12/03/2022
কলকাতা যেমন একদিকে প্রেমের শহর, ভালবাসার শহর, রূপকথার শহর... তেমনই সেবারও শহর।সারা বিশ্বের মধ্যে একমাত্র শহর ,যেখানে সম্পূর্ণ অপরিচিত মানুষের জন্যও ভাবনা আছে। দূর্ঘটনায় আহতকে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া আছে।এক বোতল রক্তের জন্য সমাজ মাধ্যমে তোলপাড় আছে।অচেনা অসুস্থের জন্য রাতজাগা আছে।এ শহর মাদার টেরেজার শহর।তাই তো কলকাতা কল্লোলিনী তিলোত্তমা।
গত দুবছরে সারা পৃথিবীর সাথে বদলে গেল কলকাতাও।করোনা কাল মানুষকে চোখ রাঙালো-"একা থাকো।গন্ডি রাখো।"চারিদিকের দমবন্ধ করা আতঙ্কের পরিস্থিতিতে, মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়াতে ভয় পেল। সামাজিক দূরত্বের শাসন বয়ে আনলো একাকীত্ব আর অসহায়তা।এর সাথে যুক্ত হল অসংখ্য মানুষের রুজি-রোজকার বন্ধ হয়ে কর্মহীন হয়ে পরা।
এর সাথে বেশিরভাগ সরকারী হাসপাতাল... কোভিড হাসপাতালে পরিনত হবার ফলে ;সরকারি হাসপাতালের ভরসায় থাকা মানুষগুলি পড়লেন মহাবিপদে।যেখানে দুবেলা খাবার যোগাড় করতেই নাস্তানাবুদ অবস্থা...সেখানে কোন নার্সিং হোম বা 'প্রাইভেটে' চিকিৎসক দেখানোর আকাশ ছোঁয়া খরচ তারা সামলাবেন কিভাবে!
আর এই সমস্যাটা নাড়া দেয় দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা সুজয় রায়ের ব্যাক্তিগত ভাবনায় , যার ফসল হিসেবে কলকাতা শহর এ সংযোজিত হল এক নবতম পালক। এক অভিনব উদ্যোগ হিসাবে পথচলা শুরু এগারো টাকার "ডাক্তার বাবু" ক্লিনিক এর।এখানে মাত্র এগারো টাকার বিনিময়ে প্রতি সপ্তাহের সোম, বুধ,শনি ও রবিবার স্বনামধন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা রোগীর চিকিৎসা করেন। #জেনারেল_ফিজিসিয়ান এর সাথে সাথে #শিশু_বিশেষজ্ঞ, #গাইনোকলজিস্ট, #গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোলজিস্ট, #ডেন্টিস্ট, #চক্ষু_বিশেষজ্ঞ, #নিউট্রশনিস্ট, #ফিজিওথেরাপিস্ট --থাকছেন সকলেই। ডা: সমরেশ ভট্টাচার্য, প্রফেসর ডাঃ তুলিকা ঝাঁ, সার্জেন ড: শ্রেয়সী সরকার, সার্জেন ডা: পার্থ সারথী গিরির মত স্বনামধন্য এবং দীর্ঘ অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ডাক্তারবাবুরা এখানে যত্নের সাথে উন্নতমানের পরিসেবা দিতে হাজির থাকছেন। মার্চ মাস থেকে হোমিওপ্যাথি বিভাগ ও শুরু হচ্ছে। এখানে বিনামূল্যে ওজন,রক্তের বিভাগ, রান্ডাম সুগার ,রক্তচাপ পরীক্ষা করার সাথে সাথে ও আর্থিক ভাবে দুর্বল দের জন্য চশমা ও কিছু জীবনদায়ী ওষুধ ও অক্সিজেন এর ব্যবস্থাও থাকছে।
সুন্দর করে সাজানো এই ক্লিনিক এর আর একটি বিশেষত্ব হল চিলড্রেন্স কর্নার, অনেক মা এখানে আসছেন যাদের কোলে বা সাথে হয়তো থাকছে একরত্তি শিশু,বাচ্ছারা সেখানে মনের আনন্দে ছবি আঁকছে,রঙ করছে,ছড়া পড়ছে,খেলা করছে।
কলকাতায় প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের ক্রসিং এ ,টিপু সুলতান মসজিদের ঠিক বিপরীতে,গত ১১ ই অক্টোবর শুরু হওয়া ক্লিনিকটির বয়স এখন সবে পাঁচ মাস।কোভিড পরিস্থিতি মাথায় রেখে নির্দিষ্ট সংখ্যক রোগীই দেখা হয়। পাঁচমাস পূর্ন হবার আগেই প্রায় ছয়শ সাতাশ জন রোগী এখানে এসেছেন এবং সুস্থ হয়ে উঠেছেন ।একমাস বয়সী শিশুসন্তানকে তার বাবা-মা যেমন দেখাতে এনেছেন, তেমনই প্রায় নব্বই ছুঁই ছুঁই মানুষ, পরামর্শ নিতে নিজেই চলে এসেছেন। দেখিয়ে যাবার তিনদিনের মাথায় নিয়ম করে ফোনে বা সরাসরি খবর নেয়া হয় যে কেমন আছেন। রোগীদের বক্তব্য-- "এখান কার ডাক্তার বাবুদের ব্যবহারেই নাকি অর্ধেক রোগ সেরে যায়"। ক্রমশ আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল মানুষরাও ভীড় জমাচ্ছেন কারণ ক্লিনিক এর ভিতরের পরিবেশ এবং পরিষেবার মান কলকাতার অনেক হাই প্রোফাইল ক্লিনিককে হার মানায়।এবং তাঁরা ইচ্ছে হলে তাদের সামর্থ্য মত অর্থ প্রদান করছেন।
ডাক্তার বাবু ক্লিনিকটির কর্ণধার শ্রী সুজয় রায়ের মায়ের জন্মদিন এগারো তারিখ।বহু দিন হল মা চলে গেছেন না ফেরার দেশে।মায়ের জন্মদিন উপলক্ষ্যেই এগারো টাকায় ডাক্তারবাবু শুরু করা।
সম্পূর্ণ ব্যাক্তিগত উদ্যোগে এই ক্লিনিকটি সুষ্ঠ ভাবে চালানোয়, আমাদের পাশে রয়েছেন অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী মানুষ জন। যার মধ্যে সিনির প্রতিষ্ঠাতাঃ ড: সমীর নারায়ণ চোধুরীর কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য। এছাড়াও শ্রীমতি জয়া বসু (দিদি), সোমা মুখার্জি (বন্ধু), গৌতম , শোভন (ভাই) প্রদীপ দা উজ্জ্বল নক্ষত্রের মত আলোকিত করে রেখেছে।
সবার ভালবাসা কে পাথেয় করে আর্থিক ও বহু প্রতিকূলতা কে জয় করে এরকম একটি উদ্যোগ শুরু তো করতে পেরেছি সেটাই আমাদের কাছে অনেক বড় ব্যাপার। এগারো টাকা তো আসলে প্রতিকী মাত্র। একের পাশে আর এক থাকলেই তো সার্থক হয়ে ওঠে বেঁচে থাকাটুকু। ভালো থাকুক কলকাতা।ভালো রাখুক কলকাতা। ভালোবাসুক কলকাতা। সৌজন্য: পৌলমী রায়
❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️
#এগারোটাকায়ডাক্তারবাবু
An affordable multispecialty doctors clinic dedicated to low and middle income group. This is the f