09/11/2024
অতিরিক্ত স্ট্রেস বা মানসিক চাপ হার্টের বিপদ ডেকে আনতে পারে। সাবধান হোন। ডা: প্রফেসর শুভ্র ব্যানার্জি। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ- অ্যাপোলো মালটি স্পেশালিটি হসপিটাল, কলকাতা।
হার্ট ভালো রাখার একটি বিশেষ উপায় হল শারীরিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার সঙ্গে সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখা।অনেক সময় আমরা বুঝতেও পারি না- দৈনন্দিন মানসিক চাপের মধ্যে থাকতে থাকতে অভ্যস্ত হয়ে যাই আর তা নি:শব্দে হার্ট অ্যাটাকের রিস্ক ফ্যাকটর হয়ে দাঁড়ায়।
১)কিভাবে স্ট্রেস বা মানসিক চাপ হার্টের বিপদ ডেকে আনে?
মানসিক চাপ রক্তে শর্করা বৃদ্ধি, কোলেস্টেরল বৃদ্ধি, উচ্চ রক্তচাপ এগুলির পরোক্ষ কারণ। এছাড়াও মানসিক চাপ থেকে ওজন বৃদ্ধি, অবসাদ, অপর্যাপ্ত ঘুম, ব্যায়াম বা শারীরিক কার্যকলাপ না করা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস তৈরী হওয়া, অতিরিক্ত মদ্যপান, ধূমপান এসবও হয়। এই সবগুলো ফ্যাকটর ক্রমশ হার্টের অসুখের জন্য রিস্ক ফ্যাকটর হয়ে দাঁড়ায়। এমনকি দেখা গেছে মানসিক চাপ খুব অল্প বয়সেও উপরে বলা কারণগুলি ঘটিয়ে হার্টের ক্ষতি করা শুরু করে।
২)মানসিক চাপ বা স্ট্রেস হবার লক্ষণ কিকি ?
অল্পেতেই বেশী রাগ হওয়া, অতিরিক্ত বিরক্তি প্রকাশ, খিটখিটে স্বভাব হয়ে যাওয়া, সদা অস্থিরতা বোধ করা, দুর্বল বোধ করা, হজম না হওয়া, ধূমপান মদ্যপান বৃদ্ধি, ঘুম কমে যাওয়া, সদা অধৈর্য ও অবসাদ গ্রস্ত বোধ করা, বুক ধড়ফড় করা, মন খারাপ করে থাকা, ঘন ঘন মাথা ব্যাথা করা ইত্যাদি অনেক কিছুই মানসিক চাপের লক্ষণ হতে পারে।
৩)মানসিক চাপ কি বিপদ ডাকতে পারে?
আসলে মানসিক চাপ নয়, আপনি মানসিক চাপকে কিভাবে নিচ্ছেন বা তার মোকাবিলা করছেন সেটা বেশী গুরুত্বপূর্ণ । মানসিক চাপের ফলে যদি শরীর ও মন দুইই ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবে নিশচয় তা বিপদের কারণ। কিন্তু মানসিক চাপের কারণ বুঝতে পেরে সেটাকে চ্যালেঞ্জের মতন নিয়ে তা থেকে বেরোবেন কি করে সেটা চেষ্টা করলে শরীর ও মন দুইই রেহাই পাবে।
৪)মানসিক চাপ কমাবেন কি করে?
নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম কিংবা যোগা করুন - এতে শরীর ও মন দুই ভালো থাকে।জীবনে যা ভালো লাগে যেমন বই পড়া গান শোনা বা আপনার কোনো বিশেষ হবি থাকলে তার জন্য সময় বের করুন। না বলতে শিখুন। নিজের ওপর অতিরিক্ত কাজ চাপাবেন না, যেটুকু সম্ভব সেটুকু করুন। চা কফি মদ্যপান অর্থাৎ যে কোনো উত্তেজক পানীয় পান করবার পরিমাণ কমান। ধূমপান কমান বেশী করে জল খান। বন্ধু বান্ধব আতমীয় স্বজন পরিবার যাঁদের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালো লাগে তাঁদের সঙ্গে সময় কাটান বেশী করে। অস্বাস্থ্যকর খাবার কমান। বেশী তৈলাক্ত মসলাযুক্ত খাবার কমিয়ে দিন। সঠিক পরিমাণে ঘুমোচছেন কিনা দেখুন। কাজের ফাঁকে পাওয়ার ন্যাপ বা একটু ঘুমিয়ে নিয়ে দরকার হলে ঘুমের পরিমাণ পুষিয়ে নিন। বেশী রাত জাগা কমান। মেডিটেশন করতে পারেন - এতে অনেকে ভালো ফল পেয়েছেন। শরীরের ওজন বেশী থাকলে চেষ্টা করে কমিয়ে ফেলুন। বেশী রাগ মন খারাপ ইত্যাদি হলে তা কমাতে হবে কারণ এতে মানসিক চাপ বৃদ্ধি হয়।