স্বপন দেব

স্বপন দেব বাংলায় বসন্তোৎসব... ইংরাজিতে Festival of Relationship!!

13/10/2024

সবাইকে জানাই
বিজয়ার
দ্রোহেচ্ছা!!

Kodak কোম্পানিকে মনে আছে? ১৯৯৮ সালে কোড্যাক কোম্পানিতে প্রায় ১লক্ষ ৭০ হাজার কর্মচারী কাজ করতেন। এবং বিশ্বে ছবি তোলার প্র...
28/07/2024

Kodak কোম্পানিকে মনে আছে? ১৯৯৮ সালে কোড্যাক কোম্পানিতে প্রায় ১লক্ষ ৭০ হাজার কর্মচারী কাজ করতেন।
এবং বিশ্বে ছবি তোলার প্রায় ৮৫% ই কোড্যাক ফিল্ম ও ক্যামেরায় তোলা হত। গত কয়েক বছরে মোবাইল ক্যামেরার বাড়বাড়ন্ত হওয়ায় এমন অবস্থা হয় যে Kodak ক্যামেরার কোম্পানীটাই উঠে যায়। এমনকি Kodak সম্পুর্ন দেউলিয়া হয়ে পড়ে এবং এদের সমস্ত কর্মচারীকে বাধ্যতামূলক ছাঁটাই করা হয়।
ওই একই সময়ে আরো কতগুলি বিখ্যাত কোম্পানি তাদের ঝাঁপ পাকাপাকি বন্ধ করতে বাধ্য হয়। যেমন-
HMT (ঘড়ি)
BAJAJ (স্কুটার)
DYANORA (TV)
MURPHY (radio)
NOKIA (Mobile)
RAJDOOT (bike)
AMBASSADOR (গাড়ি)
এই উপরের কোম্পানিগুলোর মধ্যে কারুরই কোয়ালিটি খারাপ ছিল না। তবুও এই কোম্পানি গুলো উঠে গেল কেন? কারণ এরা সময়ের সাথে নিজেকে বদলাতে পারেনি।
এখনকার সময়ে দাঁড়িয়ে আপনি হয়তো ভাবতেও পারছেন না যে সামনের 10 বছরে দুনিয়া কতটা পাল্টে যেতে পারে! এবং আজকের 70%-90% চাকরিই সামনের 10 বছরে সম্পুর্নভাবে বিলুপ্ত হতে চলেছে। আমরা ধীরে ধীরে ঢুকে পড়েছি "চতুর্থ শিল্প বিপ্লব"-এর যুগে।
আজকের বিখ্যাত কোম্পানিগুলোর দিকে তাকান-
উবার কেবলমাত্র একটি Software-এর নাম। না, এদের নিজস্ব কোন গাড়ি নেই। তবু আজ বিশ্বের বৃহত্তম ট্যাক্সি-ভাড়ার কোম্পানি হল উবার।
১৯৯৪ সালে একটি গ্যারেজে সূচনা হয়েছিল Amazon নামের অনলাইন শপিং বিজনেস। আজ এর মালিক জেফ বেজোস পৃথিবীর ১নং ধনী।
Airbnb হল আজকে দুনিয়ার সবথেকে বড় হোটেল কোম্পানি। কিন্তু মজার ব্যাপার হল, পৃথিবীর একটি হোটেলও তাদের মালিকানায় নেই।
একইভাবে Paytm, ওলা ক্যাব, Oyo rooms ইত্যাদি অসংখ্য কোম্পানির উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে।
আজকে আমেরিকায় নতুন উকিলদের জন্য কোন কাজ নেই, কারণ IBM Watson নামে একটি আইনি সফটওয়্যার যে কোন নতুন উকিলের থেকে অনেক ভাল ওকালতি করতে পারে। এইভাবে পরের 10 বছরে প্রায় 90% আমেরিকানদের আর কোন চাকরি থাকবে না। বেঁচে থাকবে খালি বাকি 10%। এই 10% হবে বিশেষ বিশেষজ্ঞ।
নতুন ডাক্তারদেরও চাকরি যেতে বসেছে। Watson নামের Software মানুষের থেকেও 4 গুন নিখুঁত ভাবে ক্যানসার এবং অন্যান্য রোগ শনাক্ত করতে পারে। 2030 সালের মধ্যে কম্পিউটারের বুদ্ধি মানুষের বুদ্ধিকে ছাপিয়ে যাবে।
2019 সালের মধ্যেই রাস্তায় নামতে চলেছে চালকহীন গাড়ি। 2020 সালের মধ্যেই এই একটা আবিষ্কার বদলে দিতে পারে গোটা দুনিয়ার চালচিত্র। এর ফলে সামনের 10 বছরে আজকের 90% গাড়িই আর রাস্তায় দেখা যাবে না। বেঁচে থাকা গাড়িগুলো হয় ইলেক্ট্রিকে চলবে অথবা হাইব্রিড গাড়ি হবে। রাস্তাগুলো ক্রমশঃ ফাঁকা হতে থাকবে। পেট্রোলের ব্যবহার কমবে এবং পেট্রোল উৎপাদনকারী আরব দেশগুলি ক্রমশঃ দেউলিয়া হয়ে আসবে।
