
21/07/2025
Tata Memorial Hospital, Mumbai...
ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে আমরা সব সময় তাজমহল"কেই চিনি।
িন্তু_আসল_ভালবাসা_নিদর্শন_একজন কিভাবে রেখে গেছেন তা হয়তো আমাদের অনেকের অজানা। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই আসল ভালবাসার নিদর্শনের কথা।
১৮৯৮ সালের valentines day তে অর্থাৎ ১৪ই ফেব্রুয়ারি দিন বিয়ে হয় দোরাবজিটাটা এবং মেহেরবাঈ এর। বিয়ের দু বছর পর অ্যানিভার্সারির দিন দোরাবজি টাটা তার প্রিয়তম স্ত্রীকে একটি হিরে উপহার দেন। সেই হিরেটি আকারে বিশ্ব বিখ্যাত কোহিনুর হীরের চেয়েও দ্বিগুণ বড় ছিল। ২৪৫ ক্যারটের এই হীরের বর্তমান দাম প্রায় ১৩৫ কোটি টাকা। স্বামীর থেকে এই উপহার পেয়ে খুব খুশি হয়েছিলেন মেহেরবাঈ টাটা।
ে_আশ্চর্যজনক_ঘটনা_হল এই হিরেটি না থাকলে আজ হয়তো ভারতবর্ষের বুকে টাটা কোম্পানির কোন অস্তিত্বই থাকতো না। আমরা হয়তো রতন টাটার মত শিল্পপতি কেউ দেখতে পেতাম না।
েহেরবাঈ_ছিলেন_খুবই_সুন্দরী একজন নারী ছিলেন । তার মানসিকতায় রাজকীয় ভাবের পরিচয় ও পাওয়া যায়। ভারতীয় শাড়ি পড়েই তিনি দুনিয়ার সব ইভেন্টে পৌঁছে যেতেন। তিনি খুব ভালো টেনিস খেলতেন। ঘোড়সওয়ার থেকে গাড়ি চালানো সবেতেই তিনি ছিলেন দক্ষ। ভারতীয় মহিলাদের অধিকার নিয়ে তিনি অনেক ভাবতেন।
াটা_গ্রুপের_বিজনেস_সেই সময় রমরমিয়ে চলছে। ইস্পাত শিল্পের এক নম্বর শিরোপা তখন একমাত্র টাটা কোম্পানির দখলে। কিন্তু বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর টাটা গ্রুপের অবস্থা তখন এতটাই খারাপ হল যে দোরাবজির টাটার কাছে তখন শ্রমিকদের পারিশ্রমিক দেওয়ার টাকাও ছিল না। টাটা গ্রুপ প্রায় বন্ধ হতে শুরু করেছিল।
়ে_স্বামীর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন মেহেরবাঈ টাটা। উপহারে পাওয়া তার সেই দামি হীরের সহ প্রচুর গহনা বন্ধক দেবার অনুরোধ জানান তার স্বামীকে। প্রথমে রাজি না হলেও গরিব শ্রমিকদের কথা ভেবে তিনি তার স্ত্রীর সিদ্ধান্ত মেনে নেন এবং সেই সময় দামি হিরেটি এবং সমস্ত গহনা বন্ধক দিয়ে এক কোটি টাকা লোন পেয়েছিলেন দোরাবজি টাটা। সেই টাকা দিয়ে শ্রমিকদের সমস্ত পারিশ্রমিক মিটিয়ে আবার নতুন করে শুরু করলেন টাটার ইস্পাত কারখানা। কয়েক দিনের মধ্যেই আবার রমরমিয়ে চলতে লাগল টাটা গ্রুপের ব্যবসা। দোরাবজি টাটাও কিছুদিনের মধ্যেই ব্যাংকের লোন মিটিয়ে তার স্ত্রীর কাছে হিরে সহ সমস্ত গহনা তার হাতে তুলে দেন।
িন্তু ১৯৩১ সালে মেহেরবাঈ টাটার হঠাৎ শরীর অসুস্থ হয়। চিকিৎসায় ধরা পড়লো তিনি ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত। দেশ বিদেশের অনেক ডাক্তারকে দেখিয়েও এই রোগ থেকে তার স্ত্রীকে সুস্থ করতে পারেননি দোরাবজি টাটা। অবশেষে সালে মেহেরবাঈ টাটা এক নার্সিংহোমে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। ঠিক এক বছর বাদে দোরাবজি তার স্ত্রীর মৃত্যুর শোক করতে না পেরে ১৯৩২ সালে ৩রা জুন তিনি মারা যান।
