03/08/2025
*শ্রবণ যন্ত্রের প্রোগ্রামিং-এর জন্য অডিওলোজিস্ট প্রয়োজন হওয়ার প্রধান কারণগুলো হলো—*
1. শ্রবণ পরীক্ষা ও নির্ভুল ডায়াগনোসিস
অডিওলোজিস্ট আগে শ্রবণ পরীক্ষা (Pure Tone Audiometry, Speech Audiometry, Tympanometry ইত্যাদি) করে ঠিক করেন আপনার কোন ফ্রিকোয়েন্সিতে কতটুকু শ্রবণহানি রয়েছে।
এই ফলাফল ছাড়া প্রোগ্রামিং করলে শব্দের ভলিউম বা ফ্রিকোয়েন্সি সেটিংস সঠিকভাবে মেলে না।
2. ব্যক্তিগত (Customized) সেটিংস
প্রতিটি মানুষের শ্রবণহানি আলাদা ধরনের হয়।
অডিওলোজিস্ট সফটওয়্যার ব্যবহার করে আপনার অডিওগ্রাম অনুযায়ী শ্রবণ যন্ত্রে গেইন, কমপ্রেশন, নয়েজ রিডাকশন, দিকনির্দেশক মাইক্রোফোন সেটিংস ইত্যাদি কাস্টমাইজ করে দেন।
3. ফাইন টিউনিং (Fine Tuning)
প্রথমবার সেট করার পর অনেক সময় ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পরিবর্তন প্রয়োজন হয় (যেমন কণ্ঠস্বর বেশি শোনা, ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজ কমানো, মিউজিক শোনার জন্য আলাদা প্রোগ্রাম ইত্যাদি)।
অডিওলোজিস্ট এই ফাইন টিউনিং করে যন্ত্রটিকে আরামদায়ক ও কার্যকর করেন।
4. প্রযুক্তিগত দক্ষতা
আধুনিক ডিজিটাল শ্রবণ যন্ত্রে ব্লুটুথ কানেক্টিভিটি, অ্যাপ কন্ট্রোল, ডিরেকশনাল মাইক্রোফোন, ফ্রিকোয়েন্সি শিফটিং ইত্যাদি উন্নত ফিচার থাকে, যা সঠিকভাবে সেট করতে প্রশিক্ষিত ব্যক্তির প্রয়োজন হয়।
5. শ্রবণ পুনর্বাসন ও পরামর্শ
শুধু যন্ত্র বসালেই শ্রবণ উন্নতি হয় না, এর সাথে শ্রবণ প্রশিক্ষণ, কনভারসেশন টিপস, এবং যন্ত্র রক্ষণাবেক্ষণের পরামর্শ দরকার হয়, যা অডিওলোজিস্ট দেন।
অডিওলোজিস্ট ছাড়া শ্রবণ যন্ত্র প্রোগ্রাম করলে যে সমস্যাগুলো হতে পারে—
1. শব্দের মান খারাপ হওয়া
ভুল ফ্রিকোয়েন্সি সেটিংসের কারণে কিছু শব্দ বেশি জোরে, কিছু শব্দ কম শোনা যাবে।
নিজের কণ্ঠস্বর অস্বাভাবিক বা ইকো শোনাতে পারে।
2. শ্রবণ ক্লান্তি (Listening Fatigue)
শব্দের মাত্রা সঠিকভাবে না মেলালে কানে চাপ পড়তে পারে, মাথা ব্যথা বা ক্লান্তি আসতে পারে।
3. গুরুত্বপূর্ণ শব্দ না শোনা
ভুল প্রোগ্রামিংয়ে ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজ বেশি শোনা যেতে পারে, আবার দরকারি কথোপকথন হারিয়ে যেতে পারে।
4. শ্রবণহানির আরও ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি
অতিরিক্ত ভলিউম বা ভুল গেইন সেটিংস কানের ভেতরের সংবেদনশীল হেয়ার সেলকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
5. পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবহার অস্বস্তিকর হওয়া
রেস্টুরেন্ট, রাস্তা, অফিস বা মিউজিক শোনার জন্য আলাদা প্রোগ্রাম না থাকলে অনেক সময় যন্ত্র ব্যবহার বিরক্তিকর হয়ে ওঠে।
6. ফিচারের অপচয়
আধুনিক শ্রবণ যন্ত্রে থাকা ব্লুটুথ, টিনিটাস মাস্কার, দিকনির্দেশক মাইক্রোফোন, ফ্রিকোয়েন্সি ট্রান্সপজিশন ইত্যাদি ফিচার সঠিকভাবে ব্যবহার করা যাবে না।
7. রক্ষণাবেক্ষণ সমস্যা
সফটওয়্যার আপডেট, ব্যাটারি বা রিচার্জ সিস্টেম অপ্টিমাইজেশন, এবং কানেক্টিভিটি সমস্যা সমাধান কঠিন হয়ে যাবে।