তখন গাড়ি লাগলে, উবারের মত কোন Software-এর কাছেই গাড়ি চাইতে হবে। আর গাড়ি চাইবার কিছুক্ষনের মধ্যেই সম্পুর্ন চালক-বিহীন একটা গাড়ি আপনার দরজার সামনে এসে দাঁড়াবে। আপনি যদি অনেকের সাথে Share করে ওই একই গাড়িতে যাত্রা করেন, তাহলে মাথাপিছু গাড়িভাড়া বাইকের থেকেও কম হবে।
গাড়িগুলো চালকবিহীন হবার ফলে 99% দুর্ঘটনা কমে যাবে। এবং সেই কারণেই গাড়ি-বীমা করানো বন্ধ হবে এবং গাড়ি-বিমার কোম্পানি গুলো সব উঠে যাবে।
গাড়ি চালানোর মত কাজগুলো আর পৃথিবীতে বেঁচে থাকবে না। 90% গাড়িই যখন রাস্তা থেকে উধাও হয়ে যাবে, তখন ট্রাফিক পুলিশ এবং পার্কিং-এর কর্মী-দেরও কোন প্রয়োজন থাকবে না।
ভেবে দেখুন, আজ থেকে 5-10 বছর আগেও রাস্তার মোড়ে মোড়ে STD বুথ ছিল। দেশে মোবাইল বিপ্লব আসার পর, এই সবকটা STD বুথই কিন্তু পাততাড়ি গুটাতে বাধ্য হল। যেগুলো টিকে রইল, তারা মোবাইল রিচার্জের দোকান হয়ে গেল। এরপর মোবাইল রিচার্জেও অনলাইন বিপ্লব এল। ঘরে বসেই অনলাইনে লোকে মোবাইল রিচার্জ করা শুরু করল। এই রিচার্জের দোকান গুলোকে তখন আবার বদল আনতে হল। এরা এখন কেবল মোবাইল ফোন কেনা-বেচা এবং সারাইয়ের দোকান হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে সেটাও বদলাবে খুব শিগগিরই। Amazon, Flipkart থেকে সরাসরি মোবাইল ফোন বিক্রি বাড়ছে।
টাইপ রাইটার মেশিন গুলা আজ কোথায়? টাইপিং ও শর্ট হ্যান্ড শিখুন সেই ট্রেনিং সেন্টার গুলিই বা আজ কোথায়??
টাকার সংজ্ঞাও পাল্টাচ্ছে। একসময়ের নগদ টাকা আজকের যুগে "প্লাস্টিক টাকায়" পরিণত হয়েছে। ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ডের যুগ ছিল কদিন আগেও। এখন সেটাও বদলে গিয়ে হয়ে যাচ্ছে মোবাইল ওয়ালেট-এর যুগ। Paytm-এর রমরমা বাজার, মোবাইলের এক টিপে টাকা এপার-ওপার।
যারা যুগের সাথে বদলাতে পারে না, যুগ তাদের পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়। তাই ক্রমাগত যুগের সাথে বদলাতে থাকুন।
সময়ের কোডাক ফিল্মের ফিতায় কখনো বেঁধে
রাখবেন না ।প্রযুক্তির উদ্ভাবনার সাথে
নিজেকে সব সময় চলমান রাখুন ।
সাফল্যকে সাথে রাখুন, সময়ের সাথে থাকুন।
# # # # # # # # # হোয়াটসাপ মারফৎ এই লেখাটা পেয়েছিলাম আজ থেকে ঠিক ৫ বছর আগে গতকাল। ইতিমধ্যেই পেরিয়ে গেছে ১০ বছরের মধ্যে পাল্টে যাবে হুঁশিয়ারির ৫টি বছর। ওপরে দেওয়া তথ্যগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও কয়েকটি নাম, যেমন সুইগি, জোম্যাটো, ফোন পে, বিগ বাস্কেট, ব্লিঙ্কিট ইত্যাদি। কিন্তু অবস্থা কি সত্যি ই এতোটা খারাপ হতে চলেছে? আমার মনে হয় না। অন্তত সার্ভিস সেক্টরে তো কিছু কাজ বেড়েছে অবশ্যই? এ আই বা আর্টফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স নিয়ে একটা ভ্রান্ত ধারণা ছড়ানোর অপচেষ্টা শুরু হয়ে গেছে কি? বেকারত্ব আকাশ ছোঁবে, নাকি আগামী দিনের কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা অনেকটাই বাড়িয়ে দেবে এই নতুন শিল্পবিপ্লব। আলোচনা হোক...এই নিয়ে। মতামত জানানোর অনুরোধ রাখলাম প্রত্যেকের কাছে।

