West Bengal Doctors Review from Patients Party

West Bengal Doctors Review from Patients Party Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from West Bengal Doctors Review from Patients Party, Pharmacy / Drugstore, KOLKATA.

নিয়ম

১) শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গে কোন ডাক্তার দ্বারা ভুল চিকিৎসা হলে যতটা সম্ভব তথ্য দিয়ে গ্রুপে জানাবেন।
২) শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গে কোন ডাক্তার দ্বারা খুব ভালো চিকিৎসা পেলে তথ্য দিয়ে গ্রুপের সদস্যদের সমৃদ্ধ করুন।

16/01/2022

আমার ভাইপো ঋত্বিক। আমার থেকে প্রায় পনের বছরের ছোট। ওর বাবার সাথে আমার বয়সের ব্যবধানও একই ছিল। ওর স্ত্রীর নাম, মোম। খুব ভালো মেয়ে। মেয়েটার পেটে অসহ্য ব্যথা হত গত দু'তিন মাস ধ'রে। খড়গপুরে রাজ নার্সিং হোমের ডাক্তারকে দেখানো হয়েছিল। তাঁরা বলেছিলেন গল ব্লাডারে পাথর হয়েছে। মাইনর সার্জারি করতে হবে। সেকেন্ড ওপিনিয়ন নেওয়ার জন্যে বড় জায়গায়, কলকাতার অ্যাপোলো হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হল ওকে। সেখানে MRI এবং নানারকম পরীক্ষার পর ওখানকার ডাক্তাররা নিদান দিলেন শুধু গল ব্লাডার নয়, বাইল ডাক্টেও পাথর হয়েছে। সুতরাং সেই অপারেশন আগে করতে হবে। এক লাখ ষাট হাজার টাকার প্যাকেজ, প্রথমে ERCP হবে বাইল ডাক্টের স্টোন রিমুভ করার জন্যে। দু'দিন পরে আরেকবার এন্ডোস্কোপি ক'রে গল ব্লাডারের স্টোন রিমুভ করা হবে। পাঁচ দিনে হেঁটে বাড়ি ফিরে যাবে পেশেন্ট। ডাঃ মহেশ গোয়েঙ্কা নিজে কথা বললেন ঋত্বিকের সাথে। তাঁর কনভিন্সিং কথাবার্তা ও মার্কেটিং স্কিলে অভিভূত হয়ে ঋত্বিক ওখানেই অপারেশন করানোর সিদ্ধান্ত নিল। অ্যাপোলোতে ভর্তি করা হল গত ২৫শে সেপ্টেম্বর, ERCP হল ২৬শে সেপ্টেম্বর। তারপর থেকেই নানা জটিলতার সৃষ্টি হতে লাগল। ওঁরা (ডাঃ গোয়েঙ্কার টিম) ঠারেঠোরে স্বীকার ক'রে নিলেন যে বাইল ডাক্টের অপারেশন করতে গিয়ে ওনারা প্যাংক্রিয়াসকে ইনজিওর করেছেন। তার ফলে সারা শরীরে বিষাক্ত রস ছড়িয়ে পড়ছে। মাইনর প্যাংক্রিয়াটাইটিস হয়েছে। তারপর সেটাই সিভিয়ার প্যাংক্রিয়াটাইটিসে পরিণত হল। ইন্টারনাল ব্লিডিং শুরু হল। তেরোই অক্টোবর রাত্রে মোমের অবস্থা খুব সিরিয়াস। বুকে কনজেসন, প্রবল শ্বাসকষ্ট। সারা শরীর ভ'রে গেল কার্বন ডাই অক্সাইডে। রাত্রের মতো কয়েক ইউনিট ব্লাড দিয়ে ভেন্টিলেটরে ঢোকানো হল। পরের দিন সকাল ৮.৪৫-এ অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হল, দু'টো প্যাংক্রিয়াটিক স্টেন্ট বসানো হল splenic artery-তে। অপারেশন চলল পাঁচ ঘন্টা ধরে।

