17/08/2024
প্রতিবাদ করি
হে ভব কান্ডারী..✊✊
আজকে আমাদের কালো দিন। চিকিৎসক মহলের বনধ। কারন সবার জানা। সেটা আর লিখছি না। লিখছি আমাদের চারপাশে থাকা কিছু ঘুনধরা মানসিকতাকে নিয়ে। যারা না বদলালে এই দিন আমাদের বারবার দেখতে হবে বিভিন্ন নামে বিভিন্ন রকমে। কেউ মানসিক চাপে খুন হবে একদিন। কেউ আত্মহত্যা করবে। কেউ একদিন শারীরিকভাবে নির্যাতন ও ধর্ষন হবে কেউ রোজ ধর্ষন হবে মানসিকভাবে। অপ্টোমেট্রিতে এই বাংলায় যে কি দূরবস্থা তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। একটা সরকারি কাউনসিল অবধি নেই আমাদের। গাইডলাইন যা আসে সেন্ট্রালের আসে।আমরা ফলো করি বা মেনে চলি। চাকরি! ১৮ হাজার দেয় চুক্তিভিত্তিক তাও অপথালমিক অ্যাসিস্টান্ট পোষ্টে ডিপ্লোমা হোল্ডারদের। আমাদের ব্যচেলরদের নিয়োগ হবে এমন বিজ্ঞপ্তি 2023 এর সেপ্টেম্বরে একটি বের হয়। তার খবর নেই আর। হচ্ছে হবে। এই চলছে। তাই সরকারি কিছু নেই আমাদের যা আছে সব বেসরকারী। যেখানে যতটা ভালো আছে খারাপ আছে তার দশগুন। চারবছর আটটি সেমেষ্টার ও একটা হসপিটাল ইন্টার্নশিপের পর আমাদের বেসরকারী মহলে চাকরি জোটে ৮-১৫হাজার Salary তে বেসরকারী হাসপাতাল ও ১২-২০ হাজার salary তে বেসরকারী অপ্টিকাল চেনে। সেখানে কাজতো হয় তার সাথে আর কি কি হয় তা নিম্নরূপে বর্ণনা করা হলো-
১)ব্যবসা হয়। তুমি যত ছানি পারো ক্যাম্প করে তুলে এনে হাসপাতালে দাও। ছানি না থাকলেও বলো ছানি আছে। কোনোভাবে যদি একটু মাইনাস লেন্স দিয়ে দূরে দেখিয়েছো আর ছানির রোগী হাত থেকে ফসকেছে তো তোমার চাকরি যাবেই।
২)ব্যবসা হয়।তুমি ভিশন সেন্টারে বসে সেখানের একজন মাধ্যমিক পাশ ম্যানেজারের কথায় উঠবে বসবে।সে যদি তোমাকে দূরের পাওয়ার দিতে মানা করে তবে ভূলেও দেবেনা। সে রেডিমেড কাছের পাওয়ারের চশমা এনেছে ৪০ টাকায় কিনে। সেওটা ৪০০তে বেচবে কি করে দূরের পাওয়ার দিলে। তাই দূরে দেখতে পায়না মানেই ছানি আর কাছে দেখতে পায়না মানেই ড্যামেজারের চশমা। মুখে টুঁ শব্দটি করবে -তোমার চাকরি যাবে।
৩)মগজধোলাই হয়। তুমি অমুক হাসপাতালে কাজ করলে বাইরে চেম্বার করতে পারবেনা। কারন সেখানকার সার্জেন রাও তাইই করেন। আরে ওনারা নন প্রাকটিসিং জন্য একবারে প্রায় দু লাখটাকা মাসে নিয়ে নেন। সেখানে মাত্র বিশ হাজারি একটা অপ্টোম এই নিয়ম মেনে ভাতে মরবে কেন! না কিচ্ছুটি বললেই তোমার চাকরি যাবে। এমন অবস্থা করা হবে তোমার সিভির যে কোলকাতার কোথাও কোনো চোখের হাসপাতালে তুমি চাকরি পাবে না।
8)মগজধোলাই হয়।তুমি এখানে ইন্টার্নশীপ শেষ করেছো ঠিক আছে কিন্তু তুমি কাজ শেখোনি।(নির্লজ্জের বাচ্চারা শিকার করবে না যে তোমার কাজ না শেখাটা আসলে আমাদেরই অপদার্থতা) তাই ছ মাস ফ্রি সার্ভিস দাও বা অর্ধেক মায়নায় কাজ করো। রাজি থাকলে আগে ছ মাস পর সার্টিফিকেট পাবে। নয়তো ফল্ট দেখিয়ে তোমার কেরিয়ারের সাড়ে বাড়ো বাজানো হবে।