13/04/2024
21/03/2024

বক্ষবিভাজিকা নিয়ে এত হুজ্জুতি স্রেফ মনুষ্যসমাজেই দেখা যায়। হামলে দেখা হোক, নিন্দে করা হোক বা দেখানো। সে অবশ্য মনুষ্যপ্রজাতি অনেক ক্ষেত্রেই একমেবাদ্বিতীয়ম। এর আগে কেউ জামাকাপড়ও পরেনি, পরমাণু বোমও বানায়নি। কিন্তু তার পরেও জিনিসটা জৈবিকভাবেই রহস্যজনক। কারণ দুখানা জিনিস কোন যুক্তিতে এরকম, কেউ জানেনা। এক হল পুরুষের যৌনাঙ্গ। সেটা এতটাই বাইরে, এতটাই অরক্ষিত যে আক্রমণের লক্ষ্য। ওই জন্যই খেলতে গেলে আলাদা করে গার্ড নিতে হয়, '... তে ক্যাঁত করে লাথি মারব' এই সব প্রবাদের জন্ম হয়েছে। জায়গাটাকে এতটাই দুর্বল করে রেখে বিবর্তনের নিরিখে পুং দের কী লাভ হয়েছে কে জানে। কিন্তু সেটা আপাত কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সের না। আজকের বিষয় হল মহিলাদের বুক। সেটাও সম্পূর্ণ উদ্ভট অপ্রয়োজনীয় একটা ব্যাপার। দুগ্ধগ্রন্থির জন্য অত জায়গা লাগেনা। শিম্পাঞ্জি কি গরিলা, কারো স্তন অত বড় না। গরু তো লিটার-লিটার দুধ দেয়। অনুপাতে তারও আকার বেশ কম। তাহলে কি শারীরিকভাবে কোনো সুবিধে আছে? তাও না। স্তন থাকার জন্য মহিলাদের সেন্টার অফ গ্র‌্যাভিটি তুলনায় একটু উপরে এবং সামনের দিকে, মানে নড়বড়ে। সেটাকে সামলাতে গিয়ে মহিলাদের হাঁটার কায়দা বদলাতে হয়েছে। সব মিলিয়ে পুরো জিনিসটাই অসুবিধেজনক। একমাত্র সুবিধে হল সব মিলিয়ে নারীশরীর রাম্পে হাঁটলে দৃষ্টিসুখের জন্ম দেয়। কিন্তু স্রেফ সেই কারণেই লাখ-লাখ বছর ধরে বিবর্তনের নকশা তৈরি হয়েছে, ভাবা খুব কঠিন।
এইগুলো নিয়ে লেখাপত্তর হয়েছে। কিন্তু নারীবাদ হোক কি নৃতত্ত্ব, কোথাও কোনো সূত্র পাবেননা, কেন এরকম। কারণ পিতৃতন্ত্র, মাতৃতন্ত্র, সমাজ, সংসার সব তৈরির আগেই এসব হয়ে গেছে। ফলে ওসব জলপুলিশ, অর্থাৎ কিনা বিবর্তনের আন্ডারে। তা, বিবর্তনে কেন এরকম, সে নিয়ে বিবর্তন এবং সমাজ নিয়ে যাঁরা গবেষণা করেন, সেই ঘরানায় কিছু চিন্তা আছে। এই নিয়ে একাধিক লেখা হয়ে থাকতে পারে, অল্পবিদ্যায় আমি কেবল একটি কেতাবেই বিষয়টা নিয়ে লেখা পড়েছি। তার নাম 'প্রভাতকালীন যৌনতা', সেক্স অ্যাট ডন। উত্তেজিত হবেননা, সাত-সকালে কী করে যৌনতা করতে হবে, ওয়েব-পোর্টালের মতো তার বিবরণ না, প্রভাত মানে এখানে মানব-প্রজাতির ঊষাকাল। সেখানে যৌনতা কেমন ছিল, সে নিয়ে চাট্টি তত্ত্ব বা হাইপোথিসিস, বা পর্যবেক্ষণ, সব মিলিয়ে-মিশিয়ে আছে সেই বইতে। তাতে এই স্তনের ব্যাপারটাও আছে। সেটা কীরকম? না, মানুষ যখন প্রায়-মানুষ ছিল, তখন