23/06/2025
-: ফ্যাটি লিভার কি, সমস্যা ও সমাধান :-
লিভার হচ্ছে আমাদের শরীরের বৃহত্তম আভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলির অন্যতম। একটা সুস্থ স্বাভাবিক লিভার প্রতি মিনিটে 1.7 লিটার রক্ত ফিল্টার করতে পারে। লিভার খাবার হজম করতে, আমাদের শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ এবং বিষ অপসারণ করতে এবং শরীরের শক্তি সঞ্চিত করতে আমাদের সাহায্য করে। লিভারের ভিন্ন ভিন্ন 500 টি কাজ রয়েছে ।
ফ্যাটি লিভার কি?
লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমা হয়ে রোগ সৃষ্টি করা কে বলে ফ্যাটি লিভার। ইহা দুই ধরনের -- অ্যালকোহলিক বা মদ্যঘটিত ফ্যাটি লিভার রোগ যা অত্যধিক মদ্যপানের কারনে ঘটে এবং নন্-অ্যালকোহলিক (অ-মদ্যঘটিত) ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD) যা বাজে খাদ্যাভাসের কারনে ও অতিরিক্ত শর্করাযুক্ত খাবার গ্রহনের জন্য লিভারের চর্বির স্তূপ গড়ে ওঠার কারনে ঘটে। এখন বাচ্ছাদের মধ্যেও নন্-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার দেখা যাচ্ছে। স্থূলতা ও ডায়াবেটিসের ক্রমবর্ধমান ঘটনার সাথে সাথে নন্-অ্যালকোহলিক ডিজিজ লক্ষনীয়ভাবে প্রকট হয়েছে। স্থূল (মোটা) ও ডায়াবেটিস থাকা জনসাধারণের মধ্যে অনেক বেশি হয়। এই অবস্থায় যদি অনিয়ম করা হয় তাহলে ধীরে ধীরে mild, moderate, severe থেকে শেষে লিভার সিরোসিস (লিভারের অপরিবর্তনীয় ক্ষত চিহ্ন সহ লিভারের ক্ষতি) হয় এমনকি লিভার ক্যান্সার ও হয়। এই পরিস্থিতিতে লিভার প্রতিস্থাপন (transplant) করতে হয় কিন্তু লিভার প্রতিস্থাপন সবাই করতে পারে না। ফলে লিভার নষ্ট হয়ে যায়। আমরা বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা অর্থাত্ SGPT, SGOT, LFT ও USG করে জানতে পারি লিভার কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লিভার 80% থেকে 90% ক্ষতি না হলে বুঝতে পারিনা লিভারের সমস্যা। যখন বুঝতে পারি তখন দেখা যায় যে অনেক টা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে। কারন লিভার অনেক অত্যাচার সহ্য করতে পারে তাই আমরা প্রথমে বুঝতে পারি না। একেবারে শেষে এসে বুঝতে পারি।
-: ফ্যাটি লিভারের উপসর্গ :-
ফ্যাটি লিভার হল একটা নিঃশব্দ রোগ এবং কোনো উল্লেখযোগ্য উপসর্গ সৃষ্টি করে না। সাধারণ ক্লান্তি,দুর্বলতা,খিদে কমে যাওয়া, বমি হওয়া এবং পেটের উপরের দিকে ডান দিকে একটা সামান্য অস্বস্তি উপস্থিত থাকতে পারে। বেশিরভাগ লোকের ক্ষেত্রে কোনো লক্ষনীয় উপসর্গ থাকে না যা রোগটার উপস্থিতি জানান দিতে পারে। যখন বাড়াবাড়ি হয় তখন জন্ডিসের মতো সিরোসিসের লক্ষনের ইঙ্গিত দিতে পারে। ত্বক এবং চোখের সাদা অংশ হলুদ হতে পারে। আরেক টা লিভারের ক্ষতির লক্ষন হল অ্যাসাইটিস এবং ইডিমা অর্থাত্ পেটে জল জমে পেট ফুলে যায়।
