
27/08/2025
মুঠো ফোনে মগ্ন শৈশব
গত ১৫ দিনে দুটি বাচ্চা পেলাম যারা এসেছিল লাল চোখ , চোখ পিটপিট, চোখ জ্বালা নিয়ে। মা দের জিজ্ঞেস করে জানলাম তারা মোবাইলের দিকে তাকিয়ে দিনে চার ঘণ্টার বেশি সময় কাটায়। না দিলেই খুব ঝামেলা করে তাই একার সংসারে মায়েরাও দিতে বাধ্য হন।
মোবাইল বা টিভির দিকে তাকালে স্বাভাবিক নিয়মেই আমাদেরকে চোখের পাতা কম পড়ে। চোখের পাতা পড়ার ফলে আমাদের কর্নিয়া, কনজাঙ্কটিভা শুকিয়ে যেতে পারে না। সেটাই যদি কম পড়ে তাহলে ধীরে ধীরে উপরের ওই আস্তরণ গুলো শুকিয়ে গিয়ে ' ড্রাই আই ' তৈরি হয়।
এছাড়াও বেশি মোবাইল দেখার ফলে চোখে পাওয়ার (myopia)ও আসতে পারে।
এ তো গেল চোখের কথা। এছাড়াও
১) ঘাড় ( text neck) ও কোমরে ব্যাথা হতে পারে।
২) কথা বলার শুরু টা দেরি করে হতে পারে ।
৩) স্ক্রীন থেকে নির্গত নীল আলোর প্রভাবে ঘুম আসতে দেরি হতে পারে ।
৪) ধৈর্য্য (attention span) কমে যায় ও উগ্রতা বেড়ে যায়।
৫) শারীরিক পরিশ্রম , খেলাধুলা কমে যাওয়ার ফলে মোটা হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়।
৬) ছোটদের দেখার কথা নয় এমন জিনিস দেখে ফেলার ফলে মনে গভীর ক্ষত তৈরির সম্ভাবনা থাকে।
কলি যুগে মোবাইল,টিভি,ল্যাপটপ না দেখে শৈশব কাটবে এমন কি ভাবা যায় ?
তাই দেখতে হলে বাবা মায়ের সাথে শিক্ষামূলক কিছু দেখুক তবে তা অবশ্যই খাওয়ার আর শোয়ার সময় না।
WHO আর American Academy of Pediatric বলে :
২ বছরে নিচের শিশুদের মোবাইল দেখাবেন না( ভিডিও কল ছাড়া)।
২-৫ বছরের শিশুরা দেখতে পারে খুব ভাল কোন জিনিস কিন্তু দিনে অবশ্যই তা যেন এক ঘণ্টার কম হয়।
৬-১২ বছরের শিশুরা খেলা, পড়া, ঘুম কম্প্রোমাইজ না করে যদি কাজের কিছু করে তো করতে পারে।
শেষে একটা কথাই বলি। বিজ্ঞানের অনবদ্য আবিষ্কারের উদ্দেশ্য ছিল জীবন ভালো করা, অসুস্থতা তৈরি না।
(ছবিটি কোলাঘাটের পুরানো শরৎ সেতুতে)