সে চার-পায়ে হাঁটত। সবাই সবার দুটো জিনিস স্পষ্ট করে দেখতে পেত, এক মুখ, আর দুই পশ্চাদ্দেশ। তা, পুংরা নারীর পশ্চাদ্দেশ দেখে যৌন আকর্ষণ, তাড়না, এইসব বোধ করত (মুখ দেখে করত কিনা বইয়ে লেখেনি)। তা, চার-পা থেকে দুই-পায়ে উত্তরণের পর পুরো সিস্টেমটাই ঘেঁটে ঘ হয়ে গেল। পুংরা আর মেয়েদের পাছা দেখতে পায়না। ব্যস, যৌন তাড়না গায়েব। তখন ঘরে ঘরে হাহাকার। মানবপ্রজাতি উঠে যায় যায় প্রায় ( এই শেষ তিনটে বাক্য আমার গুলবাজি, কিন্তু ফুর্তি এসে গেল, ন লিখে পারলামনা)। তো তখন, পুংকে আকৃষ্ট করার জন্য নিতম্বের একট বিকল্পের প্রয়োজন হল, যেটা সামনে থেকে দেখা যাবে। সেটাই আস্তে আস্তে ভারি বুকের আকার নিল। নিতম্ব-বিভাজিকার আদলে তৈরি হল বক্ষ বিভাজিকা, তার জন্য বড় স্তন। সোজা বাংলায় পাছার ছাপ এনে বুকে বসিয়ে দেওয়া হল। একদিনে হয়নি, কেউ চেষ্টা করেও করেনি, বিবর্তনের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় হয়েছে। সেসব হবার পর পুংরা হাঁফ ছেড়ে বাঁচল, তাদের জীবনে আবার উত্তেজনা ফিরে এল। এই শেষ বাক্যটা আবারও নাটকীয় করে বলা হল, কিন্তু সে তো বোঝাই যাচ্ছে, এবং মোদ্দায় এই হল পুরো গপ্পো। লেখকর রীতিমতো গবেষণা করে ছবিছাব্বা দিয়ে বইতে লিখেছেন, আমার মতো ছ্যাবলা লোকেরা সেসব ছবি দিলে ফেবু লেখা বন্ধ করে দেবে, তাই দিলামনা। বইটা অবশ্য খুঁজেও পাচ্ছিনা, ওইসব হারারে-মারারে না পড়ে ইচ্ছে হলে নেটে খুজে পড়ে নিন।
তা, এ যদি সত্য হয়, তো এর থেকে আমরা কী শিখি? ভাঁজ দেখিয়ে সিডাকশন অতি প্রাচীন জিনিস, লাখ-লাখ বছরের পুরোনো। আর তা দেখে উত্তেজিত হওয়া, অর্থাৎ কিন অবজেকটিফিকেশানও অতি প্রাচীন। ইতিহাস, পিতৃতন্ত্র, মানবসভ্যতা এসবের আওতার বাইরে। কিন্তু এ ভেবেই আনন্দে নাচবেননা। অন্য অংশটাও ভেবে দেখুন। আসলে আপনি যা দেখে বা দেখিয়ে এত ফুর্তি পাচ্ছেন, সেটা কিন্তু আসলে যা ভাবছেন তা নয়. প্রক্সি মাত্র। কীসের? না, ছিছি পশ্চাদ্দেশের। সুন্দরীদের স্বপ্নসুন্দরী হরবখৎ বলা হয়ে থাকে, ফলে এখানে একটু ফ্রয়েড ঝাড়া যেতেই পারেন, যে, এখানে আপনার চিন্তায় ডিসপ্লেসমেন্ট হয়েছে। পশ্চাদ্দেশের জায়গায় এসেছে বিভাজিকা। নেহাৎই নাকের জায়গায় নরুণ। দুঃখ পাবেননা, কী করবেন, সবই কপাল থুড়ি বায়োলজি।
বলাবাহুল্য এর সত্যমিথ্যা আমার জানা নেই। কারোরই থাকার কথা না, কিন্তু সম্ভাব্য ব্যাখ্যা হিসেবে অন্য কিছু নেই মনে হয়। ফেবু খুলে মমতাশঙ্কর আর এই বিভাজিকাসমুদ্র দেখে বইটার কথা মনে পড়ল। লিখে ফেললাম।