১৪ই অক্টোবর দুপুরে অপারেশন থিয়েটার থেকে বেরিয়ে ডাঃ মহেশ গোয়েঙ্কা বললেন, "আমি বলে দিই, কালকের রাত্রিটা খুব বাজে গেছে। আমি আজ সকালে দেরিতে ক'রে এসেছিলাম, কারণ, কাল সারা রাত জেগেছিলাম আপনার পেশেন্টের জন্যে। আপনার ফোন ইনিশিয়ালি পাচ্ছিলাম না, তারপর পাওয়া গেল। সব ব্যবস্থা রাত্রেই করা হয়েছিল। কালকে তো আপনার সাথে কথা বলেছে, আপনিও দেখে গেছিলেন খুব ভালো ছিল, ইন ফ্যাক্ট আমরা ভেবেছিলাম সবকিছু ঠিক চলছে। কিন্তু রাত একটা নাগাদ ওনার হিমোগ্লোবিন হঠাৎ ড্রপ করল। তারপর সবকিছুই হল, ড্রাউজি হয়ে গেলেন, ইউরিন কম হতে আরম্ভ করল, আমরা ব্লাড-ফ্লাড দিয়ে দেখলাম, একটা সিটি স্ক্যান করা হল। ওখানে পাওয়া গেল একটা পয়েন্ট থেকে ব্লিডিং হচ্ছে। ফলে হিমোগ্লোবিন পাঁচে নেমে গেছে, যেটা এগারো-বারো থাকার কথা। আমরা ব্লিডিং পয়েন্ট পেয়েছি প্যাংক্রিয়াসের গায়ে splenic artery-তে। ওটাকে বন্ধ করা হয়েছে। আশা করি এটা ইম্প্রুভ করবে। কিন্তু আমরাও ওরিড আছি। যা রাত্রিবেলায় করা হয়েছে এর থেকে ভালো কোত্থাও ওয়ার্ল্ডে কিছু করা যেতে পারে না। তারপরে দেখি আপনাদের ভাগ্য, আমাদেরও ভাগ্য। ঠিক আছে?"
পরের দিন ১৫ তারিখে বললেন, "ঠিক আছে, একটু স্টেবল হচ্ছে, চেষ্টা করে যাচ্ছি আমরা কাল থেকে, এখনও ইনফেকশন আছে, ব্লিডিং মনে হয় বন্ধ হয়েছে। একটু উল্টাপাল্টা কথা বলছে , আইসিইউতে দীর্ঘ দিন থাকলে ওটা হয়। ওটা কোনো ওরির ব্যাপার না। আমাদের সাইক্রিয়াটিস্ট কাউন্সেলিং করে দেবে। শরীরে টক্সিন জমা হলে কিডনি এফেক্ট হয়, ব্রেনে এফেক্ট হয়, টক্সিন বেরিয়ে গেলে সব ঠিক হয়ে যাবে। "

কিন্তু এতসব স্তোকবাক্য দেওয়া সত্ত্বেও অবস্থার কিছু উন্নতি হল না। নিত্য নতুন উপসর্গ দেখা দিতে লাগল। ২৫শে অক্টোবর আবার অবস্থা সংকটজনক হল। আবার ব্লিডিং শুরু হল। সেই ব্লিডিং পয়েন্ট সিটি স্ক্যান করেও খুঁজে পাওয়া গেল না। পেট ওপেন করল ওখানকার সার্জেন। । কিন্তু ভেতরের সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলো একটার সাথে অন্যটা এমনভাবে জড়িয়ে গেছে যে ইলিওস্টোমি করা যায়নি। যেখানে রক্ত জমাট বেঁধে ইনফেকশন হয়েছে সেখানটা পরিষ্কার করে ডেড সেলস, ব্লাড ক্লট, দূষিত রক্ত বার করে দেওয়া হল। জ্ঞান ফিরে এল। সবাইকে চিনতে পারছিল। বলা হল, যদি আবার জ্বর আসে, হিমোগ্লোবিন লেভেল ফল করে তাহলে একই প্রসিডিওর আবার করবে। আর যদি অটোহিলিং হয়ে যায় তো সবচেয়ে ভালো।
০৬.১১.২০২০ :
ডাক্তার তিওয়ারি ওপর থেকে দেখলেন।
এখন হিমোগ্লোবিন - ৮ ।
ইন্টারনাল ব্লিডিং হয়েই যাচ্ছে, বন্ধ হচ্ছে না। হিমোগ্লোবিন লেভেল যদি আটের নীচে না নামে তবে আর কিছু করতে হবে না।
আজ একটা ওষুধ NovoSeven দিয়ে ট্রাই করবেন, রক্ত বন্ধ করার।
এতেও যদি কাজ না হয় তবে এম্বোলাইজেশন করতে হবে।
(Embolization is a minimally invasive surgical technique. The purpose is to prevent blood flow to an area of the body.)
ডাক্তারবাবুকে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম মোমের বাঁচার চান্স কতটা?
উনি বলেছেন, "২০ থেকে ৩০% . তবে এটা ওনার ব্যক্তিগত মতামত।