-: লিভারে ফ্যাট জমে কিভাবে :-
আমরা যা খাই বিশেষত বিভিন্ন ধরনের শর্করা জাতীয় খাবার যেমন ভাত,রুটি,মুড়ি,মিষ্টান্ন, ফাস্টফুড ইত্যাদি পেট থেকে লিভারে সুগার বা চিনি হিসেবে প্রবেশ করে। লিভার সেই চিনি কে প্রথমে এনার্জি হিসেবে কাজে লাগায়। তারপর বাড়তি অংশ গ্লাইকোজেন ও পরে ফ্যাট হিসেবে লিভারের জমতে থাকে। এইভাবে ধীরে ধীরে লিভারে ফ্যাটের স্তূপ গড়ে ওঠে। এই অবস্থা কে বলে ফ্যাটি লিভার ।
-: লিভার কে ভালো রাখতে কি করতে হবে :-
লিভারের একটি কাজ হল ডিটক্সিফিকেশন করা অর্থাত্ আমাদের শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ এবং বিষ অপসারণ করা। আমরা যে ন্যাচারাল খাবারগুলো খাই তার জন্য লিভার কে মডিফাই করতে হয় না কিন্তু যে সমস্ত প্রসেস ফুড,ফাস্টফুড, Preservative দিয়ে সংরক্ষণ করা সমস্ত ধরনের প্যাকেটজাত বারকোড খাবার যেমন চকোলেট,চিপস,চিড়ে ভাজা উত্যাদি, ফরমালিন মিশ্রিত খাবার খাই সবই লিভার কে শরীরের কোষের ব্যবহারের উপযোগী করতে হয় । এই সমস্ত খাবার গুলো শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। তাই ফ্যাটি লিভারের রোগীদের এই ধরনের খাবার খাওয়া নিষেধ।
অ্যালকোহল মারাত্মক ক্ষতিকর ফ্যাটি লিভারের রোগীদের ক্ষেত্রে। ফ্যাটি লিভারের রোগী দের অ্যালকোহল নেওয়া বন্ধ করতে হবে। সুগার ও সুগারজাত খাবার খাওয়া বন্ধ করতে হবে। শাক-সব্জি বেশি করে খেতে হবে। শাক-সব্জি লিভারের পক্ষে ভালো।
লিভার কে ভালো রাখতে লিভার কে বিশ্রাম দিতে হবে কিন্তু আমরা লিভার কে বিশ্রাম দিই না। লিভার কে বিশ্রাম দিতে গেলে আমাদের কে Fasting করতে হবে বা উপবাস করতে হবে বা রোজা রাখতে হবে। বিশ্রাম অবস্থায় লিভার থেকে চর্বি গলা শুরু হয়। যেহেতু আমরা জানি দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকলে বা শর্করা জাতীয় খাবার কম করে খেলে ইনসুলিন লোয়ার লেভেলে থাকে ফলে ফ্যাট বার্ন হয়। তাই দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থেকে ইনসুলিন কে লোয়ার লেভেলে রেখে শরীর কে ফ্যাট গলানোর সুযোগ করে দিতে হবে। লিভারের বিশ্রাম অবস্থায় লিভারের হিলিং হয়, রিপেয়ারিং হয়। তাই ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি পেতে লিভারের Threat গুলো কে কমাতে হবে অর্থাত্ শর্করা জাতীয় খাবার কম করে খেতে হবে। অনেকেই ফ্যাটি লিভার থেকে বাঁচতে ফ্যাট রেসট্রিকশন করছেন। কিন্তু গুড ফ্যাট বা ন্যাচারাল ফ্যাট লিভার কে convert করতে হয় না। তাই তাই গুড ফ্যাট ব্যাড ফ্যাট বিবেচনা না করে সব ধরনের বন্ধ করা ঠিক না। যারা শর্করা জাতীয় খাবার কম করে খায় তাদের জন্য গুড ফ্যাট খাওয়া ঝুঁকির নয়। বিভিন্ন ধরনের মাছ ও মাছের তেল, কাঠ বাদাম Omega 3 fatty acids সমৃদ্ধ তাই এই খাবার গুলো ফ্যাটি লিভারের রোগী দের জন্য খাওয়া ভালো। এছাড়াও কফি,গ্রিন টি,কাঁচা রসুন, শাক-সব্জি তে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে তাই এই খাবার গুলো ফ্যাটি লিভারের রোগী দের জন্য খাওয়া ভালো।