লিখেছেন- সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায়

একসময় মানুষের ৬টি প্রজাতি ছিল, যার পাঁচটি পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। থেকে গেছে মাত্র একটি প্রজাতি - হোমো স্যাপিয়ান্...
29/12/2023

একসময় মানুষের ৬টি প্রজাতি ছিল, যার পাঁচটি পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। থেকে গেছে মাত্র একটি প্রজাতি - হোমো স্যাপিয়ান্স। কেন হোমো স্যাপিয়ান্স প্রজাতিটি টিকে গেলো আর অনেক বড়ো আকৃতির এবং অনেক বেশি শক্তিশালী "নিয়ান্ডারথাল" নামক মানুষের প্রজাতিটি বিলুপ্ত হয়ে গেলো তার কারণ খুঁজতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা বলছেন - তার প্রধান একটি কারণ হচ্ছে নিয়ান্ডারথাল মানুষ ছিল মূলত "সলিটারি" - মানে তারা একা একা বাঁচতে পছন্দ করতো। অন্যদিকে হোমো স্যাপিয়ান্স প্রজাতিটি সব সময় দল বেঁধে থাকতো।

জীব জগতে এটি নতুন কিছু নয়। একদিকে লেপার্ড যেমন সলিটারি আনিম্যাল, অন্যদিকে সিংহ, হায়েনারা থাকে দল বেঁধে। দল বেঁধে থাকার সুবিধে হলো - সেফটি ইন নাম্বারস। মানে একজন বিপদে পড়লে বাকিরা তাকে সাহায্য করতে পারে। সলিটারি আনিম্যালদের ক্ষেত্রে তেমন ঘটে না। ঠিক এই কারণেই হোমো স্যাপিয়ান্স একসময় দল বেঁধে মেরে শেষ করেছিল অনেক বেশি শক্তিশালী কিন্তু সলিটারি নিয়ান্ডারথাল প্রজাতিকে। নিয়ান্ডারথালরা সলিটারি প্রাণী হওয়ায় তারা তেমন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি। তাছাড়া দল বেঁধে থাকায় স্যাপিয়ান্স প্রজাতিটির খাদ্যের অভাব হয়নি এবং মহিলা, শিশু ও অসুস্থরা প্রয়োজনীয় প্রটেকশন পেয়েছে।