বিলের পাহাড় জমতে লাগল। দশ লাখ টাকার মেডিক্যাল ইনস্যুরেন্স ছিল। সেটা শেষ হয়ে হসপিটালের চার্জ মোট ঊননব্বই লাখ ছুঁল। সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ল আমার ভাইপো। যখন মহেশ গোয়েঙ্কাকে বলা হল , "আমাদের মেয়ে তো এত রোগের উপসর্গ নিয়ে আসেনি। আপনারা এক লাখ ষাট হাজারের প্যাকেজকে প্রায় কোটিতে পৌঁছে দিলেন কোনো রোগ না সারিয়ে, বরং নিত্য নতুন রোগে জর্জরিত করে!" তখন উনি বললেন, সব অপারেশনেই রিস্ক ফ্যাক্টর থাকে, কনসেন্ট ফর্মে সব লেখা ছিল। আমরা কনসেন্ট ফর্ম সেই জন্যই সাইন করাই অপারেশনের আগে।"
আমাদের তরফ থেকে বলা হল, "তাহলে এতদিন পর্যন্ত যা চিকিত্‍সা হয়েছে তার কেস সামারি এবং প্রতিটি অপারেশনের ভিডিও সিডি আপনি দিন। আমরা সেকেন্ড ওপিনিয়ন নেব।"
এই কথায় উনি একটু টলে গেলেন, উষ্মা প্রকাশ করলেন। বললেন, "এখানকার মতো চিকিৎসা ভূভারতে কোথাও হবে না। ঠিক আছে, অন্য ডাক্তার দেখাতে পারেন। কেস সামারি দিয়ে দেব।"
দিলেনও, কিন্তু প্রথম অপারেশনের সিডি কিছুতেই দিলেন না অনেকবার চাওয়া সত্ত্বেও। আর বিলের জন্যও তাগাদা দেওয়া বন্ধ হল। তখনও পর্যন্ত সাতাশ লাখ টাকা পে করা হয়ে গেছিল।

কিন্তু মোমের অবচেতন মন মনে হয় সমস্ত কিছু বুঝতে পারছিল। তাই আর কাউকে কষ্ট না দিয়ে নিঃশব্দে চলে গেল গত ৮ই ডিসেম্বর, রাত এগারোটা কুড়িতে।

চলে গেল মোম । দীর্ঘ আড়াই মাস ধরে বেঁচে থাকার যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে গেছিল মেয়েটা, পারছিল না আর। চলে গেল একরাশ অভিমান নিয়ে। ডাঃ মহেশ গোয়েঙ্কা অনেক বড় ডাক্তার, এশিয়ার এক নম্বর(?) গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোলজিস্ট। তাঁরই ভুল চিকিত্‍সা মেরে দিল মেয়েটাকে। জানিনা, এইসব নাম্বারিংগুলো কী ক'রে হয়, কারা করে। ওর বয়স হয়েছিল ঊনচল্লিশ। রেখে গেল তেরো বছরের ছেলে ঋষি; ওর থেকে চার বছরের বড়, বর ঋত্বিক; মা চন্দনাদেবী; ওর থেকে দু'বছরের ছোট ভাই দীপ এবং আমাদের মতো অসংখ্য বৃদ্ধ, প্রায় বৃদ্ধ শোকাহত আত্মীয়কে।

( এই দীর্ঘ লেখা এইজন্যে ফেসবুকে দিলাম যাতে এটি অন্য কারুর কাজে লাগে। আর কোনো মা যেন তার মেয়েকে, কোনো সন্তান যেন তার মা'কে , কোনো স্বামী যেন তার স্ত্রীকে, কিংবা কোনো ভাই তার দিদিকে না হারায়। ভুল চিকিৎসার বলি যেন আর কেউ না হয়। হাসপাতালের চাকচিক্য দেখে, বড় ডাক্তারের সুললিত বাণী শুনে মোহিত হয়ে, মেডিক্লেমের নিরাপত্তাবোধে আবিষ্ট হয়ে একটা প্রাণকে মানবিকতাহীন একরাশ ডিগ্রিধারী কসাইয়ের হাতে তুলে দেবেন না। আমরা যে ভুল করেছি আপনারা আর কেউ তা করবেন না। কলকাতা অ্যাপোলো হসপিটালের ধারও মাড়াবেন না কেউ। বয়কট করুন মহেশ গোয়েঙ্কা ও তার টিমকে এবং অবশ্যই শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন লেখাটিকে। মোম যখন কথা বলার অবস্থায় ছিল তখন ওর মাকে ওখানকার ডাক্তারদের সম্বন্ধে বলেছিল, "সরিয়ে দিতে পারে, সারিয়ে দিতে পারে না।" )
~ গণেশ ঢোল
২৭.১২.২০২০

Address

Kolkata
700011

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when West Bengal Doctors Review from Patients Party posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Share on Facebook Share on Twitter Share on LinkedIn
Share on Pinterest Share on Reddit Share via Email
Share on WhatsApp Share on Instagram Share on Telegram