লাভ করতে থাকে - এবং গত কয়েকবছরে পতঞ্জলির শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে, বাড়তেই থাকে।

আজ মহামান্য সর্বোচ্চ আদালত আচমকা ঘুম ভেঙে উঠে পতঞ্জলির অনিয়ম বিষয়ে সচেতন হয়ে উঠেছেন - বলেছেন, পতঞ্জলি তাঁদের প্রোডাক্টগুলিকে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ ছাড়া ওষুধ হিসেবে বিজ্ঞাপিত করতে পারবেন না, আগের নির্দেশ মানেনি বলে আপাতত কোনোরকম বিজ্ঞাপনই দিতে পারবে না - কিন্তু করোনাকালে তো স্বয়ং সরকারই ‘করোনিল'-কে করোনার অব্যর্থ দাওয়াই হিসেবে জানিয়েছিলেন! তাহলে? আর তাছাড়া, এব্যাপারে পতঞ্জলি কি একা? তারা বাদে আরও কতশত সংস্থা কত ভেষজ জড়িবুটিকে কতরকম রোগের ওষুধ - এমনকি ক্যানসারের ওষুধ - হিসেবে প্রচার করে চলেছেন, সরকারি অর্থে আয়োজিত মেলায় সেসব ওষুধের বিক্রিবাটাও রমরম করে চলছে, তার বেলা?

আসলে বিজ্ঞাপনের লব্জ ধার করে বলতে হয় - পতঞ্জলি তথা বাবা রামদেব কোনও রোগ নয়, রোগের উপসর্গ মাত্র। রোগের শিকড় অনেক গভীরে। মহামান্য সর্বোচ্চ আদালতের সাধ্য কি সে শিকড়ের গভীরতম তলদেশ অব্দি পৌঁছান!!

বাংলা তথা ভারতের নবজাগরণের এক উজ্জ্বল পুরোধা ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। ১৯০২ সালে মাত্র ৩৯ বছর বয়সে মারা যান তিনি। তাঁর ম...
17/12/2023

বাংলা তথা ভারতের নবজাগরণের এক উজ্জ্বল পুরোধা ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। ১৯০২ সালে মাত্র ৩৯ বছর বয়সে মারা যান তিনি। তাঁর মৃত্যুর কারণ নিয়ে সংশয় আছে। তবে তিনি যে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন তা বিভিন্ন সূত্র থেকেই জানা যায়। ঊনবিংশ শতাব্দীতে, এমনকি বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগেও ডায়াবেটিস, বিশেষত টাইপ ১ ডায়াবেটিস মানে ছিল অবধারিত মৃত্যু। চিকিৎসা বলতে ছিল কঠোরভাবে খাওয়া নিয়ন্ত্রণ। ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর জীবন ছিল কষ্টকর, টাইপ ১ ডায়াবেটিস আক্রান্তরা অনেক ক্ষেত্রেই রোগ নির্ণয়ের পর কয়েক মাসের বেশি বাঁচত না, শিশু-কিশোর অবস্থাতেই মারা যেত অনেকে। সেই সময়ের সাথে তুলনা করলে বোঝা যায় আজ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জীবনযাত্রার মান কতটা উন্নত হয়েছে। আর এই উন্নতির পেছনে যে আবিষ্কারটির কথা সবার আগে উল্লেখ করতে হয় তা চিকিৎসা বিজ্ঞানের গত শতকের উপহার - ইনসুলিন।

অনেক প্রাচীনকাল থেকেই ডায়াবেটিস রোগটি মানুষের কাছে পরিচিত হলেও বহুদিন অবধি এর সঠিক কারণ জানা ছিল না। ১৮৮৯ তে Oskar Minkowski এবং Joseph von Mering নামে দুই বিজ্ঞানী এই রোগের সাথে pancreas বা অগ্ন্যাশয়ের সম্পর্কের কথা জানান। পরবর্তীতে আরও অনুসন্ধানে বোঝা যায় অগ্ন্যাশয়ের islets of Langerhans -এর সমস্যাই ডায়াবেটিসের জন্য দায়ী।