কিন্তু ঘোর নগরকেন্দ্রিক জীবনে এসে আমরা ক্রমশ ভুলে যাচ্ছি যে হোমো স্যাপিয়ান্স প্রজাতিটি সংঘবন্ধ জীব। নেচারে আমরা যে এখনো বিলুপ্ত হইনি তার কারণ আমরা দল বেঁধে ছিলাম। একা বাঁচার জন্য আমাদের তৈরী করা হয়নি। কাজেই মানুষ কোনো কারণে একা হয়ে গেলে, নেচার শরীরবৃত্তীয়ভাবে মানুষকে ফাইটিং মোডে নিয়ে যায়। একাকিত্বে ভোগা মানুষের উপর স্টাডি করে দেখা গেছে যে তাদের প্রেসার বেশি, সুগার লেভেল বেশি এবং হার্টবিটও বেশি। মানুষ তখন অপরিচিতদের থ্রেট হিসেবে দেখতে শুরু করে। তার থেকে একটি ভিসিয়াস সাইকেল তৈরী হয়। মানুষের ইমিউনিটি কমে যায়, ইনফ্লামেশন বেড়ে যায়, হার্ট ডিসিস, স্ট্রোক এবং প্রিম্যাচিওর ডেথের চান্স বেড়ে যায় প্রায় ৫৮% !

স্টাডি বলছে, বর্তমান পৃথিবীতে ৩৩% মানুষ একাকিত্বে ভোগেন - মানে প্রত্যেক তিনজনের একজন। তারা কিন্তু সবাই বয়স্ক নন। সবচেয়ে বেশি একাকী মানুষ থাকেন ব্রাজিলে, তারপর তুরস্ক এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত ! ডিমেনশিয়া, আলজাইমার, ডিপ্রেশন ভারতে যে প্রায় মহামারীর আকার ধারণ করেছে তার অন্যতম কারণ এই একাকিত্ব। সাইকোলজিস্টরা বলছেন একাকিত্ব মানে কিন্তু একা থাকা নয়। একাকিত্ব একটি "স্টেট অফ মাইন্ড" যেখানে মানুষটির মনে হচ্ছে সে একা, নির্বান্ধব, মন খুলে দুটি কথা বলার যার কেউ নেই।

তাহলে উপায় ? এই নিয়ে একটি সেমিনার অ্যাটেন্ড করলাম সেখানে ভারত-আমেরিকা-ইংল্যান্ডের নামকরা ডাক্তারবাবুরা নিদান দিলেন আরো বেশি বেশি "সোশ্যাল ইন্টারঅ্যাকশন এবং সোশ্যাল কানেক্ট" তৈরী করার। তারা বললেন হারিয়ে যাওয়া বন্ধুদের খুঁজে বের করে তাদের সঙ্গে দেখা করার। সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে বন্ধু সার্কেলকে বাড়ানো এবং রিয়েল ওয়ার্ল্ডে তাদের সঙ্গে বেশি বেশি সোশালাইজ করার।
কে জানতো, ছেলে-বুড়োদের সকাল-সন্ধেতে চায়ের দোকানের আড্ডা বা পাড়ার কাকিমা-জ্যেঠিমাদের "পাড়া বেড়ানো" বস্তুটিই আসলে সুস্থ থাকার চাবিকাঠি !

