26/07/2023
সব কাপড় খুলে ফেলার পরে লজ্জার বাকি কী থাকে!- লক্ষী ওরাও
গত ২০০৭ সালের ২৪শে সেপ্টেম্বর আসামের রাজধানী গূয়াহাটিতে তপশিলি উপজাতি ভক্তির একটি আন্দোলনে গুয়াহাটির স্থানীয় মানুষ এবং পুলিশ আমাদের আন্দোলনকে ভাঙ্গার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে। ঐদিন অনেক আন্দোলনকারীরা লাশ হয়ে যায় । আমিও আন্দোলনের সামিল হয়েছিলাম ওই সময় মআমাকে দেখে ওরা চেঁচাচ্ছে ‘অসভ্য, জংলি, কুলির জাত’। ওরা আমার তলপেটের নীচে মারছে লাথি। টানছে চুল। হিড়হিড় করে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। চিৎকার করে কাঁদছিলাম, ‘আমায় বাঁচাও। এমন কোরো না।’ কেউ শোনেনি।
সব কাপড় খুলে ফেলার পরে লজ্জার বাকি কী থাকে! থাকে প্রাণের ভয়। যে ভাবে লাথি-ঘুষি এসে পড়ছিল, ভাবলাম আমার বাকি ভাইদের মতো আমার লাশও হয়তো পড়ে থাকবে গুয়াহাটির রাস্তায়। আর ফিরতে পারব না আমার বাড়িতে। মণিপুরের দুই মহিলার ভিডিয়ো যখন প্রথম দেখলাম, ২০০৭ সালের ২৪ নভেম্বর দিনটা ফিরে এল চোখের সামনে। যেমনটা আপনারাও দেখেছেন আমায়। রুক্ষ চুল উড়ছে। কালো-রোগা একটা নগ্ন শরীরের দৌড়ে চলারসেই ছবি।
আসলে, নিজে নগ্ন হয়েছি বলেই রাজাদের নগ্ন চেহারা চিনতে পেরেছি। তাই ভাবি, মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এখনও কোন মুখে শাসন করছেন! প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বলব, ‘বেটি বচাও’ স্লোগান আপনি বন্ধ করুন। তিন মাস হয়ে গেল কেন মণিপুরে যেতে পারলেন না? আর রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু? কেন মহিলা হয়েও আপনি চুপ? আপনিও তো আদিবাসী। আপনার হাতে অনেক ক্ষমতা। আপনি চুপ থাকলে মেয়েরা বিশ্বাস হারিয়ে ফেলবে যে!
( আনন্দবাজার পত্রিকা)