14/02/2024
সরস্বতী পুজো বাঙ্গালীর কাছে এক অন্য অনুভূতি, অন্য ভালোলাগা। এদিনেই কত হৃদয় জোড়া লাগে, কত মন ভেঙ্গে যায়। এ এক অদ্ভূত নস্টালজিয়া। যত কিছু বছরের যেন শুধু এই একটা দিনের জন্য জমিয়ে রাখা। আমাদের সময়ে আমরা স্কুলে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতাম, কবে কোন স্কুলে কার্ড দিতে যাবো, কার্ড দিতে গিয়ে কখন একটু ক্রাশের দেখা পাবো। একটু চোখে চোখে ইশারা হবে। তারপর সেদিন দেখা হবে। একসাথে একটু ঘোরাফেরা, একটু হাতে হাত লাগা, একটু আঁড় চোখে দেখা এসবেই ছিল অনাবিল আনন্দ।
এরপর এল কলেজ। আস্তে আস্তে সবকিছুর ক্রেজ কমে আসতে লাগল, বয়সের সাথে সাথে। কবে যেন এরকম করেই সরস্বতী পুজো জীবন থেকে হারিয়ে গেল। আজকাল তো দুটোর বেশি তিনটে লোক একসাথে দেখলে বিরক্ত লাগে। কিন্তু আজও আমি যে কোনও আছিলায় সরস্বতী পুজোর দিন রাস্তায় বেরোই শুধুমাত্র বিভিন্ন সাজপোষাকে ছোটবড় কচিকাঁচার মেলা দেখব বলে। কী যে ভালো লাগে। যেদিকে তাকাই সেদিকে শুধু রং আর রং। রংবেরংয়ের প্রজাপতি আর মথের মেলা।এসবের কাছে ভ্যালেন্টাইন ডে কোথায় লাগে।মনেও পড়েনা।
প্রতিবার, এত খুশির মাঝেও একটা বিষাদের ছোয়া লেগেই থাকে যে ইংলিশ মিডিয়মের বাচ্চাগুলো সরস্বতী পুজোর এই নিরলস আনন্দের স্বাদই পেলনা। না এদের স্কুলে পুজো হয় না এরা সেজেগুজে একটু বাইরে বেরোতে পারে। না এরা জীবনের এই দিকগুলো কোনদিন উন্মোচন করতে পারবে। জীবন এখন এতটাই মেকানিকাল যে ভবিষ্যতে এদের কাছে সরস্বতী পুজো শুধুই ভ্যালেন্টাইন ডে হয়ে রয়ে যাবে।