এই সেমিনারে এক বয়স্ক ভদ্রলোক নিজের জীবনের কথা বললেন। স্ত্রী মারা যাবার পর তিনি নিদারুন একাকিত্বে ভোগেন এবং ২০১৯ তে তার স্টেজ ওয়ান ক্যান্সার ধরা পড়ে। ভদ্রলোক তখন "আর ক'দিনই বা বাঁচবো, যাবার আগে সবার সঙ্গে দেখা করে যাই" মোডে চলে গিয়ে খুঁজে খুঁজে তার হারিয়ে যাওয়া আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং নিজের বাড়িতে তাদের ডেকে নিয়ে সকাল-সন্ধে আড্ডা বসান। ভদ্রলোক যে শুধু ক্যান্সার সারভাইভ করেছেন তাই নয়, তিনি বললে আমি এখন মানসিক ভাবে সম্পূর্নই সুস্থ। মজা করে আরো বললেন, বাড়িতে আড্ডা বসানোয় চা, সিঙ্গারা, মিষ্টি দিয়ে আতিথেয়তায় তার যে খরচ হয় সেটি ওষুধের খরচের ৩০%-ও নয়। ওটাকে তিনি ভালো থাকার ইনভেস্টমেন্ট হিসেবেই দেখেন !

রবি ঠাকুর সেই কবেই লিখে গেছেন "আরেকটিবার আয় রে সখা, প্রাণের মাঝে আয় / মোরা সুখের-দুখের কথা কব, প্রাণ জুড়াবে তায়" - ডিপ্রেশন ও নানাবিধ সাইকোলজিক্যাল রোগ থেকে বাঁচতে সোশ্যাল ইন্টারঅ্যাকশনের মাধ্যমে এই "প্রাণ জুড়োনোর" কোনো বিকল্প কিন্তু ডাক্তারবাবুরাও দিতে পারছেন না কেননা নেচার, হোমো স্যাপিয়ান্স প্রজাতিকে সেভাবে বানায়নি।

লেখাটি পেলাম Syamal Bhanjachaudhuri এর টাইমলাইনে।
লিখেছেন—আশাভরী সেন

16/12/2023

"স্যাপিয়েন্স" নামের বিখ্যাত বইটির লেখক ইউভাল হারারি আরেকটি দুর্দান্ত বই লিখেছিলেন - স্যাপিয়েন্সের জনপ্রিয়তায় যে বইটি হয়তো বেশি লোক পড়েননি। বইটির নাম "21 Lessons for the 21st century"। এই বইটিতে তিনি ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন যে খুব শিগগিরই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলেজেন্স বহু মানুষকে কর্মহীন করে দেবে - তখন পৃথিবীর বিপুল সংখ্যক হতাশ, কর্মহীন তরুণ-তরুণীদের কিভাবে মিনিংফুলি এনগেজ করে রাখা যাবে সেটাই সারা পৃথিবীর ভবিষ্যতের রাজনৈতিক নেতাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।

ইউভাল হারারির ভবিষ্যৎবাণী অক্ষরে অক্ষরে ফলে গেছে - আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এখন সত্যি সত্যি অন্য লেভেলে চলে গেছে আর এই বিপুল পৃথিবীর অসংখ্য হতাশ, কর্মহীন, অজস্র সময় পাওয়া মানুষের দল ফেসবুকে ক্লিক টু প্লে আর প্রতিদিন ই সেলফি আপলোড করে মিনিংফুলি ব্যস্ত রাখছে নিজেদের...

১৯৪১ সালে যে বাঙালি মেমেন্টো সংগ্রহের লোভে তার প্রিয় কবি রবীন্দ্রনাথের দাড়ি উপড়ে নিয়েছিল, ২০২৩ এ এসে সেই বাঙ্গালিই আবার ...
09/12/2023

১৯৪১ সালে যে বাঙালি মেমেন্টো সংগ্রহের লোভে তার প্রিয় কবি রবীন্দ্রনাথের দাড়ি উপড়ে নিয়েছিল, ২০২৩ এ এসে সেই বাঙ্গালিই আবার তাঁর লেখা গানের কথা উপড়ে নিচ্ছে ভোট বাক্সে ঢোকাবার জন্য!! অদৃষ্টের কী নিদারুণ পরিহাস!!

Address

16B, RAJA NABA KRISHNA Street
Kolkata
700005

Telephone

+919831814823

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when স্বপন দেব posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Practice

Send a message to স্বপন দেব:

Share