-: লিভার ভালো রাখতে এক্সারসাইজ:-
সহজ কিছু ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ, অ্যারোবিক এক্সারসাইজ, হাঁটাহাটি, বডি ওয়েট ট্রেনিং এর মাধ্যমে নিজের ওজনের 5% কমাতে পারলে ফ্যাটি লিভারের গ্রেড কমবে। 7% থেকে 10% ওজন কমাতে পারলে লিভারের প্রদাহ কমবে ও লিভার রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তাই এক্সারসাইজ ও সঠিক ডায়েটিং এর মাধ্যমে ধীরে ধীরে ওজন কমাতে পারলে ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। সুগার ও কোলেস্টেরলকেও খুব ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি পেতে হলে। লিভার কে অনেক কাজ করতে হয় তাই লিভার কে ভালো রাখতে হলে যেমন দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থেকে লিভার কে রেস্ট দিতে হবে তেমনি ন্যাচারাল ফুড অর্থাত্ গুড ফ্যাট যেমন এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ ওয়েল, এক্সট্রা ভার্জিন কোকোনাট ওয়েল দিয়ে শাক-সব্জি রান্না করে খেতে পারলে লিভারের পক্ষে খুবই ভালো। অর্থাত্ ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি পেতে হলে সঠিক ডায়েট মেনে চলতে হবে ও এক্সারসাইজ করতে হবে।
চেম্বার :- রণজিত মেডিসিন, গোড়াবাজার,বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ :- 7557011188
9476440209 (ফোন করুন সকাল 9 টা থেকে রাত 10 টার মধ্যে )
নিকটবর্তী স্টেশন খাগড়াঘাট রোড, বহরমপুর কোর্ট স্টেশন।
নিউ জনসেবা ফার্ম্মেসী
নবগ্রাম, মুর্শিদাবাদ :- 8373045397,
7810827732 ( ফোন করুন সকাল 9 টা থেকে রাত 10 টার মধ্যে )
নিকটবর্তী স্টেশন - খাগড়াঘাট রোড, সাগরদিঘী স্টেশন, বহরমপুর কোর্ট।
জনসেবা ফার্ম্মেসী
পাঁচগ্রাম দক্ষিণ মোর,নবগ্রাম, মুর্শিদাবাদ:-8436617438 .
9586854810(ফোন করুন সকাল 9 টা থেকে রাত 10 টার মধ্যে )
নিকটবর্তী স্টেশন খাগড়াঘাট, রামপুরহাট জংসন।
নুরিমা ফার্ম্মেসী
জঙ্গীপুর, রঘুনাথগঞ্জ হসপিটালের 1 নম্বর গেটের সামনে, মুর্শিদাবাদ :-8926565992 ( ফোন করুন সকাল 9 টা থেকে রাত 10 টার মধ্যে )
নিকটবর্তী স্টেশন জঙ্গিপুর রোড।
"সুগারের রোগীরা সুগার পরীক্ষা করে রিপোর্ট ও সুগারের ওষুধ সঙ্গে নিয়ে আসবেন।"
Dr.Minhazuddin Siraj
BAMS(Calcutta University)
Studied from J.B.Roy State Ayurvedic Medical College and Hospital, Kolkata.