িন্তু_মারা_যাওয়ার আগে তিনি স্ত্রীর জন্য তৈরি করে রেখে গিয়েছিলেন ভারত বর্ষের বুকে ভালোবাসার এক প্রতীক। তার স্ত্রীকে ক্যান্সারের যন্ত্রণায় তিলে তিলে শেষ হয়ে যেতে দেখেছিলেন দোরাবজি টাটা।
ারতবর্ষের_বুকে ক্যান্সারের জন্য কোন চিকিৎসা কেন্দ্র ছিল না। যার জন্য মারা যেত বহু গরিব ও মধ্যবিত্ত ক্যান্সারে আক্রান্ত মানুষেরা। তাই সাধারণ ভারতবাসীর কথা ভেবে স্ত্রী মেহেরবাঈএর সেই বহু মূল্য হিরে টা বিক্রি করে তিনি বানিয়ে ছিলেন টাটা মেমোরিয়াল হসপিটাল এবং লেডি টাটা মেমোরিয়াল ট্রাস্ট।
্রতিবছর_এই_হাসপাতালে_প্রায় ৬৫ হাজার মানুষ ক্যান্সারের চিকিৎসা করাতে আসেন। তার মধ্যে প্রায় ৭০% ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা করা হয়। বছরের প্রায় সাড়ে চার লক্ষ ক্যান্সার রোগীর ফলোআপ ট্রিটমেন্ট চলে এখানে। প্রতিমাসে প্রায় কয়েক হাজার শিশু ক্যান্সার রোগী সুস্থ হয় এই হাসপাতাল থেকেই।
ুধু_ভারতবর্ষে_নয়, বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশ থেকেও প্রচুর মানুষ এসে এই হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা করাতে আসেন টাটা মেডিকেল সেন্টারের বিভিন্ন শাখায়। বাংলাদেশের মানুষেরাও জানেন ভারতে এই টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে ক্যান্সারের সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা হয়।
াজমহল_তৈরির_পর_শাহজাহান শ্রমিকদের আঙুল কেটে দিয়েছিলেন যাতে তাজমহলের মত আর কোন স্থাপত্য না তৈরি হয় ।
িন্তু_মৃত্যুর_আগে_দোরাবজি টাটা বলে গিয়েছিলেন সারা দেশ জুড়ে যেন অজস্র হাসপাতাল তৈরি হয় যাতে ভারতবর্ষের সাধারণ ও মধ্যবিত্ত মানুষরা সবথেকে ভালো ক্যান্সারের চিকিৎসা করতে পারেন। শুধু মুম্বাই নয় কলকাতা সহ ভুবনেশ্বর ,বারানসি ,তিরুপতি ,রাঁচি, উত্তর প্রদেশ ইত্যাদি জায়গাতেও গড়ে উঠেছে টাটা মেডিকেল সেন্টার।
ারত_সরকারের_সাথে_হাত মিলিয়ে তেলেঙ্গানা আসাম ওড়িশা নাগাল্যান্ড প্রভৃতি জায়গাগুলিতে ক্যান্সারের রিসার্চ ও নেটওয়ার্ক তৈরী চলছে।
ে_ক্যান্সারের_জন্য_স্ত্রী_মেহেরবাঈ"কে হারাতে হয়েছিল সেই ক্যান্সারের জন্যই ৯২ বছরেরও বেশি সময় ধরে লড়াই করে চলেছে টাটা মেমোরিয়াল হসপিটাল। কিছুদিনের মধ্যেই হয়তো আমরা টাটা গ্রুপ থেকে বাজারে পেয়েও যাব ক্যান্সার সারানোর ওষুধ।একেই বলে ভালোবাসার আসল নিদর্শন।
িন্তু_সময়ের_বিবর্তনে_ইতিহাসের_পাতায়_দোরাবজি এবং মেহেরবাঈএর এই ভালোবাসার কথা হয়ত একদিন হারিয়ে যাবে।
❤️❤️
সংগৃহীতঃ
#ভালোবাসা #সংগৃহীত