এই পরিস্থিতিতে ১৯২১ সালে চিকিৎসক Frederick Banting এবং তাঁর ছাত্র Charles Best কুকুরের অগ্ন্যাশয় থেকে নিষ্কাশন করলেন একটা পদার্থ যা তাঁদের সহকর্মীদের ভাষায় কেবল 'গাঢ় বাদামি ময়লা' ছাড়া কিছু ছিল না। কিন্তু এই 'ময়লা' দিয়েই তাঁরা একটি ডায়াবেটিস আক্রান্ত কুকুরকে বাঁচিয়ে রাখলেন ৭০ দিন, যতদিন না ঐ নিষ্কাশিত পদার্থটা শেষ হয়ে গেল। এই সাফল্যে ব্যান্টিং এবং বেস্ট আরও উৎসাহিত হন এবং J.B. Collip এবং John Macleod এর সহায়তায় আরও বিশোধিত ইনসুলিন তৈরি করেন। ১৯২২ এর জানুয়ারিতে Leonard Thompson নামে এক ১৪ বছরের কিশোরের শরীরে প্রথম ইনসুলিন ইনজেকশন দেওয়া হয়। অভাবনীয় ভাবে মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঐ মৃত্যু পথযাত্রী কিশোরের রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে স্বাভাবিকের কাছে চলে আসে। স্বাভাবিক ভাবেই ইনসুলিন আবিষ্কারের এই সাফল্য চিকিৎসা জগতে আলোড়ন ফেলে দেয়। ১৯২২ সালে নোবেল পেলেন ব্যান্টিং এবং ম্যাকলিওড। এই পুরস্কার তাঁরা ভাগ করে নেন বেস্ট এবং কলিপের সাথে (অন্যের গবেষণা চুরির গল্প শুনতে অভ্যস্ত আমাদের কাছে এটা আশ্চর্যজনকই লাগে)। এই আবিষ্কারের পেটেন্ট পান ব্যান্টিং, বেস্ট এবং কলিপ। এই মহার্ঘ্য আবিষ্কারের পেটেন্ট তাঁরা বিক্রি করেন টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়কে। এর জন্য তাঁরা কী পরিমাণ অর্থ নিয়েছিলেন জানেন? প্রত্যেকে ১ ডলার করে! ব্যান্টিং বলেন “Insulin does not belong to me, it belongs to the world.”

পরবর্তীতে সময়ের সাথে ইনসুলিন আরও পরিশোধিত হয়, ডায়াবেটিস চিকিৎসার জন্য মুখে খাওয়ার ওষুধ ব্যবহৃত হয়। ফলস্বরূপ ডায়াবেটিস চিকিৎসা এখন অনেক উন্নত, জটিলতা ছাড়াই ডায়াবেটিস আক্রান্তরা অনেক দিন বাঁচছেন, আর টাইপ ১ ডায়াবেটিস মানেই মৃত্যু নয়।

বর্তমানে কিছু ব্যবসায়ী ভন্ড দাবি করেন 'প্রাচীন চিকিৎসাবিদ্যা'র মাধ্যমে তাঁরা ডায়াবেটিস নির্মূল করে দেবেন। তাঁদের কথায় মানুষ প্রভাবিতও হন। কিন্তু এই সহজ সত্যটা ভেবে দেখেন না যে 'প্রাচীন চিকিৎসাবিদ্যা'য় যদি ডায়াবেটিস নিরাময় হত তাহলে ইনসুলিন আবিষ্কারের আগে ডায়াবেটিক রোগীদের অনাহারে কষ্টকর জীবন কাটিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হত না, ইনসুলিন আবিষ্কার করারই প্রয়োজন পড়ত না। এটা যেন আমরা ভুলে না যাই যে চিরকাল বিজ্ঞানের আবিষ্কারই মানবসভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে, ভন্ডদের বুজরুকি নয়।

ডায়াবেটিস ও ডায়েট "ডায়াবেটিস রোগীরা কি মিষ্টি খেতে পারে ?""আমার সুগার আছে, আমি কি ভাত পুরোপুরি বাদ দেব ?"ডায়াবেটিস আ...
10/12/2023

ডায়াবেটিস ও ডায়েট

"ডায়াবেটিস রোগীরা কি মিষ্টি খেতে পারে ?"
"আমার সুগার আছে, আমি কি ভাত পুরোপুরি বাদ দেব ?"

ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিদের মনে এধরণের প্রশ্ন প্রায়শই আসে, আর চিকিৎসা করতে গিয়ে আমরাও প্রায়ই এই প্রশ্নগুলোর মুখোমুখি হই। ডায়েট ডায়াবেটিস চিকিৎসার এক অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সেই ডায়েট নিয়েই কিছু কথা আজ।

এমন কোনও নির্দিষ্ট ডায়েট প্ল্যান নেই যা ডায়াবেটিস আক্রান্ত সবার জন্য প্রযোজ্য হবে। ব্যক্তির বয়স, লিঙ্গ, খাদ্যাভ্যাস, কাজের ধরণ ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে ডায়েটিশিয়ান একটা ডায়েট প্ল্যান ঠিক করে দেন। তবে কিছু সাধারণ বিষয় সব ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

বিভিন্ন খাবারের মাধ্যমে কত ক্যালরি শক্তি শরীরে ঢুকছে সেটা খেয়াল রাখা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে মোটা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে খাদ্যের মাধ্যমে ক্যালরি গ্রহণ কমিয়ে ওজন কমানোর দিকে নজর দিতে হবে। কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাট যেহেতু ক্যালরির প্রধান উৎস তাই এই ধরণের খাবার গুলোর দিকে বেশি নজর দিতে হবে। একটা ছোট সন্দেশে অনেকটা ক্যালরি থাকে। তাই রোজ মিষ্টি না খাওয়া আর মিষ্টি খেলে অন্যান্য উচ্চ ক্যালরি যুক্ত খাবার কম খাওয়া - এটা মেনে চলতে হবে।

র্কাবোহাইড্রেট বা শর্করা জাতীয় খাবারের মধ্যে বেশি পরিমাণ ফাইবার যুক্ত, পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবারের ওপর জোর দিতে হবে। গোটা দানাশস্য, ফল, সবুজ শাকসবজি, দুগ্ধজাত খাবার দৈনন্দিন ডায়েটে থাকা বাঞ্ছনীয়। অতিরিক্ত শর্করাযুক্ত(added sugar) খাবার যথাসম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।

ফ্যাট জাতীয় খাবারের ক্ষেত্রে মনো- এবং পলি- আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড (mufa and pufa) সমৃদ্ধ খাবার ভালো। বাদাম, মাছ, সূর্যমুখী তেলের মত ভেষজ তেলে এই ধরণের ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়। খাবারে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ কম রাখতে হবে।

এছাড়া খাবারে সোডিয়ামের পরিমাণ বেশি না হওয়াই ভালো। একজন ব্যক্তির দৈনিক খাদ্যে ৬ গ্রামের কম সোডিয়াম থাকা বাঞ্ছনীয়।

ডায়াবেটিস মানে খাবারের সব সাধ-আহ্লাদ বিসর্জন দেওয়া নয়, বরং খাবার নিয়ে সচেতন থেকে নিজের খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনা যাতে শরীর সুস্থ রেখে জীবনের অন্য সাধ-আহ্লাদগুলো পূরণ করা যায়।

চিত্র ঋণ - CDC

Doctor শব্দটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ 'docere' থেকে, অর্থ 'to teach' - শিক্ষা দেওয়া। একজন চিকিৎসককে সারাজীবন শিখতে হয়, শেখা...
03/10/2023

Doctor শব্দটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ 'docere' থেকে, অর্থ 'to teach' - শিক্ষা দেওয়া। একজন চিকিৎসককে সারাজীবন শিখতে হয়, শেখাতে হয়। স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, জীবন-চর্যা নিয়ে আলোচনার জন্য এই পেজ। কিছু শেখার উপাদান এই পেজ থেকে পাওয়া যাবে এই আশা রাখি।

Address

Andul
Howrah
711302

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Dr. Himadri Sekhar Bera, MD-Medicine posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Practice

Send a message to Dr. Himadri Sekhar Bera, MD-Medicine:

Share

Share on Facebook Share on Twitter Share on LinkedIn
Share on Pinterest Share on Reddit Share via Email
Share on WhatsApp Share on Instagram Share on Telegram

Category