11/15/2024
-"আপনার একটা বউ আছে আর একটা দুধের শিশু থাকতে আপনি আমাকে কেন বিয়ে করলেন শিশির স্যার?"
রাতের কথা শুনে শিশির কিছু বললো না।আগের ন্যায় নিচের দিকে তাকিয়ে সোফায় বসে আছে। রাত শাড়িটা তুলে বিছানা থেকে নিচে নেমে দাঁড়ালো। থমথমে গলায় বললো,
-"আমি কখনো মা হতে পারব না।এটা জানেন তো?"
বলতে গিয়ে গলাটা কেমন ধরে এলো রাতের। অন্যদিকে তাকিয়ে কান্না আটকানোর চেষ্টা করলো।শিশির এবার রাতের দিকে তাকালো। আবারো চোখ নামিয়ে বললো,
-"জানি।"
রাত শিশিরের দিকে তাকিয়ে ভাবলো,
-"এতকিছু জেনেও লোকটা কেন আমায় বিয়ে করলো?"
রাতের ভাবনায় ছেদ ঘটিয়ে শিশির বলতে লাগলো,
-"কিন্তু তাতে আমার কিছু যায়-আসে না। তুমি নামে মাত্র আমার বউ।কখনো আমার উপর অধিকার খাটাতে এসো না।"
রাত অবাক হয়ে বললো,
-" মানেহ?একে তো আপনার বউ থাকা স্বত্ত্বেও আপনি আমায় বিয়ে করেছেন। তার উপর আপনি আমাকে এসব বলছেন!"
শিশির উঠে দাঁড়ালো। অনুভূতিহীন ভাবে তাকিয়ে থেকে বললো,
-"তোমার দায়িত্ব শুধু আমার সায়ানকে দেখে রাখা।"
রাত অবাক হয়ে বললো,
-"কেন?আমি কেন দেখে রাখব?আর মিতালি আপু কোথায়?বিয়েতেও দেখলাম না!আপনার বউ উনি।আপনার বিয়ে আটকালো না কেন?"
শিশিরের কপালের রগ ফুলে উঠলো। জোরে জোরে পা ফেলে আলমারি খুলে টি-শার্ট বের করে ওয়াশরুমে চলে গেলো।
রাত সেদিকে তাকিয়ে রইলো।বিছানায় ধপ করে বসে পড়লো।
শিশির তার অপরিচিত নয়। তাদেরই প্রতিবেশী।তাদের সাথে এক মাসের আলাপ। এমনকি শিশিরের বউ মিতালির সাথে রাতের বেশ ভাবও ছিল।দুজন বেশ গল্প-গুজব করে সময় কাটাতো। রাত এখানে নতুন এসেছে তার মা-বাবা আর এক মাত্র ছোট ভাইটিকে নিয়ে। তার বাবার ট্রান্সফার হয়েছে এখানে।কলেজের টিচার তিনি। ভাগ্যবশত শিশিরও সেই কলেজেরই টিচার।আর রাতও সেখানেই পড়াশোনা করে। বেশ কয়েকবার বিভিন্ন বিপদের হাত থেকে শিশির তাকে বাঁচিয়েছে।মিতালি আর শিশিরের মাঝে ভালোবাসার কমতি ছিল না। তারই ফলসরূপ এই ১৫ দিন বয়সের সায়ান।
দরজা ধাক্কানোর শব্দে চিন্তা থেকে বেড়িয়ে এলো রাত।উঠে দাঁড়ালো সে।রাত তখন ১২ টা। দরজা খুলতেই শাশুড়ির অসহায় মুখটা দেখতে পেল সে। কোলে সায়ান কাঁদছে। রাত তাড়াতাড়ি করে সায়ানকে নিজের কোলে নিয়ে দুলাতে লাগলো। সায়ান তখনো কাঁদছে।ততক্ষণে শিশিরও চুল মুছতে মুছতে বের হয়েছে।রাতের শ্বাশড়ি চৈতি বেগম অসহায় গলায় বললেন,
-"তোদের বিরক্ত করলাম।আমি দুঃখিত।কিন্তু ছেলেটা এত কাঁদছিলো।"
রাত সায়ানকে দুলাতে দুলাতে কান্না থামাতে ব্যস্ত হয়ে বললো,