07/08/2025
বুকের কোন পাশে ব্যথা কেন হয়: কারণ, সতর্কতা ও করণীয়
বুকের ব্যথা একটি সাধারণ কিন্তু ভীতিকর উপসর্গ। কারণ এটি শুধু হৃদরোগ নয়, বরং শ্বাসযন্ত্র, হজমতন্ত্র বা মাংসপেশী সংক্রান্ত সমস্যার ইঙ্গিতও দিতে পারে। তাই বুকের ব্যথা কোথায় হচ্ছে এবং কেমন ধরনের তা বোঝা অত্যন্ত জরুরি। নিচে বুকের বিভিন্ন অংশে ব্যথার সম্ভাব্য কারণ এবং করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
---
🟧 বুকের বাম পাশে ব্যথা
বাম পাশে ব্যথা সাধারণত হৃদযন্ত্র সংক্রান্ত সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। এর মধ্যে রয়েছে:
হার্ট অ্যাটাক বা অ্যাঞ্জাইনা: এই ধরণের ব্যথা ধীরে ধীরে শুরু হয় এবং বাম কাঁধ বা বাহুতে ছড়িয়ে পড়ে।
ফুসফুসের ইনফেকশন: যেমন নিউমোনিয়া বা প্লুরিসি।
পেশির টান বা নার্ভ চ্যাপা পড়া: হঠাৎ করে ভারী কিছু তোলার ফলে।
প্যানিক অ্যাটাক: মানসিক চাপ বা উদ্বেগ থেকে।
সতর্কতা: যদি ব্যথার সঙ্গে বমি বমি ভাব, শ্বাসকষ্ট, ঠাণ্ডা ঘাম হয় – তাহলে এটি হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে।
---
🟧 বুকের ডান পাশে ব্যথা
ডান পাশে ব্যথা সাধারণত নিচের সমস্যাগুলোর কারণে হতে পারে:
ফুসফুসের সমস্যা: যেমন ডান ফুসফুসে সংক্রমণ বা বাতাস জমা হওয়া (প্লুরাল ইফিউশন)।
লিভার বা পিত্তথলির প্রদাহ: ফ্যাটি লিভার, হেপাটাইটিস বা গলব্লাডার স্টোন।
গ্যাস বা অ্যাসিড রিফ্লাক্স: হজমে সমস্যা হলে ডান পাশে ব্যথা হতে পারে।
মাংসপেশির টান: বিশেষ করে কাঁধ বা বুকের ডান দিকের পেশিতে টান লাগলে।
---
🟧 বুকের উপরের অংশে ব্যথা
পেটের গ্যাস উপরের দিকে উঠে এলে
স্ট্রেস বা প্যানিক অ্যাটাক: অনেক সময় মনের চাপ শরীরে এইভাবে প্রতিফলিত হয়।
শ্বাসনালীর সংক্রমণ: যেমন ব্রঙ্কাইটিস বা ইনফ্লুয়েঞ্জা।
---
🟧 বুকের নিচের অংশে ব্যথা
গ্যাস্ট্রিক, আলসার: দীর্ঘদিনের হজমের সমস্যা বা অতিরিক্ত এসিড তৈরি।
পিত্তথলির পাথর: ডানদিকে নিচের দিকে ব্যথা হয়।
নিচের পাঁজরের পেশিতে টান: শরীর মোচড় দিলে বা হঠাৎ বাঁকালে।
---
🟧 বুকের মাঝখানে ব্যথা
হার্ট অ্যাটাকের সাধারণ লক্ষণ
অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা GERD
ইসোফেগাইটিস (খাদ্যনালীর প্রদাহ)
শ্বাসনালীর সংক্রমণ বা ব্রঙ্কাইটিস
---
⚠️ কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?
✅ ব্যথা যদি ১৫ মিনিটের বেশি থাকে
✅ ব্যথা কাঁধ, চোয়াল বা বাহুতে ছড়ায়
✅ সঙ্গে শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরা বা বমি বমি ভাব হয়
তাহলে দেরি না করে তৎক্ষণাৎ কাছের হাসপাতালে যান।
---
🔍 উপসংহার
বুকের ব্যথা ছোট কিছু কারণে হতে পারে, আবার এটি হতে পারে বড় বিপদের ইঙ্গিত। তাই ব্যথার প্রকৃতি, অবস্থান এবং অন্যান্য উপসর্গগুলো লক্ষ্য করা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক পরিস্থিতিতে গাফিলতি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।