৫)মানসিক অত্যাচার হয়।হঠাৎ সব কলিগের স্যালারি বা বোনাস নিয়মমাফিক আসবে। তোমারটা আসবে না। তুমি যাবে অফিসে,বলবে বসের সাথের তোমার রেপো ভালো করতে পারোনি তাই আগে উনাকে সন্তষ্ট করো। নতুন কেউ একটু ভালো রিফ্রাকশন বা বায়োমেট্রি করলে যখনই রোগীরা প্রসংসা করবে তখনই সিনিয়রমহল অসন্তষ্ট হয়ে বসের কান ভাঙাবে নানা ভাবে। নতুন কেউ ভালো ডিসিস ট্রিটমেন্ট জানলেতো আরও বড়দোষ। ক্ষমানেই। কথায় কথায় বলবে তুমিতো সার্জেন। তারপর দমাবে তোমার এইনেই ওই নেই এই সেই সাত সতেরো বলে। লজ্জা থাকে যখন একজন ষাট বছর বয়সী সার্জেনের দালাল নতুন অপ্টোমকে দু কিলোমিটারের মধ্যে কোনো চেম্বার থেকে তুলে দেয়।এমনকি ফোনে হুমকি পর্যন্ত দেয় মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দেবার।
৬)মানসিক অত্যাচার হয়। যখন টেষ্ট লেখার চাপ আসে। যার থেরাপি দরকার নেই তাকেও থেরাপি দিতে চাপ দেয় মাধ্যমিক পাশ নন্দু ফন্দু ম্যানেজারকে এর জন্যে একটু রাগদেখালেই প্রতিশোধ নিয়ে নেয়। এমনকি কিছু রিসেপশনিষ্টের এতো ক্ষমতা যে তারা একজন গ্রাজুয়েট অপ্টোমেট্রিষ্টকে এসে বলে দেয় কাকে পাওয়ার দিতে হবে আর কাকে টেষ্ট। সেই নন্দু ফন্দু ম্যানেজার ক্যাম্পে লেডি অপ্টোম নিয়েগিয়ে যখন দেখে শতাধিক মানুষ বিকেলের ক্যাম্প,রাত হয়ে যাবে। নিজে গা ঢাকা দেয় অজুহাত দেখিয়ে। ক্যাম্প শেষে সেই লেডি অপ্টোম হাতে ট্রায়াল বক্স এবং আরও যা আছে সব হাতে,কাধে নিয়ে একা একা বাড়ি /সেন্টারে ফেরে। ভয় পায়। রাস্তায় আততায়ীর ভয়। চাকরি যাবার ভয়। আরও কত কি। এমনকি আজকে স্ট্রাইকের দিনেও একটি বেসরকারী হাসপাতাল তাদের ভিশন সেন্টার খোলারেখে অপ্টোমকে অনিচ্ছা সত্বেও বসতে বাধ্য করেছে।
আরও আছে। প্রজেক্টের নামে,প্রাকটিকাল নম্বরের নামে,ভালো ইন্টার্নশীপ পেতে এমনকি সেই ইন্টার্নশীপে মাঝরাতে বায়োমেট্রি করার নামে অনেক নোংরামি হয়। সবসময় শারীরিক যে হতে হবে তার কি মানে। মানসিক ধর্ষনের শিকার এই বাংলার সমগ্র অপ্টোমেট্রি ডিপার্টমেন্ট। সব প্রমান আছে। প্রচুর screesnshot, প্রচুর ভয়েজ মেসেজে আর্তনাদ কান্না। কেউ সাহস করে চাইবেন সেটা যদিও দুঃসাহস হবে। সত্যি বলছি একটা রেকর্ডিং একরাত ঘুমোতে দেয়না। শেষ চার বছরের একসাথে দিলে সহ্য করতে পারবেন তো! পারলে চাইবেন।
সবই হচ্ছে হবে।
এদিকে কতবার কতভাবে ধর্ষন হলে তাকে ধর্ষিতা বলা যায়?
-কে রাখে খোজ!
অবিলম্বে এই অচলায়তনের পরিবর্তনের দাবি জানাই। এই নোংরা কর্মক্ষেত্রের interpersonal politics এর মুখে আগুন। ধিক্কার জানাই।
নীচের ছবিতে একজন তিলোত্তমা বা অভয়ার জীবনের করুন সত্যি তুলে ধরা। কত অভয়া কত তিলোত্তমা তারার মতো খসে যায় রোজ বাস ট্রাম লোকাল ট্রেনে -কে রাখে খোজ!
এই RG KAR হাসপাতালের নির্মম হত্যাকান্ডে ও ধর্ষনের দ্রুত বিচার চাই। এমন শাস্তি হোক যাতে উপরের অত্যাচারি দল বোঝে যে কি হতে পারে